পুরুষ দিবস উপলক্ষে একটি লেখা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪। নাকি পুরুষ দিবস। কথাটা শুনলেই সবাই হেসে ওঠে...আমিও এর বাইরে নই। এ আবার কেমন দিবস।
কারণ, এই দিনে, নেই কেক–কাটাকাটি, নেই ব্যানার-ফেস্টুন, নেই টিভি প্রোগ্রাম, নেই কোনো গিফট, নেই কোনো আলোচনা, নেই সোশ্যাল মিডিয়ার মাতামাতি!
একজন পুরুষ কি শুধুই একজন বহুরূপী মানুষ, নাকি এর মধ্যেও অন্য কিছু রয়েছে। একজন পুরুষ কী হতে পারেন—বাবা, স্বামী, সন্তান, শিক্ষক, অভিভাবক, ইভ টিজার, মাস্তান, সন্ত্রাসী, ধর্ষণকারী ইত্যাদি।
কখনো কি শুনেছেন, কোনো খারাপ বাবা আছে নাকি। না নেই, প্রত্যেক বাবা একজন আদর্শ বাবা সন্তানের কাছে।
প্যান্ট–শার্ট পরা অফিসগামী ওই লোক কিন্তু সারা দিনের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন পরিবারের জন্য, বসের বকা, অফিস রাজনীতি, কাজের চরম চাপেও ভেঙে পড়েন না শুধু মাস শেষে বেতনের জন্য। কারণ, সেটা না পেলে আর চলবে না সংসার। ব্যবসায়ী বাবা বা স্বামী ব্যবসায় অনেক লোকসান করেও চুপচাপ সবকিছু মোকাবিলা করে যাচ্ছেন, পাছে সংসারে কেউ যেন টেনশন না করেন। ঘরে ঢুকেই সন্তানের জন্য চকলেট বা চিপস না আনলে তো পচা বাবা হয়েই যান, বাজার–সদাই ঠিকঠাক না থাকলে আবার অক্ষম স্বামী হয়ে যান প্রায়ই সেই পুরুষটা। আবার বাবা-মায়ের জন্য ওষুধ বা কথা না শুনলে ছেলে আমার বউয়ের কোথায় নষ্ট হয়ে যায় প্রায়ই। এটাই হয়তো পুরুষের স্বাভাবিক রুটিন। দিন শেষে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে গেলেও পুরুষের সব বাধা। কিছু বিপথগামী পুরুষের জন্য অনেক ক্ষেত্রেই তো পুরো পুরুষ জাতির কলঙ্ক হয়ে যায়। তবে সবাই তো আর এক নয়!
এভাবেই চলছে, এভাবেই চলবে। তবু তারা থেমে থাকে না, কিছু মনে করে না, থামলেই যে পরিবার থেমে যাবে, রাত পোহালেই তো জীবিকার তাগিদে নামতে হবে। কারণ, কাল যে সন্তানের জন্য চকলেট, সহধর্মিণীর জন্য বিশেষ দিনের উপহার কিংবা কোনো অনুষ্ঠানের গিফট, মা-বাবার ওষুধ, পরিবারের বাজার-সদাই, সামাজিকতা ইত্যাদি রক্ষা করতেই হবে।
তাই এই দিন স্মরণ রেখে খেটে খাওয়া পুরুষদের জানাই অনেক অনেক শুভেচ্ছা আর অভিনন্দন।
লেখক : মনোজিৎ কুমার রায়, একজন শ্রমজীবী পুরুষ