মামাপ্রেনারশিপ: মা হতে উদ্যোক্তা

অলংকরণ: মাসুক হেলাল

মানুষের জীবনে মা হওয়া মানে শুধু বাচ্চাদের সঙ্গে সময় কাটানো না; বরং আধুনিক দুনিয়ায় মা হওয়া অর্থ অনেক বেশি উদ্যোগশীলতা এবং ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে নতুন দিক দেখানোর সময়ও হয়েছে। মামাপ্রেনারশিপের মাধ্যমে ব্যবসায়িক কাজের প্রক্রিয়া প্রবর্তন করা বা একটি ব্যবসা শুরু করার ধারণা বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সমাজে একটি নতুন দিকনির্দেশনা দেওয়ার দিকে নজর দিচ্ছে।

মানুষের জীবনধারায় নতুন পরিবর্তন এনে দিচ্ছে মামাপ্রেনারশিপ। সাধারণত মা হওয়া অর্থ শুধু ঘরে থাকার একটি অবস্থা নয়; বরং এটি একটি সক্ষম ব্যক্তির মাঝে নতুন প্রেরণা এবং উদ্যোগের উদাহরণ। এখন অনেক মা নিজের ক্যারিয়ারের পরিকল্পনা করেন না; বরং তাঁদের নিজের ব্যবসা চালানোর স্বপ্ন দেখছেন। এই নতুন উদ্যোগে গোপনীয়তা থাকতে পারে; কিন্তু এটি কার্যকর এবং সফল হতে পারে সঠিক পরিকল্পনা এবং শ্রমের মাধ্যমে। মাতৃত্বে সফলতা অর্জনের জন্য ব্যবসায়ী হওয়ার পথে অবস্থিত নারীদের কঠিনান্বেষী অভিজ্ঞতা থাকতে পারে। এ প্রসঙ্গে মাতৃত্ব ও ব্যবসা একসঙ্গে চালানোর চ্যালেঞ্জ এবং অবস্থানগত সফলতার বিষয়ে আলোচনা করা উচিত।

মাতৃত্ব ব্যবসা শুরু করতে হলে এসব নারীকে স্বাধীনতা, সময় ব্যবস্থাপনা, আর্থিক পরিচালনা, নেটওয়ার্কিং এবং পেশাদারি দক্ষতা অর্জন করার জন্য জনগণের সহায়তা এবং উপযুক্ত সাপোর্ট প্রয়োজন হতে পারে। এটি নিজের ব্যবসা চালানোর চ্যালেঞ্জ নিয়ে অনেকটা নির্ভর করে, যা ব্যবসা পরিচালনার নিজস্ব সময় এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী পরিবর্তন করা যেতে পারে।

অলংকরণ: মাসুক হেলাল

মায়েরা যাঁরা নিজেদের উদ্যোগে ব্যবসা শুরু করেন, তাঁরা সফলতার চেয়ে দৃঢ়তার সঙ্গে তাঁদের সময় ব্যবস্থাপনা এবং পরিবারের সঙ্গে সমন্বয় করতে পারেন। এটি আরও শক্তি এবং সম্মান যুক্ত করার পাশাপাশি একটি ব্যক্তিগত ও পেশাদার জীবনের সম্মানিত উদাহরণ সৃষ্টি করে। মামাপ্রেনারশিপ নিয়ে বিশ্বাস ও সমর্থন বাড়াতে সরকারের প্রয়োজন রয়েছে। এই শ্রেণির ব্যক্তিদের জন্য কর্মী ও ব্যবসা চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, ঋণ ও অন্যান্য সুবিধা প্রদান করার দিকে চিন্তা করা উচিত।

মামাপ্রেনারশিপ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংগঠনে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে পারে, যা নতুন বিচারের উদাহরণ সৃষ্টি করে এবং সামাজিক অনুপ্রাণিত ব্যক্তিদের জন্য একটি সুযোগ সৃষ্টি করে। বর্তমানে অনেক সংগঠন নারী উদ্যোক্তাদের জন্য কাজ করছে। বর্তমান সরকার নারীবান্ধব অনেক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। ডিজিটালাইজেশনের কারণে সারা বিশ্ব হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। এখন ইচ্ছা করলে অনলাইনে পেজ খুলে ব্যবসা করা যায়। কয়েক বছর আগেও এটা সম্ভব ছিল না। আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি প্রসারের কারণে এটা সম্ভব হয়েছে। নারীরা এখন ঘরে বসে ফেসবুকে পেজ খুলে পোশাক ও প্রসাধনী থেকে শুরু করে গৃহস্থালিসহ সব কিছুর ব্যবসা করতে পারছেন। ফলে অর্থনীতিতে নারীর সম্পৃক্ততা দিন দিন বাড়ছে।

চলতি বছরেই বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বা বিবিএস জানিয়েছিল, এক দশকের ব্যবধানে নারী উদ্যোক্তা দ্বিগুণের বেশি হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির হোলসেল অ্যান্ড রিটেইল ট্রেড সার্ভে-২০২০ এর জরিপ ফল প্রকাশ করে বলা হয়েছিল যে ২০১৯-২০ অর্থবছরে নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা ছিল দুই লাখের বেশি যা ২০০২-০৩ অর্থবছরে ছিল মাত্র ২১ হাজার।

এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ব্যবহার করে ব্যবসা করছেন আরও কয়েক লাখ উদ্যোক্তা। যদিও একজন উদ্যোক্তা বলছেন ব্যবসা বড় হলে সংকট বাড়ে কারণ, এলসি খুলতে, নগদ সুবিধা পাওয়া কিংবা জিএসপি সনদ পাওয়া ও নবায়ন করতে নারীদের অনেক বেশি অর্থ ও সময় দিতে হয়।

**নাগরিক সংবাদে ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল অ্যাড্রেস [email protected]