গাজীপুরে মিশন গ্রিন বাংলাদেশের বৃক্ষরোপণ উৎসব

প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা, জলবায়ুর সমতা বজায় রাখা, জমির ক্ষয়রোধ, বনজ সম্পদে সমৃদ্ধ হওয়া—সবকিছুর জন্য চাই বৃক্ষ। আর এসব কারণে দেশের মানুষকে বৃক্ষরোপণে উৎসাহী করতে ‘বৃক্ষরোপণ উৎসব’ শুরু করেছে মিশন গ্রিন বাংলাদেশ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। গত শুক্রবার (৩১ মে, ২০২৪) গাজীপুর থেকে তারা এ উৎসবের শুরু করে। বর্ষা মৌসুমে (জুন-জুলাই মাস) ৬৪ জেলাতেই তারা এমন উৎসব করবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।

দেশের মানুষের মধ্যে বৃক্ষরোপণের সচেতনতা বাড়াতে এবং বর্ষা মৌসুমে সঠিকভাবে যাতে বৃক্ষরোপণ ও পরিচর্যা করে, এমন বিষয়গুলো জানাতেই এ উৎসবের আয়োজন করেছে সংগঠনটি। গাজীপুরে দিনব্যাপী আয়োজনে তারা জেলার ৫টি স্থানে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, বৃক্ষরোপণে সচেতনতামূলক পুতুলনাট্য পরিবেশনা, মানববন্ধন, গাছ লাগানোর প্রতিজ্ঞাসহ স্বাক্ষর অভিযান, বৃক্ষ নিয়ে পদযাত্রাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। আয়োজনের সহযোগিতায় ছিল হেলদি লিভিং, আশা (Asha-hoffnung für Bangladesh e.V.), সৈয়দ শাকিল ট্রাস্ট, হেল্প দ্য ফিউচার, কান্ডারি, স্বপ্নডানা, ট্রাভেল উইথ ডিয়ানা, ব্র্যান্ড অ্যান্ড ভিজ্যুয়াল ও স্থানীয় সহযোগী হিসেবে ছিল স্পেশাল রেসপন্স টিম-এসআরটি। কমিউনিটি সহযোগী হিসেবে ছিল জেসিআই ঢাকা মেট্রো, আরডিআরসি।

দিনব্যাপী বৃক্ষরোপণের এই উৎসবে উপস্থিত ছিলেন মিশন গ্রিন বাংলাদেশের আহ্বায়ক আহসান রনি, পরিচালক কৃষিবিদ আবুল বাশার মিরাজ, হেলদি লিভিং বিডির সিইও প্রতিষ্ঠাতা মৌসুমী আক্তার বাঁধন, স্পেশাল রেসপন্স টিমের প্রতিষ্ঠাতা ফানতাহিল আলীম তামীম, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় জনসংযোগ দপ্তরের উপপরিচালক দীন মোহাম্মদ দীনুসহ শতাধিক শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্বেচ্ছাসেবী।

এমন আয়োজন সম্পর্কে মিশন গ্রিন বাংলাদেশের আহ্বায়ক আহসান রনি বলেন, ‘আমরা একটি সবুজ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি। দেশের তরুণেরা যেন বাংলাদেশকে সবুজ করে তোলার জন্য একত্রে কাজ করতে পারে, সেই উদ্দেশ্যেই মিশন গ্রিন বাংলাদেশের সার্বিক কার্যক্রম ও এগিয়ে চলা। সারা দেশের তরুণদের আমরা আহ্বান জানাচ্ছি আমাদের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য এবং সবুজ বাংলাদেশ গড়ার আমাদের মিশনকে নিজেদের ও ভবিষ্যতের বাংলাদেশের কল্যাণে সফল করে তুলতে।’

সহযোগী প্রতিষ্ঠান সৈয়দ শাকিল ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ শাকিল বলেন, ‘বৃক্ষরোপণের এই মহতী উদ্যোগে আমরা সহযোগী হতে পেরে আনন্দিত। দেখা গেছে, একটি বৃক্ষ যদি ৫০ বছর বাঁচে, তবে তা থেকে ৫০ লাখ টাকার সমপরিমাণ অক্সিজেন পাওয়া যেতে পারে। প্রাকৃতিক পরিবেশের সাম্য রক্ষার জন্য দেশের মোট ভূখণ্ডের অন্তত ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকা দরকার; কিন্তু বাংলাদেশে এর পরিমাণ অনেক কম, এটি বাড়াতে হলে সবাইকেই এগিয়ে আসতে হবে।’

স্পেশাল রেসপন্স টিমের প্রতিষ্ঠাতা ফানতাহিল আলীম তামীম বলেন, পরিবেশের দূষণ রোধ ও বৈশ্বিক উষ্ণতা কমাতে গাছ সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখে থাকে। অথচ নগরায়ণ, অপরিকল্পিত উন্নয়ন আর যন্ত্রপ্রযুক্তির মোহে অযাচিতভাবে বৃক্ষনিধন করা হচ্ছে, উজাড় হচ্ছে বন। ফলে দেখা দিচ্ছে প্রাকৃতিক বিপর্যয়, বাড়ছে উষ্ণায়ন আর মানবসভ্যতা পড়ছে হুমকির মুখে। এ কারণে বৃক্ষরোপণের কোনো বিকল্প নেই।