নতুন একটি ভোরের প্রত্যাশায়
বৃষ্টিভেজা ভোর দেখেছি অনেক
রক্তভেজা ভোর দেখিনি
সারা রাত নির্ঘুম কেটেছে
নির্বাক—আর্তনাদের চিৎকার শুনে
বিষণ্ন মনে বিম্ময় হয়েছি।
ওরা ‘মুক্তিযোদ্ধা’ নামে আর কতকাল ক্ষত করবে
আর কতকাল শব্দটাকে বিসর্জন দিয়ে ক্ষান্ত হবে।
‘শামসুজ্জোহা স্যার’ হতে চেয়েছিল ‘আবু সাঈদ’
হতে পেরেছে—অন্যায়, বৈষম্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে।
সহস্রবার চোখের পাতায় ভেসে উঠে
বুক পেতে দেওয়া বীরত্বগাথার— সে–ই ছবি।
প্রশ্ন জাগে—
এ দেশ কি স্বাধীন হয়েছিল
এমন হরিলুট করার লক্ষ্যে
লাখ শহীদ কি রক্ত দিয়েছিল
এই নির্লজ্জ পেটোয়া বাহিনীর জন্য।
জাগো ভাই জাগো
এ দেশটাকে আবার মুক্ত করো।
প্রতিদিন ভেঙে পড়ছে—আমাদের সমাজ
আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের অর্থনীতি
আমাদের শিক্ষাপ্রবৃত্তি।
অভিভাবকহীন একটি রাষ্ট্রযন্ত্র
দিনের পর দিন চলে
চাটুকারিতাদের পদধূলি।
রাজসভা বসে তৈলমর্দনসভা
কী র্নিজ্জতা, কী বেহায়ায় আলোচনা
এসব কী—
কখনো, কোনোকালে
কেউ মেনে নিয়েছিল কিংবা মেনে নেবে।
জাগো ভাই জাগো
বায়ান্নর মতো জাগো
একাত্তরের মতো গর্জে ওঠে
এই দেশটাকে মুক্ত করো।
আর একটিও গুলি নয়
আর একটিবারও লাঠিচার্জ নয়
অনেক হয়েছে, অনেক রক্ত ঝরেছে
আর কোনো রক্ত নয়।
জানি—আমরা এখনো পারিনি
আমাদের পূর্বপুরুষের রক্তের ঋণ শোধ করতে
পারিনি—তাদের কৃতজ্ঞতা ভরে স্মরণ করতে
পারিনি—যে জন্য তারা ছুটেছিল
রক্তান্ত বিছানায়।
আমরা ভুলে গেছি—কী নিপীড়ন, কী নির্মম
একাত্তরের হত্যাকাণ্ড
আমরা ভুলে গেছি—আমাদের বৈষম্য
আমরা ভুলে গেছি—আমাদের অধিকার।
আমরা ব্যর্থ হয়েছি—আমাদের প্রজন্মের কাছে
জানাতে পারিনি আমাদের পূর্বপুরুষের বীরত্বকথা
জানাতে পারিনি তাদের সংগ্রাম কিংবা স্বপ্নের কথা।
জাগো ভাই জাগো
আরেকটি নতুন ভোরের অপেক্ষায়
আমাদের যত ব্যর্থতার গ্লানি ভুলে
নতুন করে জাগো।