দুটো গান দাও রবি ঠাকুর

যে ট্রেনটা মাত্র ছুটে গেল কারওয়ান বাজার ছুঁয়ে রাজশাহীর দিকে

যাত্রীদের কেউ কেউ বিমর্ষ ভঙ্গিতে নিশ্চিত তোমার গান শুনছিলেন

কারও হয়তো প্রেম ভেঙে গেছে, কেউ হয়তো ভালোবেসে কাউকে

আমারই মতো মরছে মরমে

আবার কেউ হয়তো জীবনের জঠরযন্ত্রণা তোমার গানেই সঁপে দিচ্ছেন

তোমার জন্মদিন আজ। ২৫ বৈশাখ।

দুর্দণ্ডপ্রতাপে ‘রবির কর’ ঝরে পড়ছে যেন তোমাকেই প্রণাম জানাতে।

শাহবাগ থেকে হেঁটে এসেছি।

তোমার জন্য ফুল কিনতে গিয়ে তাঁর কথাও মনে হয়েছিল

ফুল যাঁর প্রিয়—গোলাপ, রজনীগন্ধা

কথার প্রেক্ষিতে বলেছিল;

ইচ্ছে হয়েছিল বলি, এক শটি না হলেও

একটি গোলাপ অথবা বেলির মালা কিনে দিতে পারব;

খোঁপায় দিয়ো। কিন্তু সাহস করে উঠতে পারিনি।

অনেক ভেবেছি, আমি কি তাঁর যোগ্য?

করপোরেট অহংকার নেই হৃদয়ে। বিপদে অপরিচিতজনের হাতও

ছাড়িনি কখনো—কাপুরুষ নই।

‘নাগরিক সংবাদ’-এ জীবনের গল্প, নানা আয়োজনের খবর, ভিডিও, ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]

তোমার রেখে যাওয়া সমাজে এগুলো যদিও যোগ্যতার মানদণ্ড নয় কোনোমতে

তারপরও আমার বিশ্বাস, তার পাশে, তার সাথে আমাকেই বেশি মানাবে, কিন্তু

সে কি মানবে?

কখনো তুমি কি এমন পরিস্থিতিতে পড়েছিলে, জমিদারপুত্র তুমি

কিন্তু গানে যে বললে, ‘ভালোবেসে, সখী, নিভৃতে যতনে আমার নামটি লিখো—তোমার মনের মন্দিরে।’

কল্পনা, হৃদয়ের আলপনা, না সত্যিই ভালোবেসেছিলে?

বড় বেশি ছোট মনে হয় নিজেকে

যার প্রায়োরিটি লিস্টে আমি নেই, আমার নাম নেই

সে কেন স্বপ্নে আসে

যাকে পাচ্ছি না

যার কোলে মাথা রেখে শান্তির ঘুম ঘুমানো হবে না

তার নামে তীব্র দহন কেন

ছাইচাপা আগুনের মতো বুক ভরে থাকে

তুমি কি পরিত্রাণ জানো, দিতে পারো মুক্তি?

বিশ্ব তোমাকে কুর্নিশ করে; কিন্তু ভালোবেসে তুমিও নতজানু হয়েছিলে

অমৃতের মতো বিরহ নিয়েছিলে দুহাত ভরে

আমাকে দুটো গান দাও তুমি—তোমার মতো গানেই সব ধুয়েমুছে নিই।