সেই পুরাতন জনপদ
ফিরে ফিরে আসি আবার সেই চেনা মাটিতে,
ফেলে আসা জন্মভূমির সেই পুরাতন জনপদে।
যেথায় নুইয়ে পড়া নারকেল গাছের পাতার ফাঁকে,
হেমন্ত প্রভাতে ঝিলিমিলি রোদের কণা নকশা আঁকে।
গায়ে মেখে এই ঝিরিঝিরি হালকা শীতল হাওয়া,
প্রাতঃরাশ আর ধূমায়িত চায়ের কাপে চুমুক দেয়া।
যেখানে ঘুম ভাঙে রিকশা, গাড়ি, ফেরিওয়ালার হাঁকডাকে,
যেখানে প্রতিটি সকাল মুখরিত হয় পাখিদের ডাকে।
নিশ্বাস যদিও ভারী হয়ে আসে এই ইট-পাথরের অরণ্যে,
তবু অজানা এক শান্তি সদাই বিরাজমান এখানে।
ব্যস্ত সবাই দৈনন্দিন কাজের ভিড়ে জীবনযুদ্ধ নিয়ে,
যানজটে পড়ে গন্তব্যে পৌঁছুতে কখনোবা যায় দেরি হয়ে।
সকাল ফুরায় শত ব্যস্ততায় দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামে ধীরে,
পথঘাট কিছুটা শান্ত, তবু চলে আনাগোনা এই ব্যস্ত শহরে।
পাখিরা তখন ফিরে যায় কুলায় রাত নেমে আসে,
নারকেলগাছের পাতার ফাঁকে উঁকি দিয়ে চাঁদ হাসে।
সবজির পসরা সাজিয়ে রাস্তার ধারে বসেছে দোকানি,
দাঁড়িয়ে সেথায় দর–কষাকষি করছে এক গৃহিণী।
আড্ডা দিচ্ছে বেকার ছেলেরা মোড়ের চায়ের দোকানে বসে,
রাত্রি গভীর হলে আশ্রয় নেয় শয্যায় কোলাহল শেষে।
শান্ত জনপদে খাবারের খোঁজে দু-একটা কুকুরের বিচরণ,
দিয়ে যায় কেউ খাবার, নগরবাসীর করুণার নিবেদন।
চঞ্চল গতিময় জীবন সদাই প্রবাহিত এই অট্টালিকার পাহাড়ে,
নতুন নতুন স্বপ্ন নিয়ে আসে দিন-রাত্রি এই নগরে।
ভালোবাসি আমি প্রিয় মাতৃভূমির এই দিন-রাত্রির ছবি,
ভালোবাসি আমি এই কোলাহল, ভালোবাসি এর সবই।
চাঁদের তিথি ফুরিয়ে গেলে অমানিশার অন্ধকারে,
আসব সেদিনও, আসব আমি আবার ফিরে।
জাহান সৈয়দ মিনা
ধানমন্ডি, ঢাকা, বাংলাদেশ
২৬ নভেম্বর ২০২৫
নাগরিক সংবাদে জীবনের গল্প, নানা আয়োজনের খবর, ভিডিও, ছবি ও লেখা পাঠাতে পারবেন পাঠকেরা। ই-মেইল: [email protected]