কে কার চরিত্র নির্ধারণ করবে, আর কে দেবে চারিত্রিক সনদ

চারিত্রিক সনদ হচ্ছে এমন একধরনের সার্টিফিকেট, যেখানে আপনার আচার-আচরণ কেমন, আপনি দেশের প্রতি কতটা সৎ—তার একটি প্রামাণ্য দলিল। আর এই দলিল হচ্ছে চারিত্রিক সনদ। এটি সব থেকে বেশি চাকরির ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয়। আর তা নিতে হয় দেশের ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শুরু করে সিটি করপোরেশন থেকে। চাকরি বা অন্যান্য যেকোনো ক্ষেত্রে কাজে লাগলে আপনি তা সংগ্রহ করতে পারেন।

ধরুন ছোট থেকে আমি পড়াশোনার সুবাধে বাহিরে অবস্থান করি, গ্রামের কেউ তেমন একটা চেনে বা জানে না, আবার মা–বাবা যদি চাকরিজীবী হয়, তাহলে তো একটা বাচ্চা জন্ম থেকে বেড়ে ওঠা সবকিছুই শহরে। যখন লেখাপড়া শেষ করে কোনো সরকারি চাকরি বা দেশের বাহিরে গেলে তাঁকে যেতে হয় গ্রামের প্রত্যন্ত ইউনিয়নে, যেখানে মিলবে তোমার চারিত্রিক সনদ।

কি আজব একটা কথা যেখানে ছোট থেকে বড় হলাম, যেখানে আমার জীবনের অধিকাংশ সময় পার করালাম, যেখানকার লোক দেখল আমার নাড়িনক্ষত্র, সে অঞ্চলের লোকের কাছে চরিত্রের কোনো বর্ণনা না নিয়েই দেওয়া হলো ইউনিয়ন পরিষদের অজানা অকাল্পনিক সব তথ্য।

একবার আমারও একটা চারিত্রিক সনদের প্রয়োজন হয়েছিল। গেলাম চেয়ারম্যান মহাদয়ের কাছে। তাঁর বাসার কাউকে জিজ্ঞাসা করতেই বললেন, তিনি তো বাসায় নেই, আপনার যদি প্রয়োজন হয় তাহলে আপনি অমুক বাজারে, অমুক দোকানে খোঁজ করলে পাবেন, সব কিছু সই করাই আছে, আপনি গেলেই পাবেন। অবাক হলাম, আমার চারিত্রিক সনদ এখন দোকানে পাওয়া যায় কাঁচাবাজার বা ওষুধপত্রের মতো। কোনো প্রেসক্রিপশন লাগে না কেউ সুপারিশ করবে বললেই পাবেন, আসলে নেতারা আমাদের জন্য কত ভাবেন, ভাবা যায়?

বর্তমানে দেশ আর সেই আগের অবস্থানে নেই, তরুণ উদ্বীপ্ত কৌশল একের পর এক সাফল্য সেই অনুন্নত থেকে উন্নয়নশীল ও মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। উন্নয়নের গতি ধরে রাখতে পারলে দেশ সঠিক সময়ে এই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে ইনশা আল্লাহ।

  • লেখক: জারমান আলি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের।