এ যেন পুনশ্চ: মিলনের ইতিহাস

আনন্দ মোহন কলেজের ৬০ বছরের পুনর্মিলনী
ছবি: সংগৃহীত

‘পুরানো সেই দিনের কথা ভুলবি কি রে হায়।
ও সেই চোখে দেখা, প্রাণের কথা, সে কি ভোলা যায়।
আয় আর একটিবার আয় রে সখা, প্রাণের মাঝে আয়।
মোরা সুখের দুখের কথা কব, প্রাণ জুড়াবে তায়।’

প্রিয় বন্ধুদের সঙ্গে শেষ কবে দেখা হয়েছে, মনে নেই। তারপর খোঁজখবর নেই বহুদিন, ক্যাম্পাসের সেই ব্যস্ত কলরব এখন স্মৃতিপটে কেবলই তুলে রাখা অতীত। আর কি হবে এমন করে মুখোমুখি দেখা? হয়তো এমন বেদনার আরতি হৃদয়ে সাজিয়ে কবিগুরু লিখেছেন এমন মরমি চরণ। তাই সব ব্যস্ততা ফেলে নব আনন্দে প্রিয় বন্ধুদের আবার একত্র করে মিলনমেলায় পরিণত করে বন্ধুরাই। হয়তো স্নেহের টানে এ ভালোবাসা বন্ধুর জন্য বন্ধুর।

ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজে ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয় পুনর্মিলনীতে
ছবি: সংগৃহীত

প্রাণের উৎসবে মেতেছিল হাজারো সহপাঠী। বহুদিন পর আবার সবার সঙ্গে দেখা, আড্ডা, খুনসুটি। তখন বোঝা যায়, দেহের বয়স বাড়লেও বাড়েনি মনের তারুণ্যের বয়স। ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন কলেজে ইতিহাস বিভাগের প্রতিষ্ঠার (১৯৬৩-২০২৩) সময় থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত সব শিক্ষার্থী অংশ নেন আজ এই মহাপুনর্মিলনীতে। নবীন-প্রবীণদের এক মিলনমেলায় পরিণত হয় কলেজ ক্যাম্পাস।

জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুরু হয়
ছবি: সংগৃহীত

কুশল বিনিময়, আনন্দযাত্রা, নাচে-গানে উদ্‌যাপনে মাতে সবাই। রঙিন টি-শার্ট, ব্যাগসহ বিভিন্ন উপহারের সমারোহে নিজেকে হারিয়ে ফেলে শৈশবের আমেজে। বারবার এমন আয়োজন আবার ফিরে আসুক—এমন প্রত্যাশা সবার।

স্মৃতি ধরে রাখার ক্ষুদ্র প্রচেষ্টায় ক্যামেরাবন্দী হচ্ছে বন্ধুরা।
ছবি: সংগৃহীত

২০০৮-০৯ সেশনের শিক্ষার্থী মাহমুদুর রহমান মিশুক বলেন, ‘আমরা সবার সাথে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছি, কিন্তু এমন মিলনমেলা আমাদের আবারও একত্র হওয়ার সুযোগ করে দিল। আজ মনে হলো, আবারও আমরা সেই ২০০৯ সালে ফিরে গিয়েছি। মোটকথা, সারা দিন আমরা অনেক আনন্দে কাটালাম।’

ফরহাদ হাসান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘এমন আয়োজন ছোট পরিসরে মাঝেমধ্যে হলেও আমাদের প্রাণের বন্ধনটা আরও মজবুত হয়।’

মিলনমেলার জমকালো গানের অনুষ্ঠান এবং র‍্যাফল ড্রর মধ্য দিয়ে সন্ধ্যায় ঘটে সমাপ্তি।