ঈদে জনপ্রিয়তা পেয়েছে বিটিভির আঞ্চলিক বিতর্ক ‘পাগল সমাবেশ’
বিটিভিতে ঈদের পঞ্চম দিন প্রচারিত হয় বিশেষ আঞ্চলিক হাস্যরসাত্মক বিতর্ক ‘পাগল সমাবেশ’। বিতর্কটি তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে। অনুষ্ঠানটি ঈদের ৫ম দিন সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে প্রচারের সঙ্গে সঙ্গেই ফেসবুক, ইউটিউবসহ সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
সৈয়দ আশিকের গ্রন্থনা, উপস্থাপনা ও পরিকল্পনায় নির্মিত আঞ্চলিক ভাষায় এ সমাজের নানা অসঙ্গতি তুলে ধরে কৌতুক আকারে এই বিতর্ক পরিবেশিত হয়েছে। ৮ জন বিতার্কিক ও দুইজন বিচারকসহ সৈয়দ আশিকের সঞ্চালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে আটজন বক্তা বিভিন্ন চরিত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন পাগলামি উপস্থাপন করেন। সেই সঙ্গে ‘নিজের পাগলামিই সেরা’ অর্থাৎ ‘তিনিই যে সেরা পাগল’, এ বিষয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। ব্যতিক্রম এ আয়োজনে চরিত্রগুলো ছিল ভোটপাগল, লাইভপাগল, বউপাগল, স্বামীপাগল, টাকার পাগল, বলদপাগল, বিদেশপাগল ও প্রেমপাগল।
ভোটপাগল চরিত্রে বিতর্ক করেন বরিশালের আলামিন, লাইভপাগল চরিত্রে বিতর্ক করেন নোয়াখালীর ফৌজিয়া তারিন, বউপাগল হিসেবে দেখা গেছে কুমিল্লার সুজনকে, স্বামীপাগল হিসেবে দেখা যায় ময়মনসিংহের তন্বীকে, বিদেশপাগল হিসেবে দেখা যায় রংপুরের অন্তরা শারমিনকে, টাকার পাগল হিসেবে দেখা যায় পুরান ঢাকার ইভাকে, প্রেমপাগল হিসেবে দেখা গেছে অবহেলিত গ্রামবাংলার প্রতিনিধি সাচ্চু এবং বলদপাগল হিসেবে বিতর্ক করেন অতিথি চরিত্র হিসেবে বদিউজ্জামান মিলন।
৪৭ মিনিটের বিনোদনমূলক এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে অস্থিরতা, তা তুলে ধরা হয়েছে। লোভ–লালসার জন্য আমাদের যে বেপরোয়া জীবনযাপন, সেটাকে কটাক্ষ করে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রতিনিয়ত মানবিকতা ও সামাজিকতাকে তুচ্ছ করার যে অপচেষ্টা, সে বিষয়ে ইঙ্গিত করে সৎ ও নিষ্ঠাবান হওয়ার বার্তা দিয়ে একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর বিনোদনমাত্রা ঠিক করা হয়েছে।
মূলত উপস্থাপক সৈয়দ আশিকের হাত ধরেই ২০১৮ সালে ঈদে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রথমবারের মতো শুরু হয় আঞ্চলিক ধারার রম্যবিতর্ক ‘বাংলায় আমরাই সেরা’। অনুষ্ঠানটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক ছড়িয়ে পড়ে। এই অনুষ্ঠানে বাংলার সব শ্রেণির দর্শক নিজের এলাকার স্বাতন্ত্র্য খুঁজে পান। ফেসবুক ও ইউটিউবে বেশ সাড়া পড়ার কারণে সেই ধারাবাহিকতায় পরবর্তী সময়ে ‘গুণীজন সংবর্ধনা’, ‘ভ্রাম্যমাণ পেশাজীবী সংবর্ধনা’, ‘তৃণমূল পেশাজীবী সংবর্ধনা’ অনুষ্ঠানগুলো দর্শকের মন জয় করে নেয়। দীর্ঘ বিরতির পর আবারও বিটিভিতে আঞ্চলিক রম্যবিতর্ক নিয়ে ফিরে এসে সৈয়দ আশিক বলেন, ‘দর্শকের কথা মাথায় রেখেই এবারও নতুন ধারায় নতুন মাত্রা যোগ করেছি। আমাদের আত্মবিশ্বাস ছিল যে দর্শক এটিতে সাড়া দেবেন।’ ব্যস্ততার কারণে গত ছয় বছর দর্শকের সামনে হাজির হতে না পারলেও এখন থেকে নিয়মিত আবার দর্শকেরা এই অনুষ্ঠান দেখতে পারবেন বলে জানান তিনি।