পূর্বাভাসের সঙ্গে সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের সমন্বয় সুফল বয়ে আনবে

‘সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমকে পূর্বাভাসভিত্তিক কার্যক্রমের অর্থায়নে অন্তর্ভুক্তিকরণ’ শীর্ষক গবেষণা বিষয়ে এক কর্মশালায় অতিথিরা
ছবি: কেয়ারের সৌজন্যে

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি কাজে লাগাতে হবে। দুর্যোগের পূর্বাভাস হতে হবে জনগণের বোধগম্য ভাষায়। তাহলেই তা কার্যকর হবে। পূর্বাভাসের পরিপ্রেক্ষিতে সুনির্দিষ্ট আগাম কার্যক্রম গ্রহণের মাধ্যমে সম্ভাব্য দুর্যোগ থেকে বিপদাপন্ন জনগোষ্ঠী, তাদের জীবিকা এবং সম্পদ রক্ষা করা সম্ভব। পূর্বাভাসের সঙ্গে সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের সমন্বয় করলে তা অবশ্যই সুফল বয়ে আনবে।

‘সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমকে পূর্বাভাসভিত্তিক কার্যক্রমের অর্থায়নে অন্তর্ভুক্তিকরণ’ শীর্ষক গবেষণা বিষয়ে এক কর্মশালায় কথাগুলো বলেন বক্তারা। রাজধানীর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে এ কর্মশালা হয়।

ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সিভিল প্রটেকশন অ্যান্ড হিউম্যানিটারিয়ান এইড অপারেশনসের (ইকো) অর্থায়নে সুফল কনসোর্টিয়াম এর আয়োজন করে। কেয়ার বাংলাদেশের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

কর্মশালার প্রধান অতিথি ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান। তিনি বলেন, সুফল প্রকল্পের মাধ্যমে জনগণের কাছে মুঠোফোনে ভয়েস মেসেজের মাধ্যমে প্রেরিত আগাম সতর্কবার্তা দেওয়াটা কার্যকর। সুফল প্রকল্প বন্যার বিপৎসীমা মূল্যায়নে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণকেন্দ্রকে যে সহায়তা করছে, তা সময়োপযোগী।

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আমাদের সবাইকে সমন্বিতভাবে এবং বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কাজ করতে হবে, যার মাধ্যমে বাংলাদেশ দুর্যোগঝুঁকি হ্রাসে বিশ্বে অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।’

কর্মশালার বিশেষ অতিথি ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কে এম আবদুল ওয়াদুদ। তিনি বলেন, পূর্বাভাস হবে জনগণের বোধগম্য ভাষায়। যেহেতু দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা একটি পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, আগাম কার্যক্রম গ্রহণের জন্য অর্থায়নের লক্ষ্যে যদি বর্তমান গাইডলাইনে কোনো পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়, আলোচনার মাধ্যমে তা করতে হবে।

অক্সফোর্ড পলিসি ম্যানেজমেন্টের সোলাইমান মুহিত তাঁর উপস্থাপনায় নথি পর্যালোচনা এবং জেলা, উপজেলা ও স্থানীয় পর্যায়ে প্রাথমিক যাচাইয়ের মাধ্যমে চিহ্নিত সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমগুলো তুলে ধরেন।

এগুলো পূর্বাভাসভিত্তিক কার্যক্রম গ্রহণে ব্যবহার করা যেতে পারে। কার্যক্রমগুলো হলো দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের নগদ অর্থসহায়তা (জিআর), অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি (ইজিপিপি) এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা ও প্রতিবন্ধী ভাতা।

কর্মশালায় সুফল কনসোর্টিয়ামের কো-অর্ডিনেটর কাজী রাবেয়া সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমকে পূর্বাভাসভিত্তিক কার্যক্রমের অর্থায়নে অন্তর্ভুক্তিকরণমূলক গবেষণা–সম্পর্কিত ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন।

ইকোর অর্থায়নে ‘স্কেলিং-আপ ফ্লাড ফোরকাস্ট-বেসড অ্যাকশন অ্যান্ড লার্নিং ইন বাংলাদেশ’ (সুফল ২) একটি কনসোর্টিয়াম প্রকল্প। কেয়ার বাংলাদেশের নেতৃত্বে, কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইডের অংশগ্রহণে এবং রিজিওনাল ইন্টিগ্রেটেড মাল্টিহ্যাজার্ড আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম ফর আফ্রিকা অ্যান্ড এশিয়ার (রাইমস) কারিগরি সহায়তায় এ প্রকল্প চলছে।

ইকো সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন এবং এসকেএস ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। যমুনা অববাহিকার কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর ও বগুড়া জেলায় মৌসুমি বন্যার প্রভাব ও ক্ষয়ক্ষতি কমাতে পূর্বাভাসভিত্তিক পূর্বপদক্ষেপ গ্রহণে প্রতিষ্ঠান ও কমিউনিটির সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছে। বন্যার পূর্বাভাসকে আরও উন্নত, সময়োপযোগী ও সহজলভ্য করতে বন্যার পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণকেন্দ্রের সঙ্গে কাজ করছে সংগঠনগুলো।