নবীনদের পদচারণে প্রাণবন্ত হাবিপ্রবি ক্যাম্পাস

নবীনদের পদচারণে প্রাণবন্ত হাবিপ্রবি ক্যাম্পাস

সবুজ চাদরে মোড়ানো লাল ইটের সাম্রাজ্য উত্তরবঙ্গের প্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে নবীন শিক্ষার্থীদের পদচারণে যেন শীতের রিক্ততায় ঋদ্ধতা পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙিনা। বলছি দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা। দিনাজপুর শহরের উত্তরে সাধারণ জনজীবনের অস্তিত্বজুড়ে গ্রামীণ লোকালয়ের বিস্তীর্ণ প্রাঙ্গণে অবস্থিত।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া ২০২১-২২ সেশনের নবীনদের বরণে সব ধরনের কার্যক্রম প্রায় সম্পন্ন করেছে কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন বাঁশেরহাটসহ ক্যাম্পাসের অলিগলি ও খেলার মাঠে এখন নবীনদের জয়জয়কার। তাজউদ্দীন আহমদ হল থেকে নেমে কয়েক কদম সামনে এগোতেই দেখা মিলল হল মাঠে খেলতে আসা একদল প্রাণবন্ত, চঞ্চল নতুন মুখের। কেউ খেলছেন, কেউবা খেলোয়াড় সেজে গ্রুপ সেলফি নিচ্ছেন আবার কেউবা খেলা দেখছেন ও আড্ডা দিচ্ছেন। প্রত্যেকের চোখেমুখে নতুন ক্যাম্পাস নিয়ে উদ্দীপনা। জীবনের দীর্ঘ অধ্যায় শেষে নতুন অধ্যায়ের সূচনা কেবল কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নপূরণের জন্য এসেছে সবাই। লক্ষ্যে পৌঁছাতে এ যেন অন্য রকম প্রাপ্তি। সবার মধ্যে একধরনের বাড়তি উত্তেজনা কাজ করছে।

অনুভূতি নিয়ে জানতে চাইলে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২২ ব্যাচের নবীন শিক্ষার্থী রবিউল ইসলাম রুবন জানান, ‘হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সিনিয়রদের উষ্ণ ভালোবাসায় আমার ভয়ভীতি দূর হয়ে গেছে। আমার প্রত্যাশা ও আত্মবিশ্বাস আরও কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। সারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নতুন নতুন ব্যাচমেটদের বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ আমাকে মুগ্ধ করেছে। দিনে দিনে সিনিয়র ভাই–আপুদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে উঠছে। এ ক্যাম্পাসের মনোরম পরিবেশ অনেক ভালো লাগে। অল্প কয়েক দিনেই নতুন পরিবেশে নতুন করে অনেক কিছু বুঝতে শিখেছি। আগামী দিনে আরও জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে নিজেকে যেন সমৃদ্ধ করতে পারি। আমার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছিয়ে মা–বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে পারি।’

আরও এক নবীন শিক্ষার্থী আবু রায়হান জানান, ‘হাবিপ্রবিতে পড়াশোনার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত হওয়ার জন্য রয়েছে বিভিন্ন সংগঠন, যা শিক্ষার্থীদের মুক্তবুদ্ধি চর্চার ক্ষেত্রে অনেক বেশি ভূমিকা পালন করবে। এ ক্যাম্পাসের সব কিছুই আমাকে অভিভূত করে এবং আমার সব আশা–ভরসার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে হাবিপ্রবি।’

ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং ডিপার্টমেন্টের নবীন শিক্ষার্থী মুহিত বলেন, ‘দেশের নামী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ভর্তি হওয়ার সুযোগ না পেয়ে হীনমন্যতায় ভুগতে ছিলাম। কিন্ত এখন এখানে আসার পর হাবিপ্রবির বিশাল ক্যাম্পাসের অকৃত্রিম সৌন্দর্য ও অনবদ্য অবকাঠামো আমার মন জয় করে নিয়েছে।’

এভাবেই রবিউল, রায়হান, মুহিতের মতো হাজারো শিক্ষার্থীদের বিচিত্র ধরনের স্বপ্ন নিয়ে গড়ে উঠেছে প্রাণের ক্যাম্পাস। আর এভাবেই অনেক নবীন শিক্ষার্থীর স্বপ্নপূরণের ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে হাবিপ্রবি।

লেখক: শিক্ষার্থী, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর