বাংলাদেশে ‘ক্লাইমেট অ্যান্ড হেলথ ইনোভেশন হাব’ উদ্বোধন
বাংলাদেশে ক্লাইমেট অ্যান্ড হেলথ ইনোভেশন হাব (সিএইচআইবি) চালু হয়েছে। ৫ মার্চ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগনিয়ন্ত্রণ (এনসিডিসি) কর্মসূচি এবং সচিবালয় হিসেবে আইসিডিডিআরবির সমন্বয়ে এটি চালু হয়েছে। উদ্যোগটির উদ্দেশ্য হলো, স্থানীয় নেতৃত্বের অধীন যেসব জলবায়ু পরিবর্তন উপযোগী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তার ডকুমেন্টেশন, উন্নয়নের পাশাপাশি এসব উদ্যোগের প্রচারণা করা। স্বাস্থ্য এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট-সম্পর্কিত বিষয়, যেমন জলবায়ু স্থিতিস্থাপক বাসস্থান তৈরি, জলবায়ু-অন্তর্ভুক্ত ওয়াশ (ওয়াটার, স্যানিটেশন ও হাইজিন) এবং জলের লবণাক্ততার সমস্যা মোকাবিলা নিয়েও আলোচনা করা হবে এতে। অনুষ্ঠানটি ঢাকার গুলশান অ্যাভিনিউয়ের একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশে ক্লাইমেট অ্যান্ড হেলথ ইনোভেশন হাব চালু করা: জলবায়ু পরিবর্তনের কেন্দ্রে মানুষের স্বাস্থ্যকে রাখা’ শীর্ষক একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে অংশ নেয় বিভিন্ন অংশীদার সরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা, উন্নয়ন সংস্থা এবং এনজিওর প্রতিনিধিরা। অনুষ্ঠানে সিএইচআইবি গঠন এবং ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনার জন্য স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. নুসায়ের চৌধুরী স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে কর্মশালার কার্যক্রমের সূচনা করেন। আইসিডিডিআরবির সহকারী বিজ্ঞানী ফারজানা জাহান ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড হেলথ ইনোভেশন হাব: বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় উদ্ভাবনকেন্দ্রিক গবেষণার প্রয়োজনীয়তা’ নিয়ে আলোচনা করেন। এ ছাড়া এনসিডিসির প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. অসীম চক্রবর্তী বাংলাদেশের অসংক্রামক রোগের বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ রূপরেখা নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি পরিবর্তনশীল জলবায়ু পরিস্থিতির কারণে মানবস্বাস্থ্য কীভাবে ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছে, সে বিষয়ে বক্তব্য দেন।
এনসিডিসির লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. রোবেদ আমিন ক্লাইমেট চেঞ্জ ইনোভেশন হাবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন। তিনি এই উদ্যোগকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘সব অংশীজন একই অবস্থানে আছেন, তা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের এ ধরনের একটি হাবের প্রয়োজন ছিল। এর ফলে এখন থেকে আমরা তথ্য বিনিময় করার পাশাপাশি নতুন গবেষণার সুযোগ ও সক্ষমতা তৈরি করতে পারব।’
আইসিডিডিআরবির এনভায়রনমেন্টাল হেলথ অ্যান্ড ওয়াশ কর্মসূচির সমন্বয়কারী মাহবুবুর রহমান, অংশীজনদের কাছ থেকে উঠে আসা আলোচনা ও সুপারিশ এবং কীভাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রের সম্পৃক্ততাকে আরও ফোকাস করা যায়, তা তুলে ধরেন।
আইসিডিডিআরবির হেলথ সিস্টেমস অ্যান্ড পপুলেশন স্টাডিজ ডিভিশনের পরিচালক ড. সারা সলওয়ে বলেন, এই হাব উদ্বোধন ও কর্মশালা বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট জরুরি স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বৈচিত্র্যময় দক্ষতা এবং সংস্থানকে একত্র করার জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপে। এখান থেকে পাওয়া বিভিন্ন অন্তর্দৃষ্টি এবং সহযোগিতা জলবায়ু চ্যালেঞ্জগুলোর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে এবং স্বাস্থ্যসেবায় স্থিতিস্থাপকতা তৈরি করতে আমাদের চলমান প্রচেষ্টার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
‘ক্লাইমেট অ্যান্ড হেলথ ইনোভেশন হাব’ উদ্যোগটি দ্য রকফেলার ফাউন্ডেশন, ফাউন্ডেশন এস—দ্য সানোফি কালেকটিভ, এমরি ইউনিভার্সিটি, ইনস্টিটিউট ফর সাসটেইনেবল ফিউচার এবং রাইমসে সহযোগিতায় পরিচালিত হবে। এ ছাড়া উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে আছে নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল (এনসিডিসি), স্বাস্থ্য অধিদপ্তর (ডিজিএইচএস) এবং বিভিন্ন সংস্থার জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা, যেমন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় (এমওডিএমআর), বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট (বিসিসিটি), পরিবেশ অধিদপ্তর (ডিওই), নিপসম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর), বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর (বিএমডি) ইত্যাদি এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। ইউনাইটেড পারপাস, অ্যাকশন অ্যাগেইনস্ট হাঙ্গার (এসিএফ), সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস), ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইসিসিএডি), ফ্রেন্ডশিপ, প্রভা অরোরা, শক্তি ফাউন্ডেশন, ব্র্যাক, সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ বাংলাদেশ (সিআইপিআরবি), এআরকে ফাউন্ডেশন, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ, কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড, ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও) ও আইসিডিডিআরবি। অনুষ্ঠানে এসব সংগঠনের প্রতিনিধি এবং কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।