ব্র্যাক ও ইউএসএআইডির ‘বাংলাদেশ আমেরিকা মৈত্রী’ প্রকল্পের উদ্বোধন

বাংলাদেশ আমেরিকা মৈত্রী প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইউএসএআইডির মিশন ডিরেক্টর রিড এশলিম্যান ও ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্‌ছবি: ব্র্যাকের সৌজন্যে

তৃণমূল পর্যায়ের এনজিওগুলোর উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য অর্থসহায়তা এবং প্রশিক্ষণের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি) এবং ব্র্যাকের যৌথ উদ্যোগে শুরু হলো বাংলাদেশ আমেরিকা মৈত্রী প্রকল্প। গত বৃহস্পতিবার মৈত্রী প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। ব্র্যাকের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

ইউএসএআইডির মিশন ডিরেক্টর রিড এশলিম্যান ও ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্‌ সারা দেশের তৃণমূল পর্যায়ের এনজিও প্রতিনিধিদের সঙ্গে যৌথভাবে মৈত্রী প্রকল্পের ঘোষণা দেন। প্রকল্পটি একটি প্রতিযোগিতামূলক আর্থিক অনুদানপ্রাপ্তির সুযোগ প্রতিষ্ঠা করবে, যার মাধ্যমে স্থানীয় এনজিওগুলো স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, জলবায়ু এবং স্থানীয় পর্যায়ে জনগণের জন্য অন্যান্য প্রয়োজনীয় উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনায় অর্থসহায়তার আবেদন করতে পারবে।

স্থানীয় এনজিওগুলো কার্যকরভাবে প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি, প্রকল্পের নকশা প্রণয়ন এবং পরিচালন দক্ষতা উন্নয়নের বিষয়ে প্রশিক্ষণ পাবে। এর মাধ্যমে তাদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা, যোগাযোগ, নেটওয়ার্ক তৈরি এবং উন্নয়নের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার জন্য স্থানীয় সমাধানগুলোর বিকাশে সহায়ক হবে।

ইউএসএআইডির মিশন ডিরেক্টর রিড এশলিম্যান বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে পরিচালিত উন্নয়নই হচ্ছে ইউএসএআইডির দর্শনের মূল ভিত্তি। ক্ষুদ্র এনজিওগুলোর উন্নয়ন কর্মসূচিকে আরও কার্যকর করে তুলতে এবং একটি গতিশীল ও প্রাণবন্ত নাগরিক সমাজ গড়ে তুলতে ব্র্যাকের সঙ্গে অংশীদারত্ব করতে পেরে আমরা আনন্দিত।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এনজিও–বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. সাইদুর রহমান। বাংলাদেশ আমেরিকা মৈত্রী প্রকল্পকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অভিন্ন লক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারি খাতকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।

ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্ বলেন, স্থানীয়করণই শেষ কথা নয়, এটি সমস্যা সমাধানের একটি অন্যতম পথ। একটি ত্রাণ সংস্থা হিসেবে ব্র্যাকের যাত্রা শুরু। স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সমস্যা মোকাবিলার উদ্ভাবনী অভিজ্ঞতাগুলোর কথা তাদের কাছ থেকে শুনে এবং তা কাজে লাগিয়ে ব্র্যাক আজকের এই অবস্থানে এসেছে। স্থানীয় মানুষের প্রয়োজনের কথা বিবেচনায় রেখে ব্র্যাক ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করছে।

আসিফ সালেহ্‌ বলেন, ‘ দাতাদের সহায়তায় নয়, স্থানীয় পর্যায়ের এনজিওগুলোকে নিজেদের সমস্যা সমাধানের উপায় নিজেদেরই খুঁজে নিতে হবে। আর এ কারণেই আমি মৈত্রী প্রকল্পটি নিয়ে এতটা উচ্ছ্বসিত। এই প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্যই হচ্ছে স্থানীয় উদ্যোগের উন্নয়নগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।’

ব্র্যাকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মৈত্রী প্রকল্পটি স্থানীয় পর্যায়ের এনজিওগুলোর উদ্ভাবনী ‍সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং তাদের বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে। এ ছাড়া প্রকল্পটি জোট গঠন ও বিভিন্ন পর্যায়ে অ্যাডভোকেসির মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ের অংশিদারত্বকে আরও জোরদার করে তুলবে। এই প্রকল্পের চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য একটি কার্যকর ও গতিশীল নাগরিক সমাজ গড়ে তোলা।