ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের সহজ শর্তে বদলি নীতিমালা চাই

শিক্ষকপ্রতীকী ছবি

অতিসম্প্রতি একটি অনলাইন ও দৈনিক পত্রিকার জরিপে দেখা গেছে, ৫৩ শতাংশ ইনডেক্সধারী শিক্ষক আগে বদলি কার্যকর দেখতে চান। তাঁদের যুক্তি, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে বদলি নীতিমালার দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। শূন্য পদে বদলি হলে বদলিপ্রত্যাশী শিক্ষকেরা কাঙ্ক্ষিত স্থানে যেতে পারবেন এবং পদসংখ্যা একই থাকবে।

অপর পক্ষে সম্প্রতি নিবন্ধনধারী ৪৭ শতাংশ তরুণ-তরুণী আগে গণবিজ্ঞপ্তি চান। এর আগে মন্ত্রণালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ বদলির পর নতুন শিক্ষক নিয়োগের কর্মযজ্ঞ শুরুর কথা বলেছিল। পরে গণবিজ্ঞপ্তি হলেও শূন্য পদের সংখ্যা কিন্তু একই থাকবে। সে ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ চাইলে বয়সের ছাড় দিতে পারে, গণবিজ্ঞপ্তিপ্রত্যাশী শিক্ষকেরা সে দাবিও তুলেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে।

২.
নিবন্ধন সনদবিহীন ইনডেক্সধারী অল্পসংখ্যক শিক্ষক নিজ জেলার বাইরে শিক্ষকতা করছেন। তাঁদের বেশির ভাগ শিক্ষক অবসরে গেছেন, অবশিষ্ট যাঁরা আছেন, তাঁদের শিক্ষকতার বয়স বড়জোর ৫-১০ বছর আছে।

ওই শিক্ষকেরা কি বৃদ্ধ বয়সে বাড়ির কাছে যাওয়ার যোগ্যতা ও অধিকার রাখেন না? শিক্ষকতার বাকি সময়টা কি তাঁদের স্বাচ্ছন্দ্যময় করা যায় না? তাঁরা কি জাতিকে কিছুই দেননি? পেশাজীবী হিসেবে তাঁরা কি বদলির সুযোগ কখনো পাবেন না?

৩.
কমিটির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত বদলিপ্রত্যাশী ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের বদলি রিটের রায়ে উল্লেখ আছে, শিক্ষকেরা মানসিক প্রশান্তি ও সুষ্ঠু পাঠদানের নিমিত্তে পদ খালি থাকা সাপেক্ষে নিবন্ধন সনদবিহীন-সনদধারী এমপিওভুক্ত শিক্ষকেরা প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন করতে আইনত অধিকারী এবং বদলি নীতিমালা প্রণয়ন কমিটির প্রথম কর্মশালায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলেছে, বদলির রায় পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এখন কথা হলো, এনটিআরসিএর অধীন সুপারিশপ্রাপ্ত ও কমিটির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত সব শিক্ষকই কমিটির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত। তাহলে এনটিআরসিএর অধীন সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বদলির খসড়া নীতিমালা প্রকাশ করা হলো কেন?

২০১৫ সাল পর্যন্ত ইনডেক্সধারী শিক্ষকেরা ইনডেক্স নিয়ে প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের সুযোগ পেতেন এবং ২০১৬ সালে সে সুযোগও বন্ধ হয়ে যায়। এখন তাঁদের মুক্তির উপায় কী?

৪.
ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের আলাদা গণবিজ্ঞপ্তি বা ৭ নম্বর ধারা বহাল রাখার সুযোগ নেই, এ কারণে যে মাউশিতে শিক্ষকেরা বিষয়ভিত্তিক পিডিএস নম্বর হয়েছে, যা কোনোভাবেই বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই। পিডিএস নম্বর বাদ দিতে গেলে মাউশিতে আবেদন করতে হবে আর মাউশিতে যথাযথ কারণ দর্শানো ছাড়া তা কোনোভাবেই বাতিলযোগ্য হবে না। একমাত্র সমাধান বদলি এবং বদলি যেহেতু মাউশির অধীন হচ্ছে, সেহেতু সব ইনডেক্সধারী শিক্ষকের জন্য সহজ শর্তে বদলি নীতিমালা হওয়া যুক্তিযুক্ত।

লেখক: সভাপতি, কমিটির অধীন নিয়োগপ্রাপ্ত বদলিপ্রত্যাশী ইনডেক্সধারী শিক্ষক ইউনিটি-বদলি ৭১