সাইন আউট নাদাল দ্য বস
সময়টা ২০০৫-০৬ সাল। কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে সবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙিনায় পা রেখেছি। টেনিসের একচ্ছত্র নবাব তখন রজার ফেদেরার। পিট সাম্প্রাসের বিদায়ের পরে অপ্রতিরোধ্য গতিতে তখন এগিয়ে চলেছে রজারের জয়রথ। সেই জয়রথ মাঝেমধ্যে থমকে যেত বিশেষ করে ক্লে কোর্টে—রাফায়েল নাদালের হাতে। তখন থেকেই তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু। এর কিছুদিন পরেই সেই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যোগ দিলেন টেনিসের জোকার বলে খ্যাত নোভাক জোকোভিচ। তখন থেকেই এই তিন মহাতারকার মধুর প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখে মুগ্ধ হয়েছে সারা দুনিয়া। ২০, ২২ ও ২৪টা গ্রান্ড স্লাম!! কী অবিশ্বাস্য অর্জন এই তিন মহাতারকার ঝুলিতে।
ফ্রেড - রাফার দ্বিরথ টেনিস কোর্ট থেকে ছড়িয়ে যেত আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে, চায়ের আড্ডায়। বন্ধুদের মধ্যে একদল ফেদেরার এর সমর্থনে আর আরেক গ্রুপ নাদালের সমর্থনে চায়ের কাপে ঝড় ওঠাতাম। এই বিতর্ক চলতে থাকত দিনের পর দিন, মাসের পর মাস। জানি, এই বিতর্কের কোনো শেষ নেই। তাই তো বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে আজ ১৪ বছর পরেও সেই বিতর্ক অমীমাংসিত থেকে গেছে। দুজনের মধ্যে কে সেরা—ফেদেরার নাকি নাদাল!
রজার ফেদেরার টেনিসকে ইতিমধ্যে বিদায় জানিয়েছেন। বুধবার ডেভিস কাপ থেকে গ্রেট নাদাল টেনিসকে বিদায় জানালেন। এক এক করে টেনিসের আকাশ থেকে এভাবে ঝরে যাচ্ছে নক্ষত্ররা। এখন শুধু রয়ে গেছেন নোভাক। আমরা আসলেই একটা ভাগ্যবান প্রজন্ম, যাদের কিনা এই তিনজন মহাতারকার একসঙ্গে লড়াই দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। বিশ্ব টেনিস অবশ্যই রাফা এক্সপ্রেস কে মিস করবে। জিএস জেতার পরে ট্রফিতে কামড় দিয়ে উদ্যাপন করার উইনিক ও আইকোনিক দৃশ্য টেনিসপ্রেমীদের মনে চিরকাল গেঁথে থাকবে। সবকিছুর জন্য তোমাকে ধন্যবাদ রাফায়েল নাদাল দ্য টেনিস গ্রেট। আগামী দিনের জন্য শুভকামনা রইল।
*লেখক: প্রীতম মন্ডল, ব্যাংক কর্মকর্তা