ঈদকার্ড

দূরালাপনি থেকে মুঠোফোনে নেমে এসেছে, চিঠি থেকে নেমে এসেছে মেসেঞ্জার নামের বাহনের ক্ষুদ্র বার্তায়।

পৃথিবী সংকীর্ণ হয়েছে, ক্ষুদ্র হতে হতে আমরা পরিণত হচ্ছি ধূলিকণায়।

জীবনের আনন্দ-ফুর্তির পারদের সীমা ফারেনহাইট মাপে নেমে এসেছে তলানিতে।

তাই তো ঈদ আসে ঈদ চলে যায়, আমরা বলে দিই, এখন আর আগের মতো আনন্দ নেই, সব কমে গেছে।

আমরা তো নিজেরাই নিজেদের আনন্দ নামের অন্তরাত্মার টুঁটি চেপে ধরেছি।

প্রযুক্তির বাঁধনে বেঁধে যন্ত্রের সাজে সেজেছি।

ঈদের শুভেচ্ছা জানাতে একটা ছোট বার্তাই এখন শেষ কথা। কিন্তু এই ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে কত শত যাতনা আমাদের। নেই, নেই, সেই দিন আর নেই।

একটা ছোট ঈদকার্ডের মধ্যে লুকিয়ে থাকত যে ভালোবাসা, তা লাখ টাকা দামের মুঠোফোন দিয়ে করা ওই খুদে বার্তায় নেই।

সামান্য অর্থ ব্যয় করে অথবা কোনো প্রকার অর্থ খরচ ব্যতিরেকে শুধু হাতের পাশে থাকা কাগজটায় নিংড়ে দিতাম ঈদের শুভেচ্ছা। যার হরফে লেখা থাকত আবেগ, ভালোবাসা আর অনুভূতির গান। নানান আলপনায় ভেসে যেতাম কল্পনায়। স্নিগ্ধ নরম পরশে হারিয়ে যেতাম আকাশে প্রিয়জনের হাতের ছোঁয়ায়।

ঈদকার্ডে লুকিয়ে থাকা ভালোবাসার বার্তার সঙ্গে কখনো কখনো সেই বার্তা বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য নিজেরাই বানাতাম খাম। ঈদকার্ডে মোড়ানো থাকত ঈদের বাড়তি আমেজ, যা হয়তো আমাদের পরের প্রজন্ম জানবেই না।

এখনো ইচ্ছা করে চিৎকার করে বলি, দিও, দিও, চিঠি দিও, নীল খামে লুকিয়ে দিও, ঈদ মোবারক লিখে দিও...