সুশাসনের বার্তা আগে ওয়াশিংটনে পৌঁছাও

আমেরিকার রেলপথ নিয়ে সমৃদ্ধ বই লিখেছেন স্টিভ কিং নামের এক লেখক। দিনের পর দিন ট্রেনে ভ্রমণ করতে করতেই তিনি লিখেছেন আমেরিকার রেলপথের নানা বৃত্তান্ত।

সু, মানে শাহানা ট্রেনে আসছেন। ট্রেন শব্দের উচ্চারণ শুনেই জর্জ কথা শুরু করে দিয়েছেন।

-সকাল সকাল ইতিহাস নিয়ে কথা বলতে শুরু করে দিলে যে!

চলন্ত গাড়ির জানালা দিয়ে দ্রুতগতির সবুজের সমাহার দেখতে দেখতে হারিয়ে যাচ্ছিলেন মরুর দেশের মানুষ মোবারক।

জর্জ তাঁর বন্ধুকে বলছেন, আমেরিকায় থাকবে, ইতিহাস জানবে না কেন? বুঝলে ইব্বি, একটা জনপদে তুমি সারা জীবন কাটালে অথচ এখানকার অনেক কিছুই জানলে না। এত মূর্খের জীবন!

-তোমাদের ইতিহাস লুটপাট আর শোষণের ইতিহাস। এসব রেলপথ নির্মাণে কত কৃষ্ণাঙ্গ দাসের ঘাম জড়িয়ে আছে, এসব শোনাও বন্ধু। শুনে প্রীত হই। অন্তত মনে করব, আমেরিকারা অকৃতজ্ঞ নয়। পারলে বলতে শুরু করে দাও, নিজের বাপ-দাদাই সব করেছে দেশের জন্য। অন্যরা কেউ কিছু করেনি!

আসলে জর্জ ইতিহাস বলছিলেন না। একটা কৌতুক বলার জন্য ভূমিকা দিয়ে দিচ্ছিলেন।

বব নামের সাবেক এক মার্কিন সেনা অবসরে গেছেন। যুদ্ধে থাকার সময়ই প্রথম স্ত্রী চলে গেছে অন্যের সঙ্গে। দ্বিতীয় বিয়েও ধরে রাখা যায়নি। একাকী জীবনে একটা লম্বা ট্রেন ভ্রমণে বেরিয়েছেন বব।

সাব-আরবান ট্রেনের এক কেবিনে দুই আসন। ওপরে-নিচে। একজন ওপরে ঘুমাবে। একজন নিচে। বব কেবিনে উঠেই দেখেন, এক নারী যাত্রী বসে আছেন। কেবিনের একই খোপে ভ্রমণ। আশা করছিলেন, সমবয়সী কাউকে পেলে দীর্ঘ ভ্রমণে গল্প করে যাওয়া যাবে। যাত্রীটিকে দেখে বয়সে নিজের চেয়ে বেশ ছোটই মনে হলো ববের।

সৌজন্যমূলক কথাবার্তা হলো। নারীটি শুরুতেই নাম জানিয়েছেন, আইলিন। রাত ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে আইলিন নিজেই প্রস্তাব দিলেন, কিছু মনে না করলে ওপরের খোপে তিনি ঘুমিয়ে পড়বেন।

বব খুশিই হলেন। এ বয়সে ঘনঘন বাথরুমে যেতে হয়!

অ্যানি ফ্রাংকের লেখা ‘দ্য ডায়েরি অব এ ইয়াং গার্ল’ পড়তে শুরু করলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পটভূমি নিয়ে লেখা বইটি পড়তে পড়তে ববের ঘুম চলে আসছে। এর মধ্যেই আইলিন ওপরের খোপে ঘুমিয়ে পড়েছেন কম্বল মুড়ি দিয়ে। নাক ডাকছে।

ববের ঠান্ডা লাগছে। নিজের কম্বলটি খুঁজে পাচ্ছেন না। বাতি নিভিয়ে দিয়েছিলেন। আবার জ্বালিয়ে দিলেন। ওপরের খোপে নড়াচড়া টের পাওয়া গেল।

-এক্সকিউজ মি, আমি কি একটু সাহায্য পেতে পারি? আমার খুব ঠান্ডা লাগছে। কম্বলটা খুঁজে পাচ্ছি না।

আইলিন উঠে বসে পড়লেন।

-এতক্ষণ আমরা সহযাত্রী হিসেবে যে যার মতো ছিলাম। আজকের রাতটা না হয় স্বামী-স্ত্রীর মতোই আচরণ করি!

বব বেজায় খুশি। এ যেন মেঘ না চাইতেই পানি। আইলিন জানিয়েছেন তিনিও নিউইয়র্কে থাকেন। এ ট্রেন জার্নিতেই আবারও নিঃসঙ্গ জীবনের অবসান হচ্ছে! মনে করে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করলেন বব।

-আমি ধন্য হব! তো আমার কম্বলটা যে খুঁজে পাচ্ছি না!

-তোমার গোষ্ঠী কিলাই! এত রাতে নড়াচড়া করার সময় হুঁশ থাকে না! দেখতে পাচ্ছ না, আরেকজন ঘুমাচ্ছে!

বলেই আইলিন পাশ ফিরে পেছনের দেয়ালে লাথি দিয়ে আবার চোখ বন্ধ করলেন। নাকও ডাকতে শুরু করলেন প্রায় ত্রিশ সেকেন্ডের মধ্যে!

মোবারক হাসছেন, এই হলো প্রকৃত স্বামী-স্ত্রীর মতো আচরণ! হায়রে কপাল!

জর্জ ও মোবারক আগের সপ্তাহে নিউইয়র্ক সফর করেছেন পরিবার নিয়ে। ফিফথ অ্যাভিনিউয়ে শপিং করা, ফ্রিডম টাওয়ার দেখা, আইরিশ রেস্টুরেন্টে পানাহার করার আনন্দ মনে রাখার মতো। বন্ধুও ঝুঁটিয়ে ফেলেছেন একজন।

বন্ধু সু বা শাহানাকে নিয়ে আজকের পরিকল্পনা। কথা ছিল, শাহানা ট্রেনে চলে আসবেন নিউজার্সিতে। ট্রেন স্টেশনের কাছেই ফাতিমা তাঁর জন্য অপেক্ষা করবেন। সেখানে নাতালিয়াও আসবেন। মেয়েরা যাবে এক গাড়িতে। নাতালিয়া চলাবেন। জর্জের গাড়িতে পুরুষেরা। সকালেই শাহানা ফোনে জানিয়েছেন, তিনি কুইন্স থেকে রওনা দিয়েছেন।

বিপত্তি দেখা দিল মোবারকের স্ত্রী ফাতিমা হঠাৎ অসুস্থ বোধ করলে। ডাক্তার সরাসরি দেখতে চাচ্ছেন। মোবারকের ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। লকডাউনের জন্য খেয়াল ছিল না। নাতালিয়া জানালেন, তিনিই ডাক্তারের চেম্বারে নিয়ে যাবেন ফাতিমাকে। তিনিও ফিলাডেলফিয়া যাচ্ছেন না।

মোবারকই ঘোষণা দিলেন, শো মাস্ট গো অন! আমরা যাচ্ছি। সু এসে পৌঁছালেই আমরা এক গাড়িতেই যাব।

-আমি দুইটা প্রস্তাব দিতে চাই। যেকোনো একটা হলেই আমি খুশি। কোনটা না হলেও আমার আপত্তি নেই।

-কি?

জর্জ হাত ওঠালেন।

ফিলাডেলফিয়ার এই হলে ১৭৭৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়
ছবি: সংগৃহীত

-শোনার চেষ্টা করো না মোবারক। এমনভাবে বলবে, তোমাকে ফাঁদে ফেলে দেবে। যেদিকেই তুমি সিদ্ধান্ত দাও, দেখবে ইব্বি জিতে গেছে!

-আগে শুনে নিই। আমাদের অনুমোদন ছাড়া তো আর কিছু হচ্ছে না।

আমার প্রস্তাব, মোবারক আর জর্জ আগেই রওনা দেবে। পাইরোগি কিচেন নামের পোলিশ রেস্টুরেন্টে বুকিং দেওয়া আছে। সেখানে অপেক্ষা করবেন। আমি ফাতিমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাব। ডাক্তার সব ঠিক আছে বললে, আমি তিনজনকে নিয়ে চলে আসব। ডাক্তার না করলে, নাতালিয়া ফাতিমাকে সঙ্গ দেবেন। বেচারা সু নিউইয়র্ক থেকে আসছে। সে ক্ষেত্রে আমি সু’কে নিয়ে আসছি।

জর্জ নির্দেশ দিলেন, সু’কে যেন টেক্সট করে জানিয়ে দেওয়া হয়। ট্রেনেই তিনি ফিলাডেলফিয়া ডাউন টাউনে পৌঁছবেন।

পাইরোগি কিচেনে বসে আড্ডা চলছে। চলছে জর্জের কৌতুক। তেমন ভিড় নেই। এমনিতেই নিয়ন্ত্রিত গ্রাহকদের সেবা দেওয়া হচ্ছে। পুরো রেস্টুরেন্টে মাত্র দুই টেবিলে লোকজন আছেন।

শাহানা এসে পৌঁছেছেন।

জিনসের সঙ্গে সাদা রঙের আড়ংয়ের একটা জামা পরে এসেছেন। হাতের ব্যাগটাও আড়ং থেকে নেওয়া। জর্জ আর মোবারক—দুজনই পোশাকের প্রশংসা করলেন। আলাপ শুরু হয়ে গেল। আড়ং নিয়ে আলাপের সূত্র ধরে নাম চলে আসল ব্র্যাক আর স্যার ফজলে হাসান আবেদের।

জর্জই বলে উঠলেন, এ লোকটা নোবেল পদক পাবেন—এমন আশা তিনি করেছিলেন। একজন আমেরিকানের মুখে ব্র্যাকের প্রশংসা শুনে শাহানার রীতিমতো চোখ ছলছল করছে।

মোবারক যোগ করলেন, নোবেল পুরস্কার এমন লোকজনকেও দেওয়া হয়েছে, যারা কিছু করেননি। মহৎ কিছু করবেন বলে মনে করা হয়েছে। বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরই তাঁকে নোবেল দেওয়া হয়েছে। ধরে নেওয়া হয়েছিল, তিনি বিশ্বশান্তির জন্য অনেক কাজ করবেন! কিছুই তাঁর করা হয়নি।

জর্জ কথাটিতে সায় দিলেন। শাহানা যোগ করলেন, স্যার ফজলে হাসান আবেদ না পেলেও বাংলাদেশের ড. মুহাম্মদ ইউনূস পেয়েছেন। মোবারক এই ফাঁকে ক্ষুদ্র ঋণ কীভাবে দারিদ্র্য জিইয়ে রাখে, তাঁর একটা বক্তৃতা পাড়লেন। বললেন, এই ক্ষুদ্র ঋণের ধারণাটিও বাজার অর্থনীতির পরিপূরক। কায়েমি শোষণ চালিয়ে যাওয়ার পুঁজিবাদী হাতিয়ার!

জর্জ আর শাহানা একজোট হয়ে মোবারকের ওপর হামলা চালালেন। আমি মোবারকের পক্ষে সায় দিচ্ছি। জর্জ বলে উঠলেন, নৈরাজ্যবাদীদের সঙ্গে কথায় পারবে না সু!

মোবারক বলে উঠলেন, নৈরাজ্যবাদী কথাটি আজকাল ট্রাম্পও বেশি করে বলছেন। কিছু লোকের গলার স্বর একই মনে হচ্ছে!

জর্জকে ধরার চেষ্টা করছেন মোবারক। ‘বিগস’ নামের পোলিশ খাবারে কেচাপ ঢালতে ঢালতে শাহানা কথার মোড় ঘোরাতে চাচ্ছিলেন। তাঁর এক পোলিশ বন্ধুর কাছ থেকে শোনা কৌতুক বলতে শুরু করেছে।

গত শতাব্দীর ঘটনা। পোলিশ মানুষের ব্যাপক অভিবাসন ঘটছে আমেরিকায়। পোল্যান্ড থেকে আমেরিকায় জীবনের সন্ধানে আসা কারখানা শ্রমিক অ্যান্ড্রোজ বিয়ে করেছেন নিউইয়র্কের জুলিয়াকে। বিয়ের কিছুদিনের মধ্যেই ডিভোর্সের মামলা উঠেছে আদালতে। জুলিয়া আদালতে বলছেন, তিনি স্বামীকে ভালোবাসেন। অ্যান্ড্রু সাজগোজ পছন্দ করেন। তিনি সব সময় তাঁর এ পছন্দকে সম্মান করেন। চুল, নখের যত্ন নিয়ে সুনসান থাকার চেষ্টা করেন। কোথাও কোন কারণ তিনি খুঁজে পাচ্ছেন না, কেন অ্যান্ড্রোজ বিচ্ছেদ চাচ্ছে!

বিচারক জানতে চান অ্যান্ড্রুর কাছে, কী ব্যাপার!

অ্যান্ড্রু বলেন, সব ঠিক আছে। কিন্তু জুলিয়া আমাকে গোপনে খুন করতে চায়!

জুলিয়া আকাশ থেকে পড়লেন? বিচারক বেশ গুরুত্বের সঙ্গে নিলেন। নড়েচড়ে বসলেন। জানতে চান, অ্যান্ড্রু কীভাবে জুলিয়ার এমন পরিকল্পনার কথা জানতে পারলেন?

বিষ পান করিয়ে মারতে চায়। অ্যান্ড্রু বললেন, তিনি বিষ কেনার রসিদ পেয়েছেন জুলিয়ার ব্যাগে!

বিচারক আদালতে রসিদ উপস্থাপনের নির্দেশ দিলেন।

ফুই হনর (পোলিশ ভাষায় ইয়োর অনার) বলে অ্যান্ড্রু আদালতে দুমড়ানো রসিদটি উপস্থাপন করলেন! রসিদটি ‘বিউটি প্লাস’ নামের একটি দোকানের! নাইনটি নাইন সেন্টস দিয়ে ‘পোলিশ রিমুভার’ কেনার রসিদ।

-ফুই হনর! বলতে বলতে অ্যান্ড্রু কাঁপতে শুরু করেছেন। মৃত্যু ভয় বলে কথা।

বিচারক বোঝাতে চেষ্টা করছেন, এ নেইল পালিশ সরানোর লিকুইড! পোলিশ লোকজনকে মারার বিষ নয়!

অ্যান্ড্রু ফুই হনর, ফুই হনর করছেন আর কাঁপছেন!

বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন
ছবি: সংগৃহীত

জর্জ হাসতে থাকলেন। বললেন, পাইরোগি কিচেনের মালিককে কৌতুকটি শুনিয়ে গেলে মন্দ হয় না! নতুন বন্ধু সু’কে খুব পছন্দ হয়েছে তাঁর। মোবারকেরও। হাঁটতে হাঁটতে পেনসিলভানিয়ার ফিলাডেলফিয়া নগর দেখেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ এই নগর নিয়ে জর্জ বলে যাচ্ছেন, আমেরিকার ইতিহাসের শুরুর দিনগুলো।

শাহানা বলছেন, এসব পড়তে যেমন শিহরণ লাগে। কোন আমেরিকানের কাছ থেকে এসবের গল্পও শুনতেও ভালো লাগে!

জর্জ বলে যাচ্ছেন, পেনসিলভানিয়া রাজ্যের এই নগর আমেরিকার ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বের নগরী। এখান থেকেই ১৭৭৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার ঘোষণা আসে। আমেরিকার ফাউন্ডিং ফাদারদের অন্যতম বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন। একজন প্রকাশক ছিলেন। সাংবাদিকতা করেছেন। সহিসংতার নানা পথ পেরিয়ে আজকের যুক্তরাষ্ট্র বিনির্মাণে বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিনের কথা তন্ময় হয়ে শুনছেন শাহানা। জর্জ বলছেন ফ্রাঙ্কলিনের বিখ্যাত সেই উক্তি, ‘Those who would give up essential Liberty, to purchase a little temporary Safety, deserve neither Liberty nor Safety.’

জনগণের নিরাপত্তা দেওয়ার নামে ন্যূনতম স্বাধীনতা হরণ করে যে সমাজ, সে সমাজ নিরাপত্তা বা স্বাধীনতা-কোনোটাই পাওয়ার দাবি রাখে না! এ কথাটি আজকের দিনের শাসকদের আরও বড় করে জানান দেওয়া দরকার!

ট্রাম্প যে বলছেন দেশের নিরাপত্তা নেই। নাগরিক আন্দোলনের নগরগুলোতে তহবিল কেটে দেওয়ার কথা বলছেন!

-ঠিক নয় বন্ধু! এ খুবই ভুল কাজ হচ্ছে। কে শোনাবে তাঁকে এসব কথা?

শাসকেরা যে অন্ধ হয়ে যায়! এরা ক্ষমতায় থাকার জন্য অজানা শত্রুর ভয় দেখায়। জানা সমস্যাকে এরা এড়িয়ে চলে। কারণ সমস্যাগুলো যে তাদের নিজের তৈরি করা।

জর্জ এবার মোবারকের পিঠে হাত দিয়ে বলেন, বন্ধু তোমার সঙ্গে যে আমার বন্ধুত্ব তার জন্যও আমি এই বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিনকে অনুসরণ করি।

মোবারক বোকার মতো তাকান।

শাহানা দেখেন বাংলাদেশের পতাকা পতপত করে উড়ছে। বিশ্বের নানা দেশের পতাকার সারি। সেখানে বাংলাদেশের পতাকার নিচে গিয়ে দাঁড়ান শাহানা। বুকে হাত দিয়ে নীরব থাকেন কিছুক্ষণ। কেউ কিছু বলেন না।

ফ্রাঙ্কলিনের বিখ্যাত উক্তি শুনিয়ে দেন জর্জ, ‘Love your Enemies, for they tell you your Faults।

এ কারণেই তোমাকে ভালোবাসি মোবারক। দুই বন্ধু হাসতে থাকেন। ফিলাডেলফিয়া নগরের ফ্রাঙ্কলিন পার্কওয়ের ফুটপাথ দিয়ে হাঁটছেন জর্জ। পাশেই শাহানা। সু থামো। ওপরে তাকাও!

শাহানা দেখেন বাংলাদেশের পতাকা পতপত করে উড়ছে। বিশ্বের নানা দেশের পতাকার সারি। সেখানে বাংলাদেশের পতাকার নিচে গিয়ে দাঁড়ান শাহানা। বুকে হাত দিয়ে নীরব থাকেন কিছুক্ষণ। কেউ কিছু বলেন না।

জর্জ বলে ওঠেন, ফ্রাঙ্কলিনের সুশাসনের বার্তাটি এসব সারি সারি পতাকার সব দেশে যদি পৌঁছে যেতো!

মোবারক বলে ওঠেন, আগে নিজের দেশের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে পৌঁছাও!

শাহানা তখনো সড়ক পথে উড্ডীন বাংলাদেশের পতাকার নিচে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁর চোখ ছল ছল করছে। শাহানার চোখে চোখ পড়তেই চোখটি নামিয়ে নিতে হলো!

ibrahim.chowdhury@prothomalo. com