সুরের মূর্ছনায় জেগে উঠল প্যারিস

করোনার দীর্ঘ জাঁতাকলের পর সুরের মূর্ছনায় জেগে উঠল প্যারিস। নগরবাউল জেমস, শিরোনামহীন, মোজাসহ দেশি-বিদেশি অসংখ্য শিল্পীর কণ্ঠে বাংলা গানের এক অন্য রকম আসর বয়ে গেল সাহিত্য-সংস্কৃতির তীর্থভূমি ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে। ফ্রান্স-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি এবং পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উদ্‌যাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ দূতাবাস, প্যারিসের সহযোগিতায় আড়ম্বরপূর্ণ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সামাজিক অ্যাসোসিয়েশন অফিওরা।

গত রোববার প্যারিসের উপকণ্ঠে স্তা স্টেডিয়ামে আয়োজিত উৎসবে উপস্থিত হাজারো দর্শক-শ্রোতার মন জয় করেন সংগীত তারকারা। দুপুর থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চলে উৎসব।

‘ফ্রাঙ্কো-বাংলা ফ্রেন্ডশিপ ফেস্টিভ্যাল’ শিরোনামে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের তারকা শিল্পীদের পাশাপাশি স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় মেতে ওঠে পুরো স্টেডিয়াম। বিশেষ করে জেমসের কণ্ঠে ‘কবিতা তুমি স্বপ্ন চারিণী হয়ে/ মা/ আমার সোনার বাংলা/ গুরু ঘর বানাইলা কী দিয়া/ সুলতানা বিবিয়ানা/ পাগলা হাওয়ার তরে’ জনপ্রিয় এসব গানের মুগ্ধতা আর দর্শকদের উচ্ছ্বাস-ভালোবাসায় ভিন্নতা খুঁজে পায়। আয়োজক প্রতিষ্ঠান অফিওরার প্রেসিডেন্ট ও ফ্রঁসে আভেক রাব্বানীর প্রতিষ্ঠাতা কাউন্সিলর কৌশিক রাব্বানী খানের সঞ্চালনায় উৎসবের শুরুতেই জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়।

অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথির বক্তব্য দেন ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম তালহা, স্তা মেরির মেয়র আজেদী তাইবি, শাহ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক শাহ আলম সুমন, অর্পির পরিচালক ওদিন তুয়াতি, কো-ডিরেক্টর ফারুক খান, অমি ভয়াজের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক তানজিম হোসাইন, অফিওরার জেনারেল সেক্রেটারি শুভ দাস প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে সিলেটের বন্যার্ত মানুষের সহযোগিতার তহবিল সংগ্রহের জন্য বিসিএফ ও ইপিএসের তত্ত্বাবধানে দুটি ডোনেশন বাক্স রাখা হয়। এতে প্রায় আড়াই হাজার ইউরো দান করেন অনুষ্ঠানে আগত ব্যক্তিরা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম তালহা বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত পদ্মা সেতু বাংলাদেশ এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী পরিকল্পনার ফসল এ পদ্মা সেতু বাংলাদেশের উন্নয়নে অনন্য ভূমিকা পালন করবে। তিনি বলেন, ফ্রান্সের সঙ্গে বাংলাদেশের যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে, তা দিন দিন আরও উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

সফল ও সুন্দরভাবে এ ঐতিহাসিক উৎসব সম্পন্ন করতে পেরে সবার প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ইভেন্ট প্রতিষ্ঠান ‘অফিওরা’র কর্ণধার কৌশিক রাব্বানী খান জানান, মূলত ফ্রান্সে বাঙালিদের মেলবন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করার পাশাপাশি ফরাসি সংস্কৃতির মধ্যে বাংলাদেশি কৃষ্টি-কালচার ছড়িয়ে দেওয়ার প্রয়াস নিয়ে ছিল আমাদের এ আয়োজন। তিনি বলেন, আশা করি কিছু সময়ের জন্য হলেও প্যারিসের বুকে একটুকরো অন্য রকম বাংলাদেশ খুঁজে পেয়েছেন সবাই।

অনুষ্ঠানে বিশেষ সহযোগিতায় ছিল স্তা-মেরি ও বিসিসিপি স্তা। এ ছাড়া আর্থিক সহায়তা প্রদান করে শাহ গ্রুপ এবং আভেক রাব্বানী প্রফেশনাল সার্ভিসেস।