সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের সার্কুলার, ক্ষুব্ধ ও হতাশ স্পেনপ্রবাসীরা

ছবি: লেখক

স্পেনের নাগরিকদের বাংলাদেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ও বাংলাদেশি স্পেনপ্রবাসীদের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে হতাশা ও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রবাসীরা।

গত ১৬ আগস্ট সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ এক সার্কুলারে জানায়, ‘শুধু বাংলাদেশি নাগরিক বা বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীরা’ বাংলাদেশে গমন করতে পারবেন। এ কথা উল্লেখ থাকায় বিমান সংস্থাগুলো স্প্যানিশ পাসপোর্টধারী যাত্রী বাংলাদেশে পরিবহনে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে। এ ঘটনায় হতাশ হয়েছেন স্পেনপ্রবাসী ও স্পেনের নাগরিকেরা।

এর কারণে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলে মনে করেন বিশিষ্টজনেরা। বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন পুলিশ ও হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কোভিড হেলথ ডেস্কের সঙ্গে আলোচনাক্রমে দূতাবাস পৃথক একটি নোটিশ জারি করলেও বিমানসংস্থাগুলো সিভিল এভিয়েশনের সার্কুলারের নির্দেশনার বাইরে যাত্রী বহনে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে। এ অবস্থায় বিপাকে পড়েছেন স্প্যানিশ পাসপোর্টধারীরা।

গত ২০ আগস্ট মাদ্রিদপ্রবাসী নেছারুল্লাহ হামিদকে বাংলাদেশের বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠানোর ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন প্রবাসীরা। করোনাভাইরাসের আরটি–পিসিআর সনদ থাকা সত্ত্বেও দেশে ঢুকতে না পারার ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়ে দায়িত্বশীলদের ভূমিকা। আর এ ঘটনার কারণে গ্রীষ্মের ছুটিতে অনেক প্রবাসী পরিবার–পরিজন নিয়ে বাংলাদেশে যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করেছেন বলে জানা গেছে। আমদানিকারী দেশের তালিকায় স্পেন ষষ্ঠ। ইতিমধ্যে ৭২ শতাংশ নাগরিককে টিকা দিয়েছে স্পেন, যা ইউরোপে সর্বোচ্চ। তারপরও স্পেনকে কালো তালিকাভুক্ত করায় হতাশ হয়েছেন অনেকে।

ইতালি ভ্রমণে বাংলাদেশিদের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও স্পেন সরকার এমন কোনো নিষেধাজ্ঞা কখনো আরোপ করেনি। ইউরোপের মধ্যে শুধু স্পেনের সঙ্গে এ রকম অপেশাদার আচরণে হতাশ ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রয়া জানিয়েছেন কমিউনিটি নেতারা।

এ বিষয়ে দূতাবাসের প্রথম সচিব মুতাসিমুল ইসলাম বলেন, এ সমস্যা সমাধানের জন্য দূতাবাস কাজ করছে। শিগগিরই সমস্যাটির সমাধান হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন স্পেনের সভাপতি কাজী এনায়েতুল করিম তারেক বলেন, ‘বর্তমান ডিজিটাল যুগে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর এ রকম সিদ্ধান্ত আমাদের হতাশ করেছে। আমরা প্রত্যাশা করি, শিগগিরই তাদের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেবে।’ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি এইচ এম রাসেল হাওলাদার জানান, সরকারের উচিত স্প্যানিশ বিনিয়োগকারীদের প্রতি এ রকম আচরণ না করে বরং বন্ধুসুলভ আচরণ করা।

বিমানবন্দরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের হয়রানি বন্ধ করে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন স্পেনের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান।