সিডনিতে ‘রবীন্দ্রজয়ন্তী উৎসব’

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সিডনির অন্যতম নারী সংগঠন ‘আমাদের কথা’ ৭ মে সিডনির গ্লেনফিল্ড কমিউনিটি হলে আয়োজন করেছিল ‘রবীন্দ্রজয়ন্তী উৎসব’। ‘হে নূতন দেখা দিক আর-বার’ শিরোনামে অনুষ্ঠানজুড়েই ছিল কবিগুরুর প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন তাঁরই সৃষ্টিকর্মের মাধ্যমে। বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় দলীয় ও একক গান, কবিতা, নাচ এবং আমন্ত্রিত অতিথিদের রবীন্দ্র ভাবনা—সব মিলিয়ে হলজুড়েই যেন ছিল বিশ্বকবির পরম উপস্থিতি।

পূরবী পারমিতা বোসের পরিচালনা এবং মঞ্জুশ্রী মিতার উপস্থাপনায় সংগীত পরিবেশন করেন নিলুফা ইয়াসমীন, আয়শা কলি, বাঁধন, সূবর্না তালুকদার, পেট্রেসিয়া ডিয়াজ মেনডিজ, ফাইজা কালাম রুবা, মারিয়া মুন, প্রিয়াংকা চৌধুরী, পৃথিবী তাজওয়ার, মুনতাহা মুন। নৃত্য পরিবেশন করেন আরিও, প্রজাপতি, কুমকুম, নবনীতা, রাপ্তী ও মৌসুমী সাহা। কবিতায় ছিলেন মুনা মোস্তফা ও সাইদা শাহরীন রলি। যন্ত্রে সহযোগিতায় ছিলেন নামিদ ফারহান, এলেন জোসেফ ও সুহৃদ সোহান। শব্দ নিয়ন্ত্রণে ছিল ইভেনেক্স। সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন আবদুল্লাহ আল মামুন ও মইনুল হাসান সুমন।

প্রবাসে কবিগুরুকে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের কাছে আরও বেশি নোবেল বিজয়ী বাঙালি কবিকে পরিচয় করিয়ে দিতে নানা বয়সের বাংলাভাষী দর্শকেরা সত্যিকারের উৎসবেই যেন মেতে ছিলেন সেদিন। পাশাপাশি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত স্থানীয় কাউন্সিলররা, বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠনের নেতারা, সাংবাদিকেরাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

‘আজি প্রণমি তোমারে চলিব নাথ’ গানের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভসূচনা হয়। অনুষ্ঠানের একটি বিশেষ দিক ছিল নতুন প্রজন্মের বাচ্চাদের পরিবেশনায় গান, নাচ এবং তাদের রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে নিজস্ব অভিমত প্রকাশ। সেই সঙ্গে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মতপ্রকাশে উঠে এসেছে কীভাবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর অনবদ্য সৃষ্টির মাধ্যমে যুগ যুগ ধরে বাঙালির হৃদয়ে জাগ্রত আছেন এবং থাকবেন।

পুরো আয়োজনকে আরও বেশি উপভোগ্য করে তুলেছিল অনুষ্ঠানের মঞ্চসজ্জা, রবীন্দ্র রচনা সমগ্র, গ্রামোফোন ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবিসংবলিত বিশেষ রবীন্দ্র-কোণ। নারী দর্শকদের সবাই সেজেছিলেন উপন্যাসে পড়া রবীন্দ্র নায়িকাদের মতো সেই চিরাচরিত সাজে। সবশেষে ‘এসো হে বৈশাখ’ গানের মাধ্যমে নতুন বছরকে আবাহন জানিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।