সিডনিতে দুর্গোৎসব এবার অনেকটায় ম্রিয়মাণ থাকবে
বাংলাদেশের মতো শরতের মিষ্টি রোদের আবহ বইছে সিডনিতেও। আশ্বিনের শুক্লপক্ষ জানান দিচ্ছে দেবীপক্ষ এল বলে। তবে এবার যেন কল্পারম্ভের গন্ধ নেই বাতাসে। নবপত্রিকার জোগানের তাড়াহুড়াও খুব একটা নেই। আমন্ত্রণের শাটী আর মধুপর্কের বাটী নিয়েও সিডনিতে বন্ধু-পরিজনের বাড়িতে নেমন্তন্ন নিয়ে যাচ্ছেন না কেউ। সময়টা যে এখন নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার। আপন মনে একাগ্রচিত্তে প্রার্থনা করলেও দেবী দুর্গা সন্তুষ্ট হবেন বলে মন্তব্য সিডনিতে বসবাসরত হিন্দুধর্মাবলম্বী অনেকের।
এমন খানিকটা অনাড়ম্বর আয়োজনের মধ্য দিয়েই সিডনিতে এবার পালিত হতে যাচ্ছে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। অস্ট্রেলিয়ায় চলমান স্বাস্থ্যবিধি মেনেই স্বল্প পরিসরে দেশটিতে আয়োজিত হতে চলেছে এবারের দুর্গোৎসব।
এ বছর সীমিত এবং ঘরোয়া পরিবেশে দুর্গাপূজা উদযাপন করার পরিকল্পনা দেশটির বিভিন্ন পূজা উদযাপন সংগঠনের। পূজায় অংশগ্রহণের তেমন কোনো প্রচার-প্রচারণা নজরে পড়েনি সিডনিবাসীর। তবে অনেক বাঙালি জানালেন, তাঁরা ঘরের মধ্যেই পরিবারের সঙ্গে উদযাপন করবেন এবারের পূজা।
বিভিন্ন পূজামণ্ডপে স্থানীয় সরকারের নির্দেশিত নির্দিষ্টসংখ্যক মানুষকে নিয়ে আয়োজিত হবে পূজা। তবে বেশির ভাগ পূজামণ্ডপেই এক দিনে মূল পূজার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার কথা রয়েছে।
এ বছর কর্মসম্পাদনের অন্যতম মাধ্যম অনলাইন লাইভ ভিডিও কলের মাধ্যমেও মণ্ডপে পূজায় যুক্ত হওয়ার ব্যবস্থা থাকছে। একই মাধ্যমে দেশে পরিবারের সঙ্গেও পূজা পালন করার পরিকল্পনাও রয়েছে অনেকের। তবে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে আসা বিশেষ করে বয়ঃজ্যেষ্ঠদের জন্য বাড়তি ভাবনার কথা জানিয়েছেন কয়েকজন। বয়ঃজ্যেষ্ঠদের মণ্ডপে পূজা-অর্চনা করার ব্যবস্থার দিকে বিশেষ নজর রয়েছে পূজা উদযাপন সংগঠনগুলোর।
অস্ট্রেলিয়ার সিডনিসহ প্রায় সব শহরে বসবাস রয়েছে বাঙালিদের। উপাসনার জন্য প্রায় সব শহরেই ছোট-বড়, স্থায়ী-অস্থায়ী মন্দির রয়েছে। প্রতিবছর এ সময় সিডনির বাঙালিপাড়াগুলো মেতে উঠত উৎসবের আমেজে। দিগ্বিদিক আলোকিত হয়ে উঠত পঞ্চপ্রদীপের আলোয়।
পূজা সামনে রেখে অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন শহরে বসবাসকারী প্রবাসী বাঙালি কমিউনিটি ও সংগঠন আয়োজন করত দুর্গাপূজা উদযাপন উৎসবের। তাদের মধ্যে রয়েছে আগমনী অস্ট্রেলিয়া, সিডনির ভক্ত মন্দির, বাংলাদেশ সোসাইটি ফর পূজা অ্যান্ড কালচার ইনক, বাংলাদেশ পূজা অ্যাসোসিয়েশন, অস্ট্রেলিয়ান বাঙালি হিন্দু সংঘ, বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়া পূজা সংঘ ক্যানবেরা, মেলবোর্ন বাঙালি সংঘ, বাংলাদেশ পূজা অ্যান্ড কালচার সোসাইটি অব ব্রিসবেন, বেঙ্গলি সোসাইটি অব কুইন্সল্যান্ড, বাংলাদেশ পূজা অ্যান্ড কালচার সোসাইটি অব সাউথ অস্ট্রেলিয়া, বেঙ্গলি অব পার্থসহ আরও নানা সংগঠন। বিশ্বের সব মানুষের শান্তি কামনা ও আরোগ্য লাভের প্রার্থনাই এবারের শারদীয় দুর্গাপূজা মূল আয়োজন।