সাংবাদিকতা, পরম শ্রদ্ধার পেশা
আমার আম্মির দূর সম্পর্কের এক ভাই ছিলেন দৈনিক ‘অবজারভার’-এর সাংবাদিক। বাসায় বেড়াতে এলে কী শ্রদ্ধার সঙ্গে তাকাতাম আমরা। মামা, কত কিছু দেশের জন্য করছেন। কত কত জায়গায় মামাকে দৌড়াতে হয়। আমাদের জানাতেন কোথায় কী হচ্ছে। রাত নেই, দিন নেই, মাঝেমধ্যে খাওয়াদাওয়ারও ঠিক নেই। ভালো-মন্দ সব প্রফেশনেই আছে। কিন্তু প্রচণ্ড ডেডিকেশন ছাড়া সাংবাদিক হওয়া সম্ভব না।
কাকতালীয়ভাবে গতকাল বুধবার গিয়েছিলাম আমাদের এডমিন অফিসে। অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছিল সকাল আটটায়। নিচে গিয়ে ফোন করেছি, ওনার সম্মানিত অ্যাসিস্ট্যান্ট এসে মেইন দরজা খুলে (লক থাকে ২৪ ঘণ্টা বিল্ডিংয়ের মেইন দরজা) নিয়ে গেছেন। ৩০ মিনিটের কথোপকথন। তারপর চলে এসেছি সরাসরি নিচে, হাসপাতালের কাজে ফেরত গেছি। অপ্রয়োজনে এবং অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়া কারও সুযোগ নেই সে বিল্ডিংয়ে ঢোকার। দেশ বা বিদেশে সব জায়গায় এভাবেই গেছি আর চলে এসেছি। ডানে-বায়ে তাকানোর সুযোগ ছিল না।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজটা কঠিন। পৃথিবীর সব দেশ হিমশিম খাচ্ছে মহামারি মোকাবিলায়। বাংলাদেশ কোনো আলাদা না। মহামারি প্রতি ১০০ বছরে একবার আসে। আমাদের জীবনে আমরা আর কোনো মহামারি দেখব না। সবার জায়গা থেকে চেষ্টা করছি আমরা মহামারি মোকাবিলায়। বাংলাদেশ সীমিত সামর্থ্যে চমৎকার কাজ করছে। টিকার অতি দ্রুত বণ্টন তার সাক্ষী। তবু চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স থাকতে হয়। ভুল ধরিয়ে দিলে সচেতন হয়ে আরও উন্নতি করতে পারে সবাই। কোনো মন্ত্রণালয়ে এর ব্যতিক্রম হওয়ার কথা না।
একজন মহা সম্মানিত অনুসন্ধানী সাংবাদিক যদি অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে মন্ত্রণালয়ে যান, তাঁর কীভাবে টপ সিক্রেট কিছুর এক্সেস থাকে? সিক্রেট গুছিয়ে রাখার দায়িত্ব কার? সম্মানিত সাংবাদিকদের সম্মান না করতে পারলে কীভাবে এগিয়ে চলব আমরা?
আমার ভালোবাসার, সম্মানের, বস্তুনিষ্ঠ, সঠিক সংবাদের অন্যতম প্রধান দেশের প্রথম সারির পত্রিকা প্রথম আলোর সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের সম্মানের সঙ্গে মুক্তি দাবি করছি।
ওনাদের কাজটা কঠিন কিন্তু প্রয়োজনীয়। সত্য এবং আলোর পথিক সাংবাদিক সমাজ বেঁচে থাকুন সম্মানের সঙ্গে কোটি কোটি বছর।
*লেখক: চিকিৎসক