সময় গেলে সাধন হবে না: প্রেক্ষিত করোনা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ
ইতিমধ্যে বাংলাদেশে সরকারি হিসাব অনুযায়ী পৌনে দুই লাখের ওপরে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ২ হাজার ২০০–এর ওপরে মারা গেছেন। আগামী কয়েক দিনে যে এ সংখ্যা অনেক বেড়ে যাবে, এটা এক রকম নিশ্চিত।
সম্প্রতি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন সংক্রমণের হার অনুযায়ী রেড, ইয়েলো ও গ্রিন জোনে ভাগ করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ এ–ও সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে রেড জোন এলাকাকে পৃথকভাবে লকডাউন করবে। এরই ধারাবাহিকতায় পূর্ব রাজাবাজারে পরীক্ষামূলকভাবে লকডাউন শেষ হয়ে এখন ওয়ারীতে লকডাউন শুরু হয়েছে।
পৃথিবীর যেসব দেশ করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে এনেছে, তাদের পদক্ষেপ পর্যালোচনা করলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন করা যেতে পারে, যেখানে অন্যান্য দেশ সম্পূর্ণ লকডাউন করে সাফল্য অর্জন করেছে, সেখানে এটা নিয়ে পরীক্ষা করার অবকাশ আছে কি না। আর বাংলাদেশে করোনাভাইরাস এমন পর্যায়ে চলে গেছে, সেখানে কালক্ষেপণের অবকাশ নেই। তা ছাড়া কর্তৃপক্ষ এটা কি নিশ্চিত করে বলতে পারবে যখন রেড জোনের লকডাউন শেষ হবে, তখন ওই জোনের লোকজন অন্য জোনে গিয়ে ভাইরাস সংক্রমিত হবে না বা অন্য জোনের সংক্রমণ বেড়ে রেড জোনের পর্যায়ে যাবে না।
এটা বললে হয়তো অত্যুক্তি হবে না যে মার্চের প্রথম দিকে যখন বাংলাদেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হলো এবং একই সময়ে বিদেশে, বিশেষ করে ইতালি থেকে প্রবাসীরা দেশে প্রত্যাবর্তন করল তখন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের কারণে করোনাভাইরাস এখন জেঁকে বসেছে। অবশ্য কর্তৃপক্ষ বিদেশ থেকে আসা প্রবাসীদের জন্য হজ ক্যাম্পে পৃথক্করণের ব্যবস্থা করেছিল। আসলে হজ ক্যাম্পে যে দায়সারা গোছের ব্যবস্থা করা হয়েছিল, যেখানে স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেটের ব্যবস্থাও ছিল না। এ অবস্থায় বিদেশফেরত লোকজন তাঁদের পরিবার নিয়ে এসে সেখানে থাকতে না চাওয়াটা খুব একটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশে লকডাউনের সময় জীবনের সঙ্গে জীবিকার কথা ভেবে বিভিন্ন প্রণোদনার ব্যবস্থা করেছে। অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে এসব প্রণোদনা করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। বাংলাদেশও এ ব্যাপারে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে উদ্দেশ্য ভালো হলেও ভুল ডিজাইন ও দুর্নীতির কারণে সেখানে প্রত্যাশিত ফল পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশ সরকার বস্ত্রশিল্পের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দিয়েছে। তা দেওয়া হয়েছে বস্ত্রশিল্পের মালিকদের; শ্রমিকের বেতন দেওয়ার জন্য। কিন্তু সেই টাকা সঠিকভাবে দেওয়া হয়েছে কি না, তা অনুসরণ করা বা খতিয়ে দেখা হয়নি।
আসলে মার্চের প্রথম দিকে বাংলাদেশে যখন করোনাভাইরাস শনাক্ত হলো তখন ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ যেসব স্থানে শনাক্ত হয়েছিল, সেখানে এক মাসের জন্য লকডাউন করা উচিত ছিল। আর সেই লকডাউন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে বলবৎসহ নিয়ম ভাঙার জন্য জরিমানার বিধান রেখে কঠোরভাবে প্রয়োগ করা উচিত ছিল। আর যে প্রণোদনা বস্ত্রশিল্পের মালিকদের দেওয়া হয়েছিল, তার সঙ্গে আরও টাকা যোগ করে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জের দোকান কর্মচারী থেকে শুরু করে বস্ত্রশিল্পের শ্রমিকদের এক মাসের বেতন দেওয়া যেত। তাতে এদের জীবিকার জন্য ঘর থেকে বের হতে হতো না। ফলে লকডাউন কার্যকরী হতো।
এশিয়া ফাউন্ডেশনের এক হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে বস্ত্রশিল্পে ৩৬ লাখ কর্মচারী নিয়োজিত। যদি এর ৯০ শতাংশ ঢাকা, নারায়ণগঞ্জে নিয়োজিত হয়, তাহলে প্রায় ৩২ লাখ এবং যদি এখানে দোকান ও গৃহস্থালিজনিত কাজে আরও ১৮ লাখ কর্মচারী থাকে, তাহলে ৫০ লাখ মানুষের জন্য প্রণোদনার প্রয়োজন হতো। যদি একেকজনকে ১২ হাজার টাকা করে দেওয়া হতো, তাহলে প্রয়োজন হতো ৬ হাজার কোটি টাকার। উল্লেখ্য যে বাংলাদেশ শ্রম আইন অনুযায়ী ন্যূনতম বেতন হলো ৮ হাজার টাকা। কিন্তু আমাদের কর্তৃপক্ষ কী করলেন, লকডাউন না করে ছুটি ঘোষণা করলেন এবং লোকজন তাতে সাড়া দিয়ে ছুটি কাটাতে কক্সবাজারসহ বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতে গেল। ফলে করোনাভাইরাস প্রথম থেকেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেল।
কর্তৃপক্ষ জনগণকে সম্পৃক্ত করতে পারেনি এবং লকডাউন, সামাজিক দূরত্ব ও স্বতন্ত্রীকরণ বলতে কী বোঝায়, সে সম্পর্কে সম্যক ধারণা দিতে। কর্তৃপক্ষ হয়তো এর ব্যাপকতা অনুধাবন করতে পারেনি। প্রথম দিকে মানুষের মধ্যে এ রকম একটা ধারণা জন্মেছিল যে এটা অনেকটা সর্দি–কাশির মতো, আমাদের দেশের গরম আবহাওয়ায় এর খুব একটা বিস্তার ঘটবে না বা আমাদের লোকজনের প্রাকৃতিক ইমিউনিটি (অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় বেড়ে ওঠার জন্য) একে দমিয়ে রাখতে পারবে। এ ধারণা যে শুধু সামাজিক মাধ্যমেই সীমাবদ্ধ ছিল তা নয়, আমাদের অনেক রাজনৈতিক নেতাও এ রকম মন্তব্য করেছেন। তবে এটা যে শুধু বাংলাদেশের বেলায় ঘটেছে তা নয়, পৃথিবীর অনেক দেশেই হয় ইচ্ছা করে, না হয় এই ভাইরাসের ব্যাপকতা অনুধাবন না করতে পেরে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এটাকে সাধারণ ফ্লু বা চায়নিজ ভাইরাস বলে আখ্যায়িত করেছেন, যার পরিণাম আমরা দেখেছি নিউইয়র্কে।
নিউইয়র্কে প্রথম দিকে করোনাভাইরাস এমন পর্যায়ে চলে গিয়েছিল যে তাঁদের গণকবর দিতে হয়েছিল। অন্যদিকে যুক্তরাজ্য প্রথম দিকে লকডাউনে না গিয়ে হার্ড ইমিনিউটির (বেশির ভাগ মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয়ে নিজে নিজে ইমিউনিটি তৈরি হবে, তবে তাতে বেশি লোক মারা যাবে) পথ ধরেছিল, পরে অবশ্য ভুল বুঝতে পেরে সঠিক পথে এসেছে। ইতিমধ্যে যদিও কয়েক সপ্তাহ দেরি হয়ে গিয়েছিল এবং লন্ডনে ভাইরাসজনিত মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে গিয়েছিল।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের কালানুক্রমিক অনুসারে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ায় প্রায় একই সময়ে শুরু হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া কিন্তু ভাইরাস মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে এনে ফেলেছে। অবশ্য কয়েক দিন হলো মেলবোর্নে আবার কিছু সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে। সেটা প্রধানত অভিবাসী অধ্যুষিত ও সরকারি হাউজিং এলাকায়, যেখানে লোকজন সরকারি নিয়ম উপেক্ষা করে করমর্দন ও কোলাকুলি–জাতীয় আচার চালিয়ে গেছে।
এখন দেখা যাক অস্ট্রেলিয়া কীভাবে সংক্রমণের হার কমিয়ে এনেছে, যা প্রয়োগ করে বাংলাদেশ এখনো উপকৃত হতে পারে। তবে এটা বলে নেওয়া ভালো, অস্ট্রেলিয়ার অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা, বিশেষ করে অল্প জনসংখ্যা এ ব্যাপারে যথেষ্ট সহায়ক ভূমিকা রেখেছে। উদাহরণস্বরূপ বাংলাদেশে ঘনবসতিপূর্ণ জনসংখ্যার কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার মতো পদক্ষেপ বিরাট চ্যালেঞ্জ বৈকি।
অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম করোনাভাইরাসজনিত মৃত্যু হয় মার্চের ৮ তারিখে এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্যানডেমিক ঘোষণা দেয় ১১ মার্চ। অস্ট্রেলিয়া সে সময় থেকেই কঠোর লকডাউনে চলে যায়। অস্ট্রেলিয়া প্রধানত ছয়টি বিষয়ে জোর দেয়। তা হলো:
পরীক্ষা (testing)
পরীক্ষার ওপর খুবই জোর দেওয়া হয়। যত বেশি সম্ভব তত পরীক্ষা করা হয়। করোনা রোগী ছাড়াও যাঁদের সর্দি–কাশির উপসর্গ আছে এবং যাঁরা করোনা রোগীর সংস্পর্শে এসেছেন, তাঁদেরও পরীক্ষা করা হয়। এখানে পরীক্ষা সরকারি সংস্থার মাধ্যমে বিনা মূল্যে করা হয়।
আইসোলেশন (isolation)
বয়স্ক ও জটিল রোগীকে হাসপাতালে আর অন্যদের বাড়িতে স্বতন্ত্রীকরণ করা হয়। শুধু করোনা রোগীকেই স্বতন্ত্রীকরণ করা হয়নি, তাঁদের সংস্পর্শে যাঁরা এসেছেন, তাঁদেরও কমপক্ষে ১৪ দিনের জন্য স্বতন্ত্রীকরণ করা হয়।
সংস্পর্শ ও উৎসের সন্ধান (contact tracing)
কোনো করোনা রোগী শনাক্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে তাঁর সংস্পর্শে যাঁরা এসেছেন ও তিনি যাঁর কাছ থেকে সংক্রমিত হয়েছেন তাঁদের খুঁজে বের করা হয় এবং তাঁদের স্বতন্ত্রীকরণসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
পৃথকীকরণ (quarantine)
বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের সরকারি খরচে হোটেলে ১৪ দিনের জন্য পৃথক করা হয় এবং পরীক্ষা করে অবস্থা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হয়। করোনা শনাক্ত হলে স্বতন্ত্রীকরণ করা হয়।
সামাজিক দূরত্ব (social distancing)
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শক্রমে সামাজিক দূরত্ব দেড় মিটার কঠোরভাবে পালন করা হয়। লকডাউনের সময় যেসব দোকান বা অফিস খোলা ছিল, সেখানে এ ব্যাপারে নজরদারি করা হয় এবং এর বিচ্যুতি হলে জরিমানা করা হয়।
জনগণকে সম্পৃক্ত করা
অস্ট্রেলিয়ার নেতারা, প্রধানমন্ত্রী ও বিভিন্ন স্টেটের প্রিমিয়ার লকডাউনের সময় জনগণকে সম্পৃক্ত করতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন। রাজনৈতিক বিভেদের ঊর্ধ্বে উঠে তাঁরা প্রতিদিন টেলিভিশন ও রেডিওতে একই বার্তা জনগণকে জানান। আর এ বার্তার বিষয়বস্তু নির্ধারণ করে কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন স্টেটের প্রধান মেডিকেল অফিসার ও বিশেষজ্ঞরা, কোনো রাজনৈতিক নেতা বা তথাকথিত আমলারা নয়। রাজনৈতিক নেতারা তথা সরকার অবশ্য একটা জিনিস নিশ্চিত করে তা হলো লকডাউনের কারণে যাঁরা চাকরি হারিয়েছেন, তাঁদের ভাতা প্রদান। যেহেতু করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণের প্রক্রিয়ায় অনেক পদক্ষেপই ব্যক্তিগত অভ্যাস পরিবর্তনের ব্যাপার, সে জন্য জনগণকে সম্পৃক্ত করা খুবই জরুরি।
এখানে লকডাউনের সময় ভেতরে বা বাইরে দুজনের বেশি জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়। হাসপাতাল ও প্রয়োজনীয় দোকানপাট (যেমন গ্রোসারি সুপার মার্কেট, ওষুধের দোকান) ছাড়া অফিস–আদালত, অপ্রয়োজনীয় দোকানপাট, জিম, ক্লাব, স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় সব বন্ধ হয়ে যায়। অফিসের কর্মচারীরা বাসা থেকে অফিস করা শুরু করেন। এ ব্যাপারে প্রতিটি অফিসই তাদের অবস্থা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেয় সেটা কীভাবে কার্যকরী করবে। রেস্তোরাঁ ও ক্যাফেতে সামাজিক দূরত্ব মেনে শুধু টেক ওয়ের সম্মতি দেওয়া হয়। গ্রোসারি সুপার মার্কেটের প্রতিটি স্টোরে ব্যবস্থাপকেরা সামাজিক দূরত্ব রেখে কেনাকাটার ব্যবস্থা করেন। তাঁরা স্টোরের আয়তন অনুযায়ী নির্দিষ্ট সংখ্যক লোককে একেকবারে প্রবেশের অনুমতি দেন এবং স্টোরে দেড় মিটার পরপর লাইন টেনে দেন, যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সহজ হয়। এসব নিয়ম আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে কঠোরভাবে বলবৎ করা হয় এবং এর বিচ্যুতি হলে জরিমানা করা হয়।
সিডনিতে গত ঈদে এক বাংলাদেশি নিয়মবহির্ভূতভাবে অধিক সংখ্যায় লোক জড়ো করে ঈদের নামাজের আয়োজন করেছিলেন। সে জন্য তাঁদের কয়েক হাজার ডলার জরিমানা দিতে হয়েছে।
বাংলাদেশ এখন কী করতে পারে, সত্যি বলতে কী, খুব একটা কিছু না। কারণ দেশে, বিশেষ করে ঢাকায় ভাইরাস যে অবস্থায় চলে গেছে তাতে আমার একটা কথাই মনে পড়ে। তা হলো এই লেখার শিরোনাম, লালনের সেই গান ‘সময় গেলে সাধন হবে না’। আসলেই আমরা অনেক মূল্যবান সময় পার করে ফেলছি। তবে এখনো হয়তো ঢাকাসহ যেসব স্থানে ভাইরাসের প্রকোপ আছে, সেখানে একযোগে এক মাসের জন্য কঠোর লকডাউনে যেতে পারে, যেভাবে অস্ট্রেলিয়া করেছে। অবশ্য তা কার্যকরী করতে যে ধরনের ইচ্ছা ও প্রতিজ্ঞা দরকার, তা এ মুহূর্তে কর্তৃপক্ষের অভাব আছে বলেই মনে হয়। কারণ, কর্তৃপক্ষ তথা সরকার চাইছে না মানুষ আবার চাকরি হারিয়ে অভাবে দিনাতিপাত করুক। তার মানে আমাদের হয়তো ওই হার্ড ইমিউনিটিতেই যেতে হবে। তবে তা কর্তৃপক্ষকে পরিষ্কারভাবে জনগণকে জানাতে হবে। এতে লোকজন হয়তো নিজের দায়িত্বেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখবে বা স্বতন্ত্রীকরণে থাকবে। যেটা অনেকটা সুইডেনে হয়েছে।
কঠোর লকডাউনই হোক আর হার্ড ইমিউনিটিই হোক বাংলাদেশে একটা জিনিস করতে হবে, তা হলো বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটা পর্যালোচনা কমিটি করে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন পদক্ষেপের পর্যালোচনা করা। কোন পদক্ষেপ কাজ দিয়েছে, কোনটা দেয়নি এবং কেন দেয়নি তাসহ সবকিছু লিপিবদ্ধ করা। এমনকি পূর্ব রাজাবাজারে লকডাউনের সময় বাঁশ দিয়ে রাস্তায় প্রতিবন্ধক তৈরি করা হয়েছে, তা–ও লিপিবদ্ধ করা। সবশেষে এই কমিটিকে বিভিন্ন পরামর্শসহ একটা অপারেশন ম্যানুয়াল তৈরি করতে হবে এবং যার মুদ্রিত ও ডিজিটাল কপি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় দপ্তরে রাখতে হবে। যেটা ভবিষ্যতে এ রকম পরিস্থিতিতে ব্যবহার করা যাবে। আমার ধারণা, এ রকম একটা অপারেশন ম্যানুয়াল এ মুহূর্তে আমাদের ছিল না, তা থাকলে হয়তো এতটা লেজেগোবরে অবস্থায় পড়তে হতো না।
*লেখক: অস্ট্রেলিয়ান সরকারের একজন নির্বাহী স্তরের কৃষিবিজ্ঞানী