শ্রীলঙ্কায় জাতীয় শোক দিবস পালন

শ্রীলঙ্কায় বাংলাদেশ হাইকমিশন যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে জাতীয় শোক দিবস এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাতবার্ষিকী পালন করেছে। আজ রোববার কলম্বো থেকে বাংলাদেশ হাইকমিশন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে এবং জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে হাইকমিশনার তারেক মো. আরিফুল ইসলাম দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের সূচনা করেন।

জাতির পিতা ও ১৫ আগস্টে শাহাদতবরণকারী তাঁর পরিবারের সদস্য ও অন্যদের আত্মার মাগফিরাত এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের ধারাবাহিক সুখ, সমৃদ্ধি ও উন্নয়ন কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর  জীবন ও কর্মের ওপর নির্মিত ‘বঙ্গবন্ধু বিশ্ববন্ধু’ শীর্ষক একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। দূতাবাসের কর্মকর্তারা দিবসটি উপলক্ষে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন।

কোভিড মহামারি উদ্ভূত পরিস্থিতিতে লোকসমাগম এড়াতে হাইকমিশন ‘বঙ্গবন্ধু: দ্য ভিশনারি লিডার’ শীর্ষক একটি ওয়েবিনার আয়োজন করে। আলোচনায় শ্রীলঙ্কার কয়েকজন বিশিষ্ট নাগরিক, শ্রীলঙ্কায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি এবং মিশনের কর্মকর্তা–কর্মচারীরা অংশ নেন। ওয়েবিনারের প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশে শ্রীলঙ্কার সাবেক হাইকমিশনার ইয়াসোজা গুনাসেকারা। তিনি বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনকালে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের বিষয়ে তাঁর অর্জিত অভিজ্ঞতার স্মৃতিচারণা করেন। ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে আরও বক্তব্য দেন শ্রীলঙ্কায় বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) পরিচালক আবদুর রহিম সিদ্দিকী, সাসেপের মহাপরিচালক ড. মাছুমুর রহমান এবং দূতাবাসের সামরিক উপদেষ্টা কমোডর শফিউল বারী।

হাইকমিশনার তারেক মো. আরিফুল ইসলাম তাঁর বক্তৃতায় জাতির পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের স্থপতি হিসেবে তাঁর অবিস্মরণীয় অবদানের কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, বিশ্বমানবতার প্রতি বঙ্গবন্ধুর সুদৃঢ় অবস্থান এবং তাঁর বিশ্বদর্শন আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক, যা তাঁকে একজন বিশ্বনেতা এবং মানবতা ও শান্তির দূত হিসেবে বিশ্বদরবারে স্বীকৃতি দিয়েছে। ১৫ আগস্টের পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে স্বাধীনতাবিরোধী খুনি চক্রের উদ্দেশ্য সফল হয়নি। কারণ, ব্যক্তি মুজিবকে বাঙালি জাতি হয়তো হারিয়েছে কিন্তু তাঁর আদর্শ লালন করে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার পথে দীপ্ত পদে এগিয়ে চলছে। সবার নিজ নিজ দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা গেলে জাতির পিতার প্রতি সত্যিকারের সম্মান প্রদর্শন করা হবে মর্মে হাইকমিশনার অভিমত ব্যক্ত করেন।

উপরোক্ত অনুষ্ঠান ছাড়াও দূতাবাস কলম্বোর একটি মুসলিম এতিমখানায় জাতির পিতার উদ্দেশে পবিত্র কোরআন শরিফ খতম ও বিশেষ দোয়া মোনাজাতের আয়োজন করে এবং পরে এতিমদের মধ্যে উন্নত খাবার পরিবেশন করা হয়। তা ছাড়া বঙ্গবন্ধুর স্মরণে শ্রীলঙ্কা স্কাউটসের সহযোগিতায় দূতাবাস কোভিড আক্রান্ত স্থানীয় কিছু দুস্থ পরিবারকে খাদ্যসহায়তা প্রদান করে।