শেষ হলো কানাডায় মুজিব বর্ষে রক্তদান কর্মসূচি, শাল্লায় হামলার নিন্দা
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, শৈশবে বাবার সঙ্গে বাংলাদেশ দেখেছিলাম, সেই দেশের ৫০ বছর পূর্তিতে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় বদলে যাওয়ার চিত্রই সামনে আসছে। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে গতকাল বুধবার আয়োজিত ‘মুজিব চিরন্তন’ অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী পর্বে ভিডিও বার্তায় এ শুভেচ্ছা জানান তিনি। কানাডার প্রধানমন্ত্রীর মুখে মাতৃভূমির অগ্রগতির কথা শুনে আমরা উচ্ছ্বসিত, পাশাপাশি জাতির পিতার জন্মদিন ও সুবর্ণজয়ন্তীর প্রাক্কালে সুনামগঞ্জে শাল্লায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলায় আমাদের আনন্দকে ফিকে করেছে। মুজিব বর্ষে কানাডিয়ান বাংলাদেশিদের উদ্যোগে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচিতে রক্তদান করতে এসে এমন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন উপস্থিত অনেকেই।
গতকাল বুধবার, স্থানীয় সময় সকাল ৯টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত কানাডিয়ান ব্লাড সার্ভিসেস-এর ব্লুর ইয়াং ২ ব্লুর স্ট্রিট ইস্ট সেন্টারে ১৭ জন বাংলাদেশির রক্তদানের মাধ্যমে স্বেচ্ছায় বছরব্যাপী রক্তদান কর্মসূচি সমাপ্ত হয়েছে। স্বেচ্ছায় রক্তদানে আগ্রহ প্রকাশকারীর সংখ্যা বেশি থাকলেও কোভিডের সব নিয়মনীতি মেনে সবাইকে সুযোগ দিতে না পারায় আয়োজকেরা দুঃখ প্রকাশ করেছেন। টরন্টোপ্রবাসী বাংলাদেশিদের এই আয়োজনে শতাধিক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক নিবন্ধন করেছিলেন। কোভিডের নানা বিধিনিষেধ আরোপ হওয়ায় নিবন্ধন করা অনেকেই রক্তদান করতে পারেননি।
জাতির পিতার জন্মদিনে রক্তদান–পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় শাল্লায় সংগঠিত সাম্প্রদায়িক হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন আয়োজকেরা। কোভিডের সব নিয়ম মেনে রক্তদান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন টরন্টো মৌলভীবাজার জিলা অ্যাসোসিয়েশেনের সভাপতি দেওয়ান আবদুল গফরান চৌধুরী, কানাডা আওয়ামী রাজনীতিক প্রকৌশলী নওশের আলী, সুকোমল রায়, আশীষ পাল, লিটন মাসুদ, মুর্শেদ আহমেদ মুক্তা, ঝুটন তরফদার, কানাডা জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দেবব্রত দে তমাল, টরন্টো দুর্গাবাড়ির সাধারণ সম্পাদক ড. হীরা লাল পাল, অমিত চৌধুরী, রাধানাথ পাল নয়ন, উজ্জ্বল দাশ প্রমুখ।
রক্তদান কর্মসূচির উদ্যোক্তা ও সমন্বয়কারী ড. সুশীতল চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনে এই কর্মসূচি আয়োজনে প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে যাঁরা সহায়তা করেছেন, সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা। দূর পরবাসে থাকলেও দেশের আনন্দে আমরা হাসি। দেশের কষ্টে আমরা কাঁদি।
এই আয়োজনে সহযোগী হিসেবে রয়েছে কানাডিয়ান ব্লাড সার্ভিসেস, প্রজেক্ট লন্ডন ১৯৭১, মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ ও ক্যানাটা ফাউন্ডেশন। টরন্টোতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা জাতির পিতার প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা জানাতে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির আয়োজনকে অনন্য উদ্যোগ বলে আখ্যায়িত করেছেন দেশটিতে বসবাসরত বাংলাদেশিরা।
উল্লেখ্য, শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন টরন্টো সিটি মেয়র জন টরি, ওন্টারিও প্রিমিয়ার ডগ ফোর্ড, কানাডার জননিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী বিল ব্লেয়ার, টরন্টোতে বাংলাদেশ কনসাল জেনারেল নাঈম উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এমপিপি ডলি বেগম, কাউন্সিলর গ্যারি ক্রফোর্ড প্রমুখ।