শাহজালাল বিমানবন্দরে সেবার মান কি এমনি থাকবে

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরফাইল ছবি

যেকোনো দেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বিশ্বের সঙ্গে সে দেশের প্রধান গেটওয়ে বা প্রবেশ তোরণ হিসেবে পরিগণিত হয়। প্রতিদিন কয়েক হাজার দেশি–বিদেশি যাত্রী বিমানবন্দর দিয়ে দেশে প্রবেশ ও দেশ ত্যাগ করে। একটি দেশের বিমানবন্দরের সার্বিক কার্যক্রম ও সেবার মান একদিকে যেমন সে দেশের সভ্যতা, সংস্কৃতি ফুটিয়ে তোলে, অন্যদিকে বিমানবন্দরের সার্বিক কার্যক্রম সে দেশের ভাবমূর্তি সম্পর্কে সবার কাছে প্রাথমিক ধারণা জোগায়। সে অনুযায়ী আমাদের দেশেও যখন কোনো বিদেশি পা রাখেন, তখন দেশ সম্পর্কে তাঁর অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ ঘটে বিমানবন্দরে প্রাপ্ত সেবার মান দিয়ে।

ছোট্ট একটা ঘটনা দিয়ে শুরু করতে চাই। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে অফিসের একটা ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সে যোগ দিতে দেশে গিয়েছিলাম। ভ্রমণসঙ্গী হিসেবে যোগ দিয়েছিল চীনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত-আটজন শিক্ষক। আমরা হজরত শাহজালাল অন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামলাম রাত ১১টা ৫ মিনিটের দিকে। এরপর রুটিনমাফিক কিছু ফরমালিটিস শেষ করে বেশ খানিকটা পথ হেঁটে গেলাম লাগেজ পাওয়ার জন্য নির্ধারিত কনভেয়ার বেল্টের পাশে। সেখানে গিয়ে দেখি বেল্ট তখনো ঘোরা শুরু করেনি। বলে রাখা ভালো, সাধারণত বিমানবন্দরের বেল্ট একধরনের চলন্ত সিঁড়ির মতো। যেগুলো চক্রাকারে ঘুরতে থাকে এবং বিমানবন্দরে কর্মরত স্টাফরা বিমান পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে লাগেজগুলো একধরনের ছোট গাড়িতে করে নিয়ে বেল্টে দিয়ে দেয়। যাত্রীরা বেল্টের পাশে অপেক্ষারত থাকে নিজেদের লাগেজের আশায়। যাহোক, আমরা বেল্টের কাছাকাছি আসতে প্রায় ৩০ মিনিট পার হয়ে গেছে। কিন্তু তখনো পর্যন্ত কনভেয়ার বেল্ট ঘোরা শুরু করেনি। ৪০ মিনিটের মাথায় বেল্ট ঘুরল এবং সেখানে একে একে লাগেজ দেওয়া হলো। স্টাফরা একসঙ্গে ১৫-২০টি করে লাগেজ নিয়ে ওই বেল্টে দিচ্ছে। ভাগ্যক্রমে যে যাত্রীর লাগেজটা আগে আসছে, সে তারটা নিয়ে চলে যাচ্ছে। আমার লাগেজ পেলাম রাত ১২:৫০ মিনিটের দিকে। আর আমার ভ্রমণসঙ্গী চায়নিজ একজনের লাগেজ পেতে রাত দেড়টা বেজে গেল। সে সময়েও অনেকেই লাগেজের জন্য অপেক্ষারত। চায়নিজদের চোখেমুখে মহা বিরক্তির ছাপ। বারবার জিজ্ঞাসা করছিল, ওই দিন কোনো সমস্যা হয়েছে, নাকি এটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া?

যে ছোট গাড়িতে করে লাগেজগুলো বিমান থেকে বেল্ট পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছিল, তাতে দেরি হওয়াটা স্বাভাবিক। আমরা যারা বিমান ভ্রমণ করেছি, তারা সবাই জানি বিমানবন্দরের এ ধরনের গাড়িগুলো সাধারণত ছোট হয়ে থাকে। কিন্তু বাইরের দেশে যাত্রীদের অহেতুক বিলম্ব থেকে পরিত্রাণের জন্য, একের পর এক অনেকগুলো ট্রলি সংযুক্ত করে সংখ্যায় বেশি করা হয়। যাতে একবারেই সব লাগেজ বেল্টে দেওয়া যায়। চীনের বেশ কিছু বিমানবন্দরে আমি দেখেছি বিমান অবতরণের সঙ্গে সঙ্গে স্টাফরা প্রস্তুত থাকে। পাঁচ মিনিটের কম সময়ে লাগেজ কনভেয়ার বেল্টে চলে আসে। যাত্রীরা বেল্টের কাছে পৌঁছানোর পূর্বেই রীতিমতো সবার লাগেজ বেল্টে ঘুরতে থাকে। আর আমাদের দেশের পরিস্থিত কতটা যাত্রীবান্ধব, তা ইতিমধ্যে যারা বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছে, তারা হাড়েহাড়ে টের পেয়েছে।

চায়নিজদের চোখেমুখে মহা বিরক্তির ছাপ। বারবার জিজ্ঞাসা করছিল, ওই দিন কোনো সমস্যা হয়েছে, নাকি এটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া?

উন্নত দেশগুলোর বিমানবন্দরের দিকে খেয়াল করলে দেখা যায়, সেখানে যাত্রীসেবার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। বেশির ভাগ বিমানবন্দরে একের অধিক আধুনিক টার্মিনাল আছে। প্রতিটি টার্মিনালে আছে যাত্রীদের নিরবচ্ছিন্ন সেবা দেওয়ার জন্য একাধিক তথ্য সেন্টার, রেস্তোরাঁ, সুপেয় পানীয় জলের ব্যবস্থা, অত্যাধুনিক রেস্টরুমের ব্যবস্থা, কেনাকাটার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা, মেডিকেল সেন্টার, ব্যাংক এবং পোস্ট অফিস সেবা, বিজনেস ক্লাস লাউঞ্জ, মাতৃসদন, ব্যাগেজ স্টোরেজ ব্যবস্থাসহ আরও অনেক সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা। এয়ারপোর্টে যাত্রীদের দ্রুত সার্ভিস দেওয়ার জন্য আছে অল্প দূরত্ব পরপর সমান্তরালভাবে সার্বক্ষণিক বহমান চলন্ত সিঁড়ি। এসব সিঁড়িগুলো ব্যবহার করে যাত্রীরা বিমান থেকে অবতরণের পরে অপেক্ষাকৃত দ্রুতগতিতে ইমিগ্রেশনের কাজ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজ দ্রুত শেষ করতে পারে। প্রতিটি টার্মিনাল চার-পাঁচতলাবিশিষ্ট। যার প্রতিটি তলায় যাত্রীদের ভিন্ন ভিন্ন সেবার ব্যবস্থা থাকে। যেমন কোনো তলায় অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করে, কোনটা যাত্রীদের লাগেজ পৌঁছানো বা সেগুলোর ক্লেইম করার স্থান, কোনটা যাত্রীদের চেক-ইন অর্থাৎ আগমনের কাজে ব্যবহৃত হয়, কোনো তলা থেকে যাত্রীদের সরাসরি মেট্রো রেল/বাস সার্ভিস বা অন্যান্য পরিবহনসেবা, কোনোটা আবার শুধু আন্তর্জাতিক রুটের যাত্রীদের বহিরাগমনের জন্য ব্যবহৃত হয়। প্রতিটি টার্মিনালে শ খানেক বা কোথাও আরও বেশি চেক-ইন এবং ছেড়ে যাওয়ার কাউন্টার অর্থাৎ বোর্ডিং গেট আছে। এ ছাড়া যাত্রীদের দ্রুত টার্মিনালের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে বা এক টার্মিনাল থেকে অন্য টার্মিনালে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আছে ছোট ছোট গাড়ির ব্যবস্থা। এ গাড়িগুলো সার্বক্ষণিক রাউন্ড দিতে থাকে। যাত্রীরা এসব সেবা বিনা পয়সায় এবং অধিকতর সম্মানের সঙ্গে পেয়ে থাকে।

উন্নত বিমানবন্দরগুলোর বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সরাসরি বোর্ডিং শেষ করেই বিমানে ওঠার ব্যবস্থা থাকে। যাত্রী তল্লাশির কাজ সাধারণত ইমিগ্রেশনের আগে শেষ করা হয়। এরপর বোর্ডিং পাশ দেখিয়ে সরাসরি বিমানে ওঠার ব্যবস্থা থাকে। সে জন্য বোর্ডিংয়ের সময় অহেতুক কালক্ষেপণ ও অন্যান্য ঝামেলা কম হয়। সাধারণত বিমান উড্ডয়নের ৩০-৪০ মিনিট আগে বোর্ডিং শুরু হয়। এর আগপর্যন্ত যাত্রীরা তাদের পুরো সময় বিমানবন্দরে ঘোরে, কেনাকাটা করে, অন্যান্য বিমানের টেক অফ বা টেক অন দেখে বেশ আনন্দের সঙ্গে সময় পার করতে পারে। শিশুদের সময়কে আনন্দময় করে তোলার জন্য আছে ভিন্ন ভিন্ন রাইডের ব্যবস্থা। কিন্তু আমাদের দেশের চিত্র উল্টো। যাত্রীদের জন্য নির্ধারিত বিমান টার্মিনালে অবতরণের বহু আগেই বোর্ডিং শুরু হয়। এরপর যাত্রীদের এক রুমে একরকম বন্দী করে রাখা হয়। সেখানে নেই কোনো পানীয় জলের ব্যবস্থা। নেই কোনো রেস্টরুমের ব্যবস্থা। একটা টিভি স্ক্রিনের সামনে বসে যাত্রীদের সময় পার করতে হয়। অর্থাৎ যাত্রীদের যদি কারও টয়লেটে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে তাহলে বেশ ঝামেলায় পড়তে হয়। এ ক্ষেত্রে কাউন্টারে বলে তারপর যাওয়া লাগে। এ ছাড়া বিনা মূল্যে যাত্রীদের জন্য পানীয় জলের সুব্যবস্থা আছে কি না, আমার জানা নেই। বহু খুঁজেও আমি পাইনি। এরপর ওই রুমে বসে থাকতে থাকতে যাত্রীরা ক্লান্ত হয়ে পড়ে। বিশেষ করে যাদের সঙ্গে বাচ্চা থাকে, তাদের অবস্থা বেশ কাহিল হয়ে যায়।

সেই সঙ্গে আছে যাত্রীদের সঙ্গে বিমানবন্দর কর্মকর্তাদের দুর্ব্যবহার, অস্বাভাবিক সময়ক্ষেপণ, লাগেজ নিয়ে টালবাহানা, কনভেয়ার বেল্ট থেকে লাগেজ ফেলে দেওয়া, অযাচিত হয়রানি, অর্থ আদায় এবং লাগেজ চুরি ও লাগেজ কেটে মালামাল লুটে নেওয়ার অভিযোগ। বিশেষ করে প্রবাসী শ্রমিকদের সঙ্গে এসব হয়রানিমূলক কর্মকাণ্ড বেশি ঘটে। তবে অন্যান্য যাত্রীরা এসব হয়রানি থেকে বাদ যায় না। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা প্রবাসী কর্মীসহ অন্যান্য যাত্রীরা বিদেশি বিমানবন্দরের সঙ্গে নিজ দেশের বিমানবন্দরের কর্মী ও কর্মকর্তাদের আচরণ ও সেবার মান তুলনা করে প্রায়ই ক্ষোভ প্রকাশ করে। কিন্তু বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এক কোটির বেশি প্রবাসী শ্রমিকের ঘামঝরানো আয় দেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্থিতিশীল ও এগিয়ে যাওয়ার পথ রচনা করে। বিদেশে বছরের পর বছর পরিশ্রম করে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিকে চাঙা রাখার সৈনিক নামের এসব প্রবাসী শ্রমিকেরা দেশে ফিরে বিমানবন্দরে অশেষ দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। পরিবার–পরিজন ছেড়ে, অর্ধাহারে বা অনাহারে দিন কাটানো এসব শ্রমিকের ঘামঝরা পয়সা থেকে তিল তিল করে জমিয়ে স্বপ্ন বুনে লাগেজে ভরে। হয়তো ছেলেমেয়ের জন্য কিছু খেলনা, কিছু চকলেট, নয়তো মা-বাবা অথবা স্ত্রীর জন্য সামান্য কিছু উপহার। কিন্তু সেখানেও ভাগ বসায় বিমানবন্দরে ওত পেতে থাকা অসৎ ও অকৃতজ্ঞ কিছু কর্মচারী। বিষয়গুলো সত্যিই খুবই দুঃখজনক।

দেশের সর্ববৃহৎ বিমানবন্দর ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। প্রতিদিন হাজারো যাত্রী এ বিমানবন্দর দিয়ে দেশ ছাড়ে। আবার দেশে পৌঁছায়। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলেও সত্য বিমানবন্দরের সঙ্গে সরাসরি চলে এমন কোনো পরিবহন সার্ভিস নেই। যেটা হওয়া উচিত ছিল একটা দেশের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অপরিহার্য চাহিদা। যাত্রীরা দেশে ফেরে হয় সিএনজিচালিত অটোরিকশা না হলে ট্যাক্সি নিয়ে তাদের গন্তব্যে পাড়ি জমায়। যেগুলোর একটিও যাত্রীদের জন্য নিরাপদ নয়। আমরা প্রায় দেখতে পাই, বিমানবন্দর থেকে এসব পরিবহনে ওঠার ফলে বা বিমানবন্দরে যাওয়ার পথে যাত্রীর সর্বস্ব লুটে নিয়ে পালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বিদেশি যাত্রীরা এ ক্ষেত্রে আরও অনেক বেশি ঝামেলায় পড়েন। কিন্তু যদি নির্দিষ্ট কোনো পরিবহন (বাস সার্ভিস) সেবা থাকত তাহলে যাত্রীরা স্বাচ্ছন্দ্যে ওই পরিবহন নির্ভয়ে বেছে নিতে পারতেন। শুধু বিমানযাত্রীদের জন্য ওই সার্ভিস চালু করে সমগ্র ঢাকা শহরের বিশেষ কিছু পয়েন্টে যাত্রী ওঠানো–নামানোর ব্যবস্থা করলে যাত্রীরা অধিক উপকৃত হবে। ঢাকা শহরের মধ্যে পরিবহন সার্ভিসের অভাব নেই। তাই বিমানবন্দরের সঙ্গে পরিবহন সার্ভিস যুক্ত করলে জনগণ অধিক সুবিধা পাবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

বিমানবন্দরের প্রবেশপথেও আছে ঘুষ–বাণিজ্য। গেটে অযথা ভিড় করা যাবে না—এ ধরনের খুব কড়াকড়ি নির্দেশ থাকে খাকি পোশাকের নিরাপত্তাপ্রহরীদের। প্রবেশদ্বারের বাইরেই পাসপোর্ট দেখিয়ে স্ক্যানারে লাগেজ, নিজের শরীর স্ক্যান করিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে হয়। যারা দীর্ঘদিনের জন্য দেশ ত্যাগ করে, তাদের কাছে ওই সময়টুকু খুবই আবেগঘন হয়ে থাকে। এ জন্য শেষ মুহূর্তের সময়টুকু ভালোভাবে পার করতে পরিবার–পরিজন হাজির হয় বিমানবন্দরে। উদ্দেশ্য থাকে বিদায় মুহূর্তটা একটু হাসিমাখা করে তোলার জন্য। কিন্তু কর্তৃপক্ষের কড়াকড়ি নিয়ম, গেটে দাঁড়ানো যাবে না এবং কোনো রকম ভিড় করা যাবে না। আবার পাসপোর্ট ছাড়া ভেতরে প্রবেশও করা যাবে না। বাধ্য হয়ে আপনজনদের গেটের বাইরে তাড়াহুড়ো করে বিদায় নিতে হয়। কিন্তু ভেতরে গিয়ে দেখা যায় অনেকেই কর্তৃপক্ষের নিয়মের তোয়াক্কা না করে প্রহরীদের টাকা দিয়ে পরিবার–পরিজন নিয়ে পাসপোর্ট ছাড়াই ভেতরে প্রবেশ করেছে। আমার কথা হলো, একটা দেশের প্রধান বিমানবন্দর। সেখানে কেন বিদেশগামী ব্যক্তির সঙ্গে পরিবার–পরিজন যেতে পারবে না। ইমিগ্রেশনের আগপর্যন্ত সবার যাওয়ার সুযোগ থাকা উচিত। বাইরের দেশের বিমানবন্দরগুলোতে এই সুযোগ আছে। সেখানে ইমিগ্রেশনের আগপর্যন্ত যতক্ষণ ইচ্ছা পরিবার–পরিজনের সঙ্গে সময় কাটাতে পারে। আর যদি নিয়মই থাকে বিদেশগামী ব্যতীত অন্যদের প্রবেশ নিষেধ, তাহলে কীভাবে অনেকে টাকার বিনিময়ে প্রবেশ করে! জানা আছে, এসব অনিয়ম আমাদের দেশের আনাচ–কানাচে হয়। তাই ভুক্তভোগী জনগণ অনেকটা নিরুপায় হয়ে এমন অনিয়মকেও মাঝেমধ্যে স্বাগত জানায়।

লেখক

বিশ্বের সবকিছু দ্রুতগতিতে আধুনিক হচ্ছে। বিজ্ঞানের আশীর্বাদে একদিকে যেমন সবকিছু প্রযুক্তিনির্ভর হচ্ছে, ঠিক তেমনি মানুষের অহেতুক হয়রানি কমে জীবন হয়ে উঠেছে স্বচ্ছন্দময়। বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ এখন উঠতি অর্থনীতির দেশ হিসেবে পরিচিত পাচ্ছে। একই সঙ্গে বৃহৎ ও মজবুত হচ্ছে দেশের অর্থনীতি। এমতাবস্থায় বিদেশিদের কাছেও দেশের মর্যাদা উজ্জ্বল হচ্ছে। এই মর্যাদা আরও বেশি টেকসই করতে বিমানবন্দরের সার্বিক মানের উন্নতির দিকে নজর দিতে হবে। দেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোতে আন্তর্জাতিক মানের সেবা, ব্যবস্থাপনা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। যাত্রীদের আনীত সব ধরনের অভিযোগ খুঁটিয়ে দেখতে হবে এবং বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে ওত পেতে থাকা দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা–কর্মচারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। বিমানবন্দরের সব কার্যক্রমকে পূর্ণ ডিজিটালাইজেশনের আওতায় এনে শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। বিমানবন্দরে যাত্রীদের অহেতুক সময়ক্ষেপণ, লাগেজ ও শুল্ক নিয়ে হয়রানি এবং সব ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষকে সোচ্চার হতে হবে। বিমানবন্দরে যাত্রীদের নির্বিঘ্নে যাতায়াতের জন্য দ্রুত বিমানবন্দর পরিবহনসেবা চালু করতে হবে।

লেখক: অজয় কান্তি মন্ডল, গবেষক, ফুজিয়ান অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড ফরেস্ট্রি ইউনিভার্সিটি, ফুজো, ফুজিয়ান, চীন