রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানে বাংলাদেশের প্রশংসা স্পেনের রাজার
বাংলাদেশের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সারওয়ার মাহমুদ স্পেনের রাজকীয় প্রাসাদে রাজা ষষ্ঠ ফিলিপের কাছে পরিচয়পত্র পেশ করেছেন। গতকাল সোমবার (২৬ এপ্রিল) এ পরিচয়পত্র পেশ করা হয়। এরপর স্পেনের রাজা এবং বাংলাদেশের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূতের মধ্যে একটি একান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে রাজা নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান। রাষ্ট্রদূত রাজাকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা পৌঁছে দেন।
বৈঠকে রাষ্ট্রদূত জানান, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরপরই যে কয়েকটি দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল, স্পেন তার মধ্যে অন্যতম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আর্থসামাজিক উন্নয়নে দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। বাংলাদেশে অবস্থানরত মিয়ানমার থেকে আগত বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ রোহিঙ্গার দুর্দশার কথা ব্যক্ত করে রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গাদের স্বদেশভূমি মিয়ানমারে সম্মানজনক প্রত্যাবাসনে স্পেন সরকারের অব্যাহত ও কার্যকর সহযোগিতা কামনা করেন।
বিদ্যমান চমৎকার বন্ধুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের কথা উল্লেখপূর্বক রাষ্ট্রদূত সম্ভাবনার নতুন ক্ষেত্র চিহ্নিত করে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নেওয়ার প্রতিশ্রতি ব্যক্ত করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি ফরেন অফিস কনসালটেশন, দ্বৈতকর পরিহার, দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগ সম্প্রসারণ ও সংরক্ষণ এবং সাংস্কৃতিক বিনিময় চুক্তি সম্পাদনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি স্পেনে বাংলাদেশের রপ্তানি বৃদ্ধি ও বাংলাদেশে স্প্যানিশ বিনিয়োগ সম্প্রসারণের জন্য রাজার সহযোগিতাও কামনা করেন। রানি সোফিয়ার বাংলাদেশে কয়েকবার ভ্রমণের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত রাজাকে বাংলাদেশ ভ্রমণের আমন্ত্রণ জানান।
স্পেনের রাজা রাষ্ট্রদূতের উত্থাপিত বিষয়গুলোর প্রতি সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। তিনি রাষ্ট্রদূতের সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল কামনা করে আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে তাঁর দায়িত্ব পালনকালে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও বেগবান হবে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানের জন্য তিনি বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করেন এবং সহযোগিতার আশ্বাস দেন। তিনি দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে আশাবাদ ব্যক্ত করেন, আগামীতে বাণিজ্য আরও নিবিড়তর হবে। স্পেনের রাজা রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য কামনা করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
একান্ত এ বৈঠকে স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। এ সময় দূতাবাসের কর্মকর্তাদের মধ্যে কাউন্সেলর ও দূতালয় প্রধান এ টি এম আবদুর রউফ মণ্ডল, কমার্শিয়াল কাউন্সেলর রেদোয়ান আহমেদ ও প্রথম সচিব (শ্রম) মুতাসিমুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। করোনা মহামারির কারণে কোভিড-১৯ স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাজদরবারে এক আড়ম্বরপূর্ণ পরিবেশে পরিচয়পত্র পেশ অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।