রোজিনা ইসলামের মুক্তি চাইলেন ইউরোপপ্রবাসী সাংবাদিকেরা
দৈনিক প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে হেনস্তা করার প্রতিবাদ ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন ইউরোপপ্রবাসী সাংবাদিকেরা। প্রবাসী সাংবাদিকেরা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, একজন সাংবদিকের গলা চেপে ধরার সাহস পেল কোথায়, এমন প্রশ্নের জবাব কে দেবে। দেশের উন্নয়ন, অবকাঠামো তুলে ধরতে সাংবাদিকেরা যে ভূমিকা পালন করছেন, তা সরকার কোনোভাবেই এড়িয়ে যেতে পারে না।
দুর্নীতিবাজদের মুখোশ উন্মোচন করা হলে সরকারের জন্য দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করতে সুবিধা হওয়ার কথা। সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম সরকার থেকে বাহবা পাওয়ার কথা তাঁর সহযোগিতার জন্য। তা না করে পাঁচ ঘণ্টার বেশি আটকে রাখা হয়।
এটি মুক্ত গণমাধ্যমে পরাধীনতার বহিঃপ্রকাশ একই সঙ্গে একটি সভ্য দেশের গণতান্ত্রিক নিয়মবহির্ভূত কাজ জাতিকে উপহার দিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। প্রবাসী সাংবাদিকেরা বলেন, এই হীন কাজেই প্রমাণিত হয়, দেশে গণমাধ্যম পুরোপুরি স্বাধীন নয়। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী সাংবাদিকেরা রোজিনা ইসলামের নিঃশর্ত মুক্তি চেয়েছেন।
ইতালি থেকে আইনজীবী আনিসুজ্জামান আনিচ বলেন, গণমাধ্যমের কণ্ঠ রোধ করা গণতান্ত্রিক দেশে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটি দেশের ও গণতন্ত্রের জন্য অশুভ সংকেত। রোজিনা ইসলাম স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি দেশের স্বার্থে গণমাধ্যমে তুলে ধরা তাঁর অপরাধ দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের কাছে। আমলাতান্ত্রিক অপক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে এ ঘটনায়। আমরা এ হেনস্তার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিকে অবিলম্বে অপসারণ এবং মামলা প্রত্যাহারের দাবি করছি।
আখী সীমা কাউসার বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তার বিচার জনগণের সামনে করা হোক।
পর্তুগাল থেকে ফরিদ আহমেদ পাটওয়ারী বলেন, যেখানে আমরা স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপন করেছি, সেই বছরে একজন সিনিয়র সাংবাদিকের ওপর এই আচরণ প্রশাসনিক ব্যবস্থার ওপর আমাদের ব্যক্তিস্বাধীনতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে রইল। বারবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে।
স্পেন থেকে কবির আল মাহমুদ বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সংবাদমাধ্যমকর্মীদের নির্যাতিত হওয়ার এমন ঘটনা এটা নতুন নয়। কাগজে–কলমে সংবাদমাধ্যমকে খবর প্রচারে স্বাধীনতা দেওয়া হলেও তা এমন ঘটনার মাধ্যমে পরিষ্কার হয়, গণমাধ্যম এখনো স্বাধীন নয়। সাংবাদিকতা একটা মহান পেশা, সমাজের ভালো দিকগুলো যেমন এই সংবাদমাধ্যমের হাত ধরে উঠে আসে, ঠিক তেমনি সমাজের দোষ-ত্রুটিগুলো মানুষের সামনে তুলে ধরার দায়িত্ব একজন সংবাদকর্মীর পেশাগত দায়িত্ব। পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে প্রথম আলোর সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম হয়রানি শিকার হওয়ার মতো ঘটনা দেশের ভাবমূর্তি যেমন ক্ষুণ্ন হয়েছে, তেমনি প্রশাসনের কার্যব্যবস্থাকে জাতির কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। আমি ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ এবং সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে এর বিচার দাবি করছি।
রোম থেকে লিটন চৌধুরী বলেন, অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলতে বাধা দেওয়া মানে অনিয়ম করার সুযোগ করে দেওয়া। সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে হেনস্তাকারীদের দ্রুত বিচার দাবি করছি।