ম্যানিলাতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

ছবি: দূতাবাসের সৌজন্য

যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলার বাংলাদেশ দূতাবাসে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২২ পালিত হয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারির প্রেক্ষাপটে ফিলিপাইন সরকারের নির্দেশিত বিধিনিষেধ ও প্রযোজ্য স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে যথাযথ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে স্বল্প পরিসরে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও নির্দিষ্টসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশিদের উপস্থিতিতে দূতাবাসের ভেতর মহান একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

গতকাল সোমবার সকালে বাংলাদেশ হাউসে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও অর্ধনমিত করার মধ্য দিয়ে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর সকাল সাড়ে ১০টায় পবিত্র ধর্মগ্রন্থগুলো থেকে পাঠের মাধ্যমে দ্বিতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর ফিলিপাইনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এফ এম বোরহান উদ্দিনের নেতৃত্বে দূতাবাসের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী ও উপস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশি দূতাবাস প্রাঙ্গণে অস্থায়ীভাবে স্থাপিত শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে ১৯৫২ সালের ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পুষ্পস্তবক অর্পণের সময় নেপথ্যে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ শিরোনামে একুশের কালজয়ী গানটি পরিবেশন করা হয়। এরপর ভাষাশহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন দূতাবাস কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠানের মুক্ত আলোচনা পর্বে উপস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশিরা বক্তব্য দেন ও একুশের ভাষা আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করা ভাষা আন্দোলনকারীদের অবদানের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন। দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ আলোচনায় বোরহান উদ্দিন শুরুতেই গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ভাষা আন্দোলনের মহান শহীদদের।

রাষ্ট্রদূত বলেন, মাতৃভাষার জন্য আত্মদান পৃথিবীর ইতিহাসে এক বিরল ঘটনা। বিশেষ করে বিদেশে বসবাসরত প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ বাংলাদেশির প্রত্যেককে প্রতিবছর একজন করে বিদেশিকে ন্যূনতম ২০টি বাংলা বাক্য শিক্ষাদানের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী বাংলা ভাষার প্রসার ঘটানোর বিনীত আবেদন জানান।

অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন–কূটনীতি অনুবিভাগ থেকে পাঠানো একটি বিশেষ প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে ফিলিপাইনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া ও প্রশান্ত অনুবিভাগের প্রধান নীল ইম্পেরিয়ালের পাঠানো একটি ভিডিও বার্তা প্রচারিত হয়। এরপর এক সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দূতাবাস কর্মকর্তা ও প্রবাসী বাংলাদেশিরা কবিতা আবৃত্তি করেন। সবশেষে শহীদদের রুহের মাগফিরাত এবং দেশ ও জাতির উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত সবাইকে আপ্যায়ন করা হয়।
বিজ্ঞপ্তি