ম্যানিটোবা শৌখিন শিকারিদের স্বর্গরাজ্য
শৌখিন মৎস্য শিকারিদের স্বর্গরাজ্য কানাডার ম্যানিটোবা। পুরো কানাডায় প্রচুর মিঠাপানির মাছ পাওয়া যায়। এগুলো কোনো চাষ করা মাছ না। বাংলাদেশের নদীর মাছের মতো প্রাকৃতিকভাবে মাছ পাওয়া যায়। মানুষ সামার- উইন্টারসহ সারা বছর মাছ ধরে। উইন্টারে এখানকার লোকজন বরফে জমাট বাঁধা থাকে। এর মধ্যে ফুটো করে মাছ ধরে থাকেন অনেকে। অধিকাংশ জায়গায় মাছ ধরতে হলে শুধু বড়শি ফেললে হয়, কোনো ধরনের খাবারও দিতে হয় না।
ম্যানিটোবা প্রভিন্সের রাজধানী উনিপেগের কাছে বেশ কয়েকটি মাছ ধরার জায়গা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ম্যাপেল পার্ক, পিন ওয়া ফলস, ডেলটা বিচ, সিলকৃক এবং লক পট, গ্র্যান্ড বিচ, লেক ম্যানিটোবা, লেক উইনিপেগ সবচেয়ে জনপ্রিয় মাছ ধরার জন্য।
মাছ ধরার আগে এখানে লাইসেন্স করতে হবে। প্রতিটি লাইসেন্সে এক দিনে একটি বেঁধে দেওয়া পরিমাণের মাছ ধরা যাবে, তা না হলে পুলিশের কাছে ধরা পড়লে মোটামুটিভাবে মোটা অঙ্কের জরিমানা দিতে হয়। এ বছরের লাইসেন্স ফি ম্যানিটোবার বাসিন্দাদের জন্য ২৫ ডলার ১০ সেন্ট। তবে প্রভিন্সের বাইরের লোকদের জন্য ২৮ থেকে ৪৭ ডলার এবং নন কানাডিয়ানের জন্য ৩৭ থেকে ৬২ ডলার। এখানে যে মাছগুলো বেশি পাওয়া যায় তার মধ্যে ওলায়ে, ইয়ালো পিচ, সাউজের, হোয়াইট বাস, ক্যাট ফিশ, বিভিন্ন কার্প জাতীয় মাছ প্রভৃতি প্রধান।
এখানকার বাংলাদেশিরা সামারে ফিশিং করেন। অধিকাংশ বাংলাদেশি উইনিপেগ শহরে থাকেন বলে তাঁরা শহরের আশপাশে মাছ ধরতে যান। আর শহরের ১০০ থেকে ১৫০ কিলোমিটারের মধ্যে অনেক মাছ ধরার জায়গা রয়েছে। সামারজুড়ে মানুষ যখন ঘুরতে যান, তখন তাঁদের গাড়ির পেছনে একটি ছোট পোর্টেবল সিলিন্ডার চুলা এবং কয়েকটি বড়শি থাকে। তাঁরা মাছ ধরে সেখানে রান্না করে খেয়ে থাকেন।
ম্যানিটোবার কিছুদূর পর পর লেক। ম্যানিটোবার পুরো পূর্ব দিক জুড়ে আছে হাডসন বে। ১ লাখ ২৩ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে আছে হাডসন বে। হাডসন বে আটলান্টিক মহাসাগরের সঙ্গে যুক্ত। ম্যানিটোবায় প্রায় ১ লাখ ২ হাজার বর্গ কিলোমিটার লেক রয়েছে, যা প্রভিন্সের মোট আয়তনের ১৫ দশমিক ৬০ ভাগ।
বছরের ৫-৬ মাস লেকগুলো বরফে আচ্ছন্ন থাকে। মানিটোবার প্রধান বড় ৩টি লেক হচ্ছে লেক উনিপেগ (২৪,৩৮৭ বর্গ কিলোমিটার), লেক উনিপেগাস (৫,৩৭৪ বর্গ কিলোমিটার) এবং লেক ম্যানিটোবা (৪,৬২৩ বর্গ কিলোমিটার)। এ তিনটি লেক পৃথিবীর ১০টি লেকের অন্যতম। লেকগুলোর মাঝে ছোট ছোট দ্বীপ আছে, সেখানে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু মানুষ বসবাস করে, যাদের অধিকাংশই ফার্স্ট নেশন।
*লেখক: কানাডা প্রবাসী