ভিয়েনায় জাতীয় শোক দিবস উদ্যাপন
ভিয়েনাস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ও স্থায়ী মিশনের উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে দূতাবাস প্রাঙ্গণে এক বিশেষ আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
সকালে দূতালয় ও বাংলাদেশ ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণের মাধ্যমে দিবসের কার্যক্রমের সূচনা হয়। সকাল ১০টায় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরু হয়। এরপর জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় এবং জাতির জনক ও ১৫ আগস্টের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণীগুলো পাঠ করা হয়।
আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা গভীর শ্রদ্ধায় বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের শহীদদের স্মরণ করেন। মুজিব জন্মশতবর্ষ ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর মাহেন্দ্রক্ষণে জাতির জনকের মহতী জীবন ও কর্মের ওপর আলোচনায় বক্তারা জাতির জনকের ঐতিহাসিক অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে বলেন, ঘাতকেরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও তাঁর আদর্শকে হত্যা করতে পারেনি। তাঁরা পঁচাত্তরের ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানান এবং বিদেশে পলাতক অপর খুনিদের দেশে ফেরত এনে তাদের শাস্তি কার্যকর করার জোর দাবি জানান। বক্তারা জাতির জনকের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশ গড়ার কাজে সম্পৃক্ত হতে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবদুল মুহিত জাতির জনক ও ১৫ আগস্টের শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন বিশ্বনেতা। রাষ্ট্রদূত বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন, বন্ধুত্বপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি ও বিশ্বশান্তি স্থাপনে তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাঙালি জাতি চিরদিনের জন্য বঙ্গবন্ধুর কাছে ঋণী। বঙ্গবন্ধু আজীবন শোষিত মানুষের অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করে গেছেন। তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বেই নিরস্ত্র বাঙালি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশগ্রহণে অনুপ্রাণিত হয়। রাষ্ট্রদূত সবাইকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও দর্শন হৃদয়ে ধারণ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
আলোচনা সভা শেষে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবদুল মুহিত দূতাবাসের নিজস্ব ভবনে আরও বর্ধিত পরিসরে সজ্জিত ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’-এর উদ্বোধন করেন। দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু কর্নারে বঙ্গবন্ধুর কর্মময় জীবনের ওপর বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য আলোকচিত্র, চিঠি ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বঙ্গবন্ধুর সক্রিয় কূটনৈতিক উদ্যোগ ও অসামান্য অবদানের আলোকচিত্রগুলো প্রদর্শন করা হয়। দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু কর্নারে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এই আলোকচিত্র প্রদর্শনী দূতাবাসে আগত দর্শনার্থীদের জন্য সব সময় উন্মুক্ত থাকবে।
অনুষ্ঠান শেষে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শাহাদাতবরণকারী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের শহীদদের, মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দেশ ও জাতির শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
*রাকিব হাসান রাফি, শিক্ষার্থী, ইউনিভার্সিটি অব নোভা গোরিছা, স্লোভেনিয়া