বাংলাদেশ স্কুল অস্ট্রেলিয়ায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন
ভাষার মাসে বাংলাদেশ যখন থোকায় থোকায় কৃষ্ণচূড়া আর রক্তপলাশের রঙে রাঙা, তখন আবহাওয়াগত দিক থেকে বিপরীত অবস্থানের অস্ট্রেলিয়ায় প্রখর গরমে এডিলেডে প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে যেন সুশীতল একঝলক মিষ্টি বাতাস হয়ে এসেছিল বাংলাদেশ স্কুল অস্ট্রেলিয়ার অমর একুশে উদযাপন অনুষ্ঠান।
বিদেশের মাটিতে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির নবীন, ছোট্ট চারাগাছটিকে সযত্নে লালন–পালন ও পরিচর্যার গুরুদায়িত্ব দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার এডিলেড শহরে অনেক দিন থেকেই সাফল্যের সঙ্গে করে পালন করে আসছে বাংলাদেশ স্কুল অস্ট্রেলিয়া (বিএসএ)। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতিবছরের মতো এ বছরও একুশে ফেব্রুয়ারিকে স্মরণ করা হয়, বরণ করা হয় শ্রদ্ধা ও গৌরবের সঙ্গে।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ২৯ ফেব্রুয়ারি স্কুল প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয় বিভিন্ন কর্মসূচির। স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রহণে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা দিয়ে শুরু হয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে বরণের অনুষ্ঠান। শিশু–কিশোরদের চিত্রাঙ্কনের বিষয় ছিল ‘ভাষা আন্দোলন ও বাংলাদেশ’। প্রবাসে বেড়ে ওঠা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শিশু–কিশোরদের আঁকা মনোমুগ্ধকর ছবিগুলো উচ্চ স্বরে জানান দেয় দেশ থেকে অনেক দূরে থাকলেও নতুন প্রজন্মের মধ্যে বাংলাদেশের শিকড় অনেক গভীরভাবেই প্রোথিত আছে।
এরপরে প্রভাতফেরি ও স্কুলের মধ্যে স্থাপন করা অস্থায়ী শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। স্কুলের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক–শিক্ষিকা ও অভিভাবকেরাসহ উপস্থিত সবাই যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে ভাষাশহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের অংশ হিসেবে সমবেত কণ্ঠে একুশে ফেব্রুয়ারির প্রভাতফেরির গান গাওয়া হয়। এ সময়ে উপস্থিত সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখযোগ্য। এরপরে উপস্থিত দর্শক–শ্রোতাদের সামনে বাংলা ছড়া আবৃত্তি করে শোনায় স্কুলের শিক্ষার্থীরা। কচি কচি কণ্ঠে আধো আধো বুলিতে বাংলা ছড়া আর কবিতাগুলো যেন এডিলেডের বুকে ফিরিয়ে আনে এক টুকরো বাংলাদেশকে।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে স্কুলের শিক্ষার্থীরা দেশের গান গেয়ে শোনায়। শিক্ষকদের মধ্যে থেকে নমিতা ভট্টাচার্য শোনান ‘আমায় গেঁথে দাও না মাগো’ গানটি। আর অভিভাবকদের পক্ষ থেকে অনীতা ফাইরুজ ‘আমি বাংলায় গান গাই’ গেয়ে শোনান। অনুষ্ঠানের শেষে আগত সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বাংলাদেশ স্কুল অস্ট্রেলিয়ার অধ্যক্ষা ফারহানা আজাদ এবং স্কুলের কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আতাউল্লাহ খান।