বসন্ত এসে গেছে
আটলান্টায় এখন ফাল্গুন। গাছে গাছে চেরি, ম্যাগনেলিয়া আর গ্রাউন্ডে ড্যাফোডিলস! নতুন পাতা আসছে পত্রঝরা বৃক্ষে। আমার সেই নতুন কুশির সবুজ খুব পছন্দের। আসলে আমার রাস্তার পাশের গাছের পাতাগুলোর সারা বছরের পরিবর্তন ভীষণ পছন্দের! কখনো বেগুন নতুন কুশি, তারপর কলাপাতা সবুজ, টিয়া সবুজ—সবুজের যে কত শেড! আমি আবার রং ভালো চিনি না। এ জন্য মানুষ চিনতেও ভুল করি!
সে যা–ই হোক। ফুলগুলো বাতাসে ঝরছে। ফুলের পরে পাতা আসে। ফুলের পেছনেই আসলে আসে। আমার চেরিতে দু–একটা ফুল আসছে। আমি তাতেই খুশি। ম্যাগনেলিয়ার ফুল ফোটার অপেক্ষায় আছি।
ঘুম থেকে উঠে ছেলের জন্য রান্না করে, চা খেয়ে বেরিয়ে পড়লাম! সারা দিন আমার আজ টো টো কার চলবে। মলে দেখি হঠাৎ ফারসি হাই বিটের গান বাজছে! সঙ্গে কিছু নারী নাচানাচি শুরু করলেন। আসলে খুশি খুশি ছড়ায়! আমি তাঁদের আনন্দ উপভোগ করছি। মনে পড়ল নওরোজ চলছে, ইরানি নববর্ষ! এখানে এত ইরানি জানা ছিল না। আমার কিছু পেশেন্ট আছেন ইরানি। তবে এই প্রথম মেসিসের ওভারহেডে লাউড ফারসি গান শুনলাম! মনের খুশিতে তাঁরা যেভাবে নাচছিলেন, দেখে ভাবলাম—শুধু আমরাই যেন জীবনে কিছু উপভোগ করা থেকে বঞ্চিত থাকতে শিখেছি! আমাদের সবকিছুতেই নিষেধ। জোরে কথা বলা নিষেধ, গান গাওয়া নিষেধ, নাচা নিষেধ, খুশি হওয়া নিষেধ, ভালোবাসা নিষেধ, কাঁদা নিষেধ, মরা নিষেধ—সব, সব নিষেধ!
আমি তাঁদের নাচগান উপভোগ করে বৃষ্টিবিলাসে ঘরে ফিরে এলাম! আমার কত কাজ পড়ে আছে—টেম্পারেচার এখনো এই ভালো তো এই ঠান্ডার কারণে জ্যাকেট পরছি, আবার গরম লাগলে শুধুই টি–শার্ট। কাজ খালি পেছাচ্ছে! I can’t wait for my flowers to bloom. Birds are back! Still have to wait for the humming birds! ওরা আমার এত কাছে চলে আসে! নতুন বাসা বানিয়েছে আবার লাল পাখি আমার সামনের পোর্চে দরজার কাছে পটটায়। ওদের খাবার নিয়ে এসে বাচ্চাদের খাওয়ানো দেখতে ভীষণ ভালো লাগে আমার।
হরিণগুলো তো প্রতিদিন আসে। আশপাশে যা পায়, তা–ই খেয়ে যায়—ফুল, ফল সব! পিচ একটাও ভাগে পাই না আমি! আপেল, পেয়ারাও হচ্ছে না।
Weeping Willow–রও পাতাগুলো খেয়ে ঠুঁটো জগন্নাথ বানিয়ে যায়।