বট ও পাকুড়
অনন্তকালের দরজায়
যে মুহূর্তে তুমি এসে দাঁড়ালে
সেই মুহূর্ত থেকে
পৃথিবীর পথচলা।
মহাবিশ্বের সকল রহস্য
সেই দিন থেকে আমার কাছে
জলের মতো স্বচ্ছ, তরল,
সকল অপনয়ন, আড়গুণনের জটিল সমাধান
আটকে ছিল এই কাঠের দরজার ছিটকিনিতে।
তুমি এলে—
আকাশে সেই সময়ে সহস্র উল্কাপতন,
তবু আমি তোমাকেই দেখছিলাম।
সংগত কারণেই
সেই একটি রাতের জন্য
বৈশ্বিক মহামারি, সাম্রাজ্যবাদীদের আগ্রাসন,
মুদ্রাস্ফীতি, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি,
জলবায়ু পরিবর্তন
সবকিছু
পেপারওয়েটের নিচে চাপা পড়ে রইল।
শীতের কুয়াশা চাদরে মোড়া সকাল
কাঠের দরজার বাইরে পা বাড়ালেই
সবুজ ঘাসে রাতের শুভ্র শিশিরের স্পর্শ।
দূরে পাহাড়ের ওপারে পাহাড়,
তারপর অজানা মানুষের বাস
তারও ওপারে গভীর সমুদ্র
সেখানেও রাতজাগা জাহাজে বাতি জ্বলে
শঙ্কায় কী বিহ্বলতার সে কথা
এপারে অজানাই থেকে যায়।
এপারে শহরতলির নিরালা ঘরে
পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম রাতের শেষে
অন্য এক সকাল।
দুটো প্রাণের শতসহস্র অনুনয়-বিনয় উপেক্ষা করে
সূর্যের মৃদু আলো স্পর্শ করে
মাথা নত করে থাকা উইলো, হাইড্রেনজা,
ক্রিনাম লিলি থেকে অতঃপর পার্সিয়ান জেসমিন।
সেই সকালে পৃথিবী বদলে গেছে অযুত নিযুত
সেই সকালে তুমি বট আমি পাকুড়।