কানাডায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের বিজয় দিবস উদ্যাপন
বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে জনগণ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল
যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে কানাডার বাংলাদেশ হাইকমিশন ৪৯তম মহান বিজয় দিবস উদ্যাপন করেছে।
গত সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় রাজধানী অটোয়ায় বাংলাদেশ ভবনে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মিজানুর রহমান জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচির শুরু করেন। হাইকমিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উপস্থিতিতে হাইকমিশনার জাতীয় সংগীতের সঙ্গে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
এরপর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফিরাত এবং দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
মোনাজাত পরিচালনা করেন হাইকমিশনের সহকারী কনস্যুলার কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম।
সন্ধ্যায় অটোয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশনের অডিটরিয়ামে এক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। হাইকমিশনের কাউন্সেলর ফারহানা আহমেদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠান শুরু হয় শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যমে।
পরে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির পিতার অবদানের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।
এরপর মিশনের উপহাইকমিশনার চিরঞ্জীব সরকার, মিনিস্টার (রাজনৈতিক) মিয়া মো. মাইনুল কবির, কাউন্সেলর (পাসপোর্ট ও ভিসা) মো. সাখাওয়াৎ হোসেন ও প্রথম সচিব (কনস্যুলার) অপর্ণা রানি পাল এই দিবস উপলক্ষে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন।
আলোচনায় হাইকমিশনার মিজানুর রহমান তাঁর বক্তব্যে সশ্রদ্ধ চিত্তে বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে বলেন, তাঁর অবিচল ও দৃঢ় নেতৃত্বে বাংলাদেশের মুক্তিপাগল জনগণ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।
মিজানুর রহমান ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনায় জাতির পিতার সোনার বাংলা গঠনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত দেশে উন্নীত করতে বর্তমান সরকারের উদ্যোগ ও সফলতার বিষয়ে আলোকপাত করেন।
হাইকমিশনার কানাডা-বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান বাণিজ্যিক, রাজনৈতিক ও বহুপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে এ ক্ষেত্রে হাইকমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা বিবৃত করেন। তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের সহায়তার জন্য হাইকমিশনের বিবিধ কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করেন।
তিনি কানাডার বাংলাদেশ হাইকমিশন কর্তৃক দেশটিতে জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপনের বছরব্যাপী নানান অনুষ্ঠান আয়োজনের কথা উল্লেখ করে এসব অনুষ্ঠানে সবার উপস্থিতি ও সক্রিয় অংশগ্রহণ কামনা করেন।
তিনি প্রবাসে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের দেশের উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি হিসেবে বর্ণনা করে আরও অধিকতর অবদান রাখার আহ্বান জানান। হাইকমিশনার সবার সহযোগিতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক সূচিত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে বেগবান করতে এবং বাংলাদেশের মর্যাদাকে সমুন্নত রাখার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
আলোচনার পর স্থানীয় শিল্পীসহ হাইকমিশনের কর্মকর্তারা এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন। এ পর্বে মো. সাখাওয়াৎ হোসেন, ফারহানা আহমেদ চৌধুরী, ডালিয়া ইয়াসমিন, অং সুয়ে থোয়াই, নার্গিস আখতার রুবি ও আরেফিন খান সংগীত পরিবেশ করেন। আবৃত্তি করেন আফরোজা বানু, শিউলি হক, এ টি এম গিয়াসউদ্দিন। এ ছাড়া শিশুশিল্পী আমীরা ও ওয়াজিদ জামান সংগীত পরিবেশন করে। তবলায় সহযোগিতা করেন সঞ্জয় দাস।
স্থানীয় নাগরিকসহ প্রবাসী বাংলাদেশিরা অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। বিজ্ঞপ্তি