আফ্রিকার মহাদেশের দেশ ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবায় বাংলাদেশ দূতাবাস আনন্দঘন পরিবেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস পালন করেছে। ১৭ মার্চ রোববার পূর্বাহ্ণের আনুষ্ঠানিকতার পর স্থানীয় সময় সকাল দশটা থেকে শুরু হয় দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। দুটি বয়সভিত্তিক গ্রুপে বিভক্ত এ প্রতিযোগিতায় আদ্দিস আবাবার বিভিন্ন স্কুলের প্রায় পঞ্চাশজন শিশু-কিশোর শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে।
এরপর মধ্যাহ্নে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। এতে স্থানীয় ইথিওপিয়, প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিক ও বিদেশি অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই কোরআন থেকে তিলাওয়াত এবং দেশ ও দেশবাসীর উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য মোনাজাত ও দোয়া করা হয়। পরে দিবসটি উপলক্ষে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। এরপর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ওপর নির্মিত একটি প্রামাণ্য ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
দ্বিতীয় পর্বে বঙ্গবন্ধুর জীবনের ওপর রচিত একটি বিশেষ নিবন্ধ পাঠ করা হয়। এরপর শুরু হয় মুক্ত আলোচনা। এ পর্বে ইথিওপিয়া প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের পক্ষ থেকে কয়েকজন বক্তব্য দেন। তাঁরা বঙ্গবন্ধুর জীবনের বিভিন্ন স্মরণীয় ঘটনার প্রতি আলোকপাত এবং নতুন প্রজন্মের প্রতি তাঁর স্বপ্ন ও বিভিন্ন উন্নয়নচিন্তা তুলে ধরেন। শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর প্রগাঢ় মমত্ববোধ ও স্নেহের আলেখ্য তুলে ধরে তাঁরা শিশুদের উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের গৃহীত বিভিন্ন উন্নয়ন পদক্ষেপের প্রশংসা করেন। তাঁরা বর্তমানে শিশু তথা আগামী প্রজন্মের জন্য ক্রমাগত কাজ করে যেতে তাঁদের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে ইথিওপিয়ার কয়েকজন শিশুর বাবা-মা স্থানীয় ভাষায় বক্তব্য দেন। শিশুরাও বক্তব্য দেয়।
পরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্য থেকে উৎসাহী কয়েকজন বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় শিশু দিবসের ওপর রচিত কবিতা, সংগীত ও কৌতুক পরিবেশন করেন। সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মনিরুল ইসলাম। তিনি জাতীয় শিশু দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরেন এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও সোনার বাংলার স্বপ্ন ধারণ করে বাংলাদেশের আগামী প্রজন্ম যাতে বাংলাদেশকে উন্নত মর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে পারে, সে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। মনিরুল ইসলাম বঙ্গবন্ধুর জীবনী থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশকে উত্তরোত্তর সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আগামী প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক গৃহীত উন্নয়নমূলক পদক্ষেপসমূহ এবং বাংলাদেশের ধারাবাহিক অগ্রগতি ও উন্নয়নের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেন। বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশের অব্যাহত আর্থসামাজিক উন্নয়নের তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, প্রধানমন্ত্রীর রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়ন ও ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে অচিরেই আত্মপ্রকাশ করবে। এ জন্য তিনি সব প্রবাসী বাংলাদেশিকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখার জন্য এবং শিশুদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানান।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে রাষ্ট্রদূত দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিশুদের মধ্যে পুরস্কার ও সনদপত্র কিতরণ করেন।
এরপর জাতির পিতার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে উপস্থিত সব শিশুকে নিয়ে রাষ্ট্রদূত ও তাঁর সহধর্মিণী জন্মদিনের কেক কাটেন। বিজ্ঞপ্তি