ফিটনেস ঠিক রাখতে ওজন নিয়ন্ত্রণ জরুরি
সব বয়সের একটা নিজস্ব সৌন্দর্য আছে। সব রঙের ত্বকে আলাদা লাবণ্য আছে। তেমনি সব ধরনের পোশাকের আছে আলাদা আলাদা আবেদন। বিভিন্ন ঋতু, পরিবেশ আর সমাবেশের ওপর নির্ভর করে নারীর সাজ ও পোশাক নির্বাচন। যেকোনো বয়স, সাজ আর পোশাকে একজন নারী সুন্দরী হয়ে উঠতে পারে। আর তার মূল রহস্য হলো তার নিয়ন্ত্রিত ওজন ও ফিটনেস।
বাঙালি মেয়েরা ত্বক, মেকআপ ও পোশাকের ক্ষেত্রে যতটা যত্নশীল ঠিক ততটাই উদাসীন চেহারার ক্ষেত্রে। এ কারণে বাইরে যাওয়ার সময় বয়স ও পরিবেশ অনুযায়ী পোশাক পরা নিয়ে অনেকেই দ্বিধা-দ্বন্দ্বে থাকে। অথচ আপনি যদি ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখেন তবে যেকোনো বয়সে যেকোনো পোশাকে আপনি হতে পারেন আসরের মধ্যমণি।
আমরা যারা এই পশ্চিমা দেশে থাকি তাদের নানা ঋতু ও নানা প্রয়োজনে বিভিন্ন ধরনের পোশাক পরতে হয়। যারা বাইরে কাজ করেন তাঁদের কাজের দিনে পশ্চিমা স্টাইলে সাজ ও পোশাক পরতে হয়। এতে থাকে জিন্স টি-শার্টের মতো ক্যাজুয়াল পোশাক থেকে প্যান্ট স্যুটের মতো পোশাক।
পেশা অনুযায়ী যে পোশাকই আপনি পরেন তা আপনার শরীরে মানানসই লাগবে যদি আপনি ওজন নিয়ন্ত্রণে রেখে মেদহীন শরীরের অধিকারী হন। তেমনি বন্ধু বা পারিবারিক মিলন মেলায় আপনি হয়তো শাড়ি বা সালোয়ার-কামিজ আর একটু কম বয়সী হলে লেহেঙ্গা, শারারা বা লং ড্রেস পরতে পছন্দ করবেন। এসব পোশাকও তখন মানিয়ে যাবে।
বাঙালি নারীদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওজনও বাড়তে থাকে। যার ফলে ত্বক, চেহারা ও উচ্চতা যতই ভালো হোক সর্বাঙ্গীণ সৌন্দর্যটা হারিয়ে যায়। কোনো পোশাক আর মানানসই হয় না।
এবার আসুন দেখা যাক কীভাবে সহজেই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। সবাই জানি, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার মূলমন্ত্র হচ্ছে ডায়েট আর ওয়ার্ক আউট করা। বর্তমানে অ্যাটকিন, কিটো ইত্যাদি নানা ধরনের কার্যকরী ডায়েট প্রচলিত আছে। চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিয়মিত একটি ডায়েট অনুসরণ করুন। মনে রাখবেন, আপনি যা খাবেন আপনার শরীর সেই অনুযায়ী সাড়া দেবে। কম খেলেও ওজন বেড়ে যায় এই ধারণাটি একদম ভুল।
তবে আমরা বাঙালি নারীরা অনেক সময় এসব আধুনিক ডায়েট অনুসরণ করতে পারি না। এ জন্য আমাদের আলসেমি ও খাদ্যাভ্যাস অনেকটাই দায়ী। যারা কোনো ডায়েট একেবারেই অনুসরণ করতে পারেন না, তাঁদের জন্য সবচেয়ে উপযোগী হলো পোর্শন কন্ট্রোল করা। অর্থাৎ আমাদের সাধারণ খাবারই কম পরিমাণে খাওয়া। তবে অবশ্যই মিষ্টি ও কার্বোহাইড্রেট মানে ভাত, রুটি ইত্যাদি কমিয়ে প্রোটিন অর্থাৎ মাছ, মাংস, ডিম ইত্যাদির পরিমাণ বাড়াতে হবে।
এই প্রোটিন অনেকক্ষণ এনার্জি দেবে। যার ফলে অল্প পরিমাণে খেয়েও আপনি দুর্বল হয়ে যাবেন না। তবে অবশ্যই চিকিৎসকের বিধিনিষেধ মেনেই আপনার ডায়েট চার্ট তৈরি করবেন।
এখন আসুন দেখি ওয়ার্ক আউট করব কীভাবে। সপ্তাহে চার থেকে পাঁচ দিন নিয়ম করে ওয়ার্ক আউট করা শারীরিক ফিটনেসের জন্য খুব জরুরি। এটিকে প্রাত্যহিক জীবনের একটি করণীয় কাজ ধরে নিলে নিয়মিত ওয়ার্ক আউট করা খুব সহজ হয়ে যাবে। তবে অনেকেরই ব্যস্ততা আর অনভ্যাসের কারণে নিয়মিত জিমে যাওয়া হয়ে ওঠে না। এসব ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রতিদিন কমপক্ষে এক ঘণ্টা দ্রুত গতিতে হাঁটতে হবে। এ দেশে অনেক সময়ই খুব ঠান্ডা আর খুব গরমের দিনগুলোতে বাইরে এক ঘণ্টা হাঁটা সম্ভব হয় না। সেসব দিনে ঘরে কিছু ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করতে হবে। এ ছাড়া মিউজিকের তালে ড্যান্স মুভমেন্ট করা যায়। এই ড্যান্স মুভমেন্ট করার জন্য নৃত্যশিল্পী হওয়ার কোনো দরকার নেই।
মনে রাখবেন, এটা করছেন শরীরের অতিরিক্ত ক্যালরি ক্ষয় করার জন্য। আর করতে পারেন ইয়োগা বা যোগ ব্যায়াম যা শরীর এবং মন দুইয়ের সুস্থতার জন্যই খুব কার্যকরী। ইউটিউব থেকেই এখন অনেক ইয়োগা পজিশন দেখা, শেখা ও অনুশীলন করা যায়। যে পদ্ধতি আপনার জন্য সবচেয়ে সহজ সেটাই করুন।