নিউইয়র্কে ফ্যাশনে ফিরছে প্রাণ

বিশ্ব সেরা মডেলদের দেখা গেছে নিউইয়র্ক ফ্যাশন উইকে

চলমান করোনা মহামারিতে প্রায় দেড় বছরের মতো বন্ধ ছিল পৃথিবীর প্রায় সব কার্যক্রম। এই দীর্ঘ অচলায়তনের পর আবারও যেন নতুন করে জেগে উঠছে পুরো বিশ্ব। আবারও অঙ্কুরিত হতে শুরু করেছে কিশলয়। এরই প্রেক্ষাপটে ফ্যাশন জগতেও সঞ্চারিত হলো প্রাণের স্পন্দন।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়ে গেল নিউইয়র্ক ফ্যাশন উইকের জমকালো আয়োজন। ফ্যাশন দুনিয়ার সবচেয়ে আকর্ষণীয় উৎসব হলো ‘নিউইয়র্ক ফ্যাশন উইক’। প্রতি বছর নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে অনুষ্ঠিত হয় জমকালো এই অনুষ্ঠান।

বরাবরের মতো বিখ্যাত সব ফ্যাশন ডিজাইনার ও মডেলদের উপস্থিতিতে সপ্তাহব্যাপী জমজমাট হয়ে উঠেছিল এবারের আসর। ম্যানহাটনের অভিজাত পাড়ায়, ফ্যাশন অ্যাভিনিউয়ে এই সময় পথচারীদের কদাচিৎ চোখে পড়ে মডেল তারকাদের পদচারণা। নজর কাড়ে বিভিন্ন পণ্যের বিজ্ঞাপনের পরিচিত মডেল তারকাদের সুপরিচিত মুখ, তাঁদের অনবদ্য হাঁটার ভঙ্গিমা। নজরকাড়া পোশাক।

তবে এবারের আয়োজনে যোগ হয়েছে ভিন্ন মাত্রার কিছু পোশাক। ‘আগে ক্রয় পরে মূল্য পরিশোধ’ এই স্লোগানের ওপর ভিত্তি করে প্রদর্শনীর সব পোশাক বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আয়োজন চলেছে গত ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

এবারের প্রদর্শনীতে বিখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার ক্যারোলাইনা হেরেরা উপস্থাপন করেছেন তাঁর তৈরি অনবদ্য পোশাকের সম্ভার। আধুনিক সব ডিজাইন নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন এই শিল্পী। আপার ইস্ট সাইডের ঐতিহাসিক একটি বাড়ির ৪০ বছর পূর্তিকে কেন্দ্র করে আয়োজন করা হয়েছিল উৎসবের। উৎসব অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন গায়ক টিনাশে ও অভিনেত্রী ডোভ ক্যামেরন।

জনপ্রিয় সব মডেলরা অভিজাত গাউন, বড় হাতার সঙ্গে ক্ল্যাসিক সিলোয়েটসহ বিভিন্ন ধাঁচের পোশাকে সেজে, ক্যাটওয়াক করে মাতিয়ে তুলেছেন সপ্তাহব্যাপী এই ফ্যাশন শো। অনবদ্য সুরের তালে এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ের রানওয়েতে বর্ণিল সব পোশাক পরে হেঁটেছেন মডেলরা।

ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর ওয়েস গর্ডন বলেছেন, ‘করোনা মহামারির কারণেই এবারের আয়োজন ঐতিহাসিক টাউন গ্যালারিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ প্রদর্শনীর জন্য দেড় বছরের মতো অপেক্ষা করেছি। অবশেষে অত্যন্ত সফলভাবে ফ্যাশন শো করতে পেরে আমরা সত্যিই আনন্দিত।’

জনপ্রিয় ফ্যাশন ডিজাইনার লা কুয়ান স্মিথ তাঁর করা আকর্ষণীয় এবং দৃষ্টিনন্দন সব পোশাক নিয়ে আয়োজনে অংশ নিয়েছেন। আয়োজন নিয়ে লা কুয়ান স্মিথ বলেন, ‘আমার এবারের কাজগুলো ছিল গতানুগতিকতার বাইরে। পোশাকে আরাম ও গ্ল্যামার এই দুটোকেই প্রাধান্য দিয়ে একসঙ্গে উপস্থাপনে চেষ্টা করেছি এবারের শোতে।’

প্রতি বছর এই ফ্যাশন উৎসবকে কেন্দ্র করে তৈরি হন নামকরা ফ্যাশন ডিজাইনার ও মডেলরা। তেমনি এই উৎসবকে কেন্দ্র করেই ফ্যাশন জগতে হাতেখড়ি হয় নতুন নতুন ডিজাইনার ও মডেলদেরও। এঁদের থেকেই বেরিয়ে আসে তরুণ মুখ। এঁদের অনেকেই আবার ছিটকে পড়েন। কেউ কেউ টিকে যান। কেউবা প্রতাপের সঙ্গে রানওয়ে দীর্ঘকাল দাপিয়ে বেড়ান।

ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে চমকের কোনো অভাব হয় না। হামেশাই সেখানে চলছে নতুনত্বের চমক। একমাত্র করোনা মহামারি এসেই সীমিত সময়ের জন্য একে থমকে দিয়েছিল। পৃথিবী আবার তার সব শুদ্ধতা নিয়ে নিজস্ব র‌্যাম্পে চলতে শুরু করেছে, এটাই আশার কথা।