নারী দিবসের ভাবনা
সবাই এই নারী দিবস, নারী দিবস বলে মুখে ফেনা তুলে ফেলছে। আমি ভাবছি বিছানা ছেড়ে উঠব, ব্রাশ করব কি না? আমি কীভাবে আরেকটু স্মার্ট হব? পার্পল শাড়ি না হোক কামিজ বা একটা শার্ট পরব? আসলে আমার কোনোটাই পরা হবে না। আমার জামাই বউ পেটায় না, সেটা প্রুভ করতে তারেও একটা পার্পল শার্ট পরাব? না, সেটাও করব না। নিজের নাকের কালশিটা দাগ দূর করতে ফুল কভারেজ ফাউন্ডেশন লাগিয়ে, চেহারার টায়ার্ডনেস ঢাকতে ব্লাসন লাগাব, সঙ্গে এক্সোটিক রঙের লিপিস্টিক? তারপর দুটি সেলফি? আমি এখনো কোনোটাই করিনি!
বাইরে পাখির কলতানে, স্বামী দেবতা বলেন, স্প্রিং ইজ হিয়ার! আমি বরং পাখির কলতান শুনি!
আমার কাছে প্রতিটি দিবসই আমি তুমি দিবস!
আমার মা আমাকে গরম ভাত মেয়ে বলে ছেলের পরে বেড়ে দেয়নি! ক্ষুধা লাগলে প্রথমেই আমার হাতে থালা দিয়েছে! ইলিশ মাছের পেটি নয় বরং মাংসল পিঠের টুকরো পেয়েছি! মাথা আমার পছন্দ নয়, লেজও নয়!
হ্যাঁ, মেয়ে বলে বাড়তি যে সুবিধা পেয়েছি, সেটা হোল সারাক্ষণ নজরদারি! সেটাও তো ভাই পুরুষ সমাজে, পুরুষ নামক চিড়িয়ার হাত থেকে বাঁচার জন্য!
শুধু মেয়েদের সম্মান করতে শিখুন, সম্মান করতে শেখান আপনার সন্তানদের; তাহলেই পার্পল শাড়ি লাগে না।
কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রতিটি মেয়ে আপনার চেয়েও বেশি কাজ করে, বেশি কন্ট্রিবিউশন করে আপনারই সো কল্ড, আয়ের সংসারে সে রাজরানি হয়ে থাকে না, আপনার কাজের ভাগীদার হয়েই থাকে! সম্মান করুন এবং ভালোবাসুন! সম্মান করুন মানুষ হিসেবে!
আমি পুরুষবিদ্বেষী নই! আমার ভালোবাসার পুরুষ বাবা, স্বামী, সন্তান, ভাই, বন্ধু, সহকর্মী, স্বজন হিসেবে চারপাশে ছড়ানো। তাদের ভালোবাসা এবং সহযোগিতা ছাড়া আমি, আমরা পূর্ণ নই! আমাদের ছাড়াও আপনারা অপূর্ণ! কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলুন!
নারী দিবসের শুভেচ্ছা সবাইকে।
*লেখক: শারমীন বানু আনাম, চিকিৎসক