দ্যা লাস্ট সান-সেট
কারো রোজকার বিশুদ্ধ প্রার্থনায়
যাওয়া-আসা স্মৃতির সাঁকোতে
জানি না ঠিক কত দিন এভাবে ছিলাম!
কখনো সাঁকোটার জীবন প্রান্তে
বড় মায়াময় কিছু অস্পষ্ট মুখ ভিড়ত;
রঙিন মার্বেলের প্রতিফলিত কাচে
দু-টুকরো রুটি, কিছু পানি আর সূর্যের ভালোবাসায়
কোষে কোষে সালোক-সংশ্লেষণে
জানতাম ভবিষ্যতের পুঁজি গড়ে;
অথচ আমার জন্য কোথাও কোনো লেন-দেনে
এতটুকু অক্সিজেন মেলেনি!
জীবন-মৃত্যুর সন্ধ্যা দ্যুতি ক্ষণে,
অক্সিজেন-কার্বনের ইকুইলিব্রিয়ামের যে খাঁদে
সাঁকোটি দুলছে: আমি সেই ভেন্টিলেটরে!
যেন একটি কবিতা চূড়ান্ত শেষের অপেক্ষায়।
পরলৌকিকতার জানালার পর্দায় ক্রমশঃ হারায়:
দ্য লাস্ট সানসেট!
ওই যে ছবিটা এঁকেছি দিন-রাতের আলাপনে—
গৃহস্থলির নিত্যনৈমিত্তিক খুনসুটি, মটর-মালায় গাঁথা
একমুঠ দুঃখ আর কিছু সুখ ভাগাভাগির নিয়তি;
পাওয়া না–পাওয়ার অঙ্কের জটিল সমীকরণ
অবশেষে মিললেও, আজ পরাস্ত আমি;
যেন অপরাধী সভ্যতার শিখরে গর্বিত সব অণুবিজ্ঞানী!
শরীরে শরীরে অদৃশ্য সিঙ্গেল হেলিক্সে
আরএনএর সফল জিনোম প্রতিলিপনে,
করোনার দানবীয় উচ্চহাস্য; থমকে গেছে
পৃথিবীর প্রয়োজন নামক মস্ত দেয়ালঘড়ি!
সকল জৈবিক প্রক্রিয়া স্থগিত করে
ক্রমশ ডুবে যায় ফুসফুস,
ধীরে ধীরে স্থিমিত হয় হৃৎপিণ্ডের
লাব-ডাব, লাব-ডাব, ডাব-লাব, লাব-ডাব—
সাক্ষী হয় থাকে কেবল পৃথিবীতে লক্ষ দুচোখে
‘দ্য লাস্ট সানসেট’!
শত দেহ সৎকারের পর আজ আমার সিরিয়াল এল:
ঠিক জানি না, কত দিন ছিলাম ফিউনেরাল হিমাগারে!