দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশি খাদ্য উৎসব
দক্ষিণ কোরিয়ার বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে খ্যাত বুসান শহরে আজ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে সপ্তাহব্যাপী বাংলাদেশ ফুড ফেস্টিভ্যাল। দেশটির বাংলাদেশ দূতাবাসের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও বাংলাদেশের প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের সহযোগিতায় প্রথমবারের মতো এ খাদ্য উৎসব আয়োজন করেছে বুসানের পাঁচতারা হোটেল প্যারাডাইস।
সপ্তাহব্যাপী এ খাদ্য উৎসব ১৯ জুন পর্যন্ত চলবে। এ উপলক্ষে প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেল থেকে তিনজন অভিজ্ঞ পাচককে দূতাবাসের উদ্যোগে বুসানে নিয়ে আসা হয়েছে।
আজ স্থানীয় সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটায় দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ফুড ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বুসান মেট্রোপলিটন সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক রাষ্ট্রদূত উ কিউং-হা। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে বুসানে নিয়োজিত বিভিন্ন দেশের অনারারি কনসাল জেনারেল, বুসান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, কোরিয়া এক্সপোর্ট অ্যান্ড ইমপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন।
রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের মানুষের অতিথিপরায়ণ হিসেবে খুবই সুনাম রয়েছে। বাংলাদেশের সংস্কৃতির একটি অন্যতম অনুষঙ্গ হচ্ছে এর বৈচিত্র্যময় খাদ্যসামগ্রী ও রন্ধনপ্রণালি। বিভিন্ন সামাজিক, ধর্মীয় ও পারিবারিক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের মুখরোচক খাদ্যসামগ্রী দিয়ে আপ্যায়ন করার বিষয়টি সুদূর অতীতকাল থেকে প্রচলিত আছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন মুখরোচক খাদ্যসামগ্রীর সুনাম ও চাহিদা দেশের সীমানা ছাড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ক্ষেত্রে সেসব দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। বাংলাদেশের সংস্কৃতির অন্যতম অনুষঙ্গ এই মুখরোচক খাদ্যসামগ্রীর স্বাদ ও বহুমাত্রিকতা কোরীয় নাগরিকদের কাছে তুলে ধরার লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ফুড ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করা হয়েছে। ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
প্রধান অতিথি উ কিউং-হা তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃক এই সুন্দর আয়োজনের জন্য রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে বাংলাদেশ ও কোরিয়ার জনগণের মধ্যে বিরাজমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও গভীর হবে।
খাদ্য উৎসব উদ্বোধনের পর আমন্ত্রিত অতিথিদের বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ভুনা খিচুড়ি, বিফ তেহারি, চাপলি কাবাব, চিকেন তন্দুরি কাবাব, চিকেন রেশমি কাবাব, শাহজাহানি চিকেন, বিফ কালা ভুনা, চিংড়ি মালাই কারি, মোগলাই পরোটা, পাটিসাপটা পিঠা, শাহি জর্দা ইত্যাদি খাবারসামগ্রী দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।
বাংলাদেশ ফুড ফেস্টিভ্যাল উপলক্ষে কোরীয় নাগরিকদের বাংলাদেশি খাদ্যসামগ্রীর ওপর লিফলেট ও ব্রুশিয়ার ইত্যাদি বিতরণ করা হয়। খাদ্য উৎসবে আমন্ত্রিত অতিথি ছাড়াও প্যারাডাইস হোটেলে আগত কোরীয় নাগরিকদের মধ্যে বাংলাদেশি খাদ্যসামগ্রীর ব্যাপারে ব্যাপক আগ্রহ পরিলক্ষিত হয়।
বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো দেশটিতে বাংলাদেশ খাদ্য উৎসবের আয়োজন দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নতুন ধারা সূচনা হবে বলে আশা করা যায়।