তুমি কি সম্পূর্ণই অপূর্ণ?
চোখ বুজলেই দেখি
সিঁদুর দেওয়া চন্দ্রবিন্দুর ঠিক আগেই তোমার
টল টলে জলে-ভাসা কালো দিঘির নয়ন।
শাঁখ আর সানাইয়ের কান্নার সাথে ঢোলের
টাকডুম মাতলামি, ক্লান্ত করে মনহারা ভিড়ে দেখা
পালকির বন্দিনী নায়িকা আজ তুমি।
জহুরি জ্যোৎস্নার শত্রু যেন সবাই
কাজল চোখের অভিমান সুযোগ দেয় না দেখার
একবারও, মনের কানে শুনি ফিসফিসিয়ে,
‘আমার হৃদয়েরই ছায়ায় থেকে যাবে তোমার কায়া’।
আঁধারের শেষ বিদায় বিচ্ছেদ নিয়ে রিমঝিম বৃষ্টি যেন
চলে গেল তোমার হৃদয়ের প্লাবনে।
‘প্রিয়তমা প্রণয়িনী প্রাণের প্রণতি,
তোমার চিঠির কথা আজ দুর্বোধ্য অকারণ’,
লিখেছিলেম অকৃপণ হাতে,
ন্যায্য সরল মনে সব হারাবার আশঙ্কা নিয়ে,
‘তুমি খুশি হলেই আমার আনন্দ,
তুমি সুখী হলেই আমি প্রশান্ত,
তুমি অসুখী হলেই আমার অশান্তি
তোমার অপূর্ণতাই হবে আমার অতৃপ্তি’।
মনের কথা ভেসে এল, দেখলাম কাক-কালো
আঁখিজলে হীরকের শ্রাবণী নিয়ে
ঠাকুরঘরে আবির দিয়ে আমার পুজোয় তুমি
ব্যস্ত। দিয়েছিলে প্রেমের টানে, বলেছিলে
‘ভালোবাসব না আর কোনো দিন তোমাকে না পেলে’।
আমি ভাগ্যবান, ভগবান আশীর্বাদ দিয়ে রেখেছিল
তোমার অবাধ মনের দুয়ার খুলে।
স্পর্ধিত তুমি, আগাম ভোগ-উপভোগ যেন
স্বর্গীয় প্রসাদ চারুতা ছাড়াই মিলে। উচ্চহাস্যে,
বলেছিলে ‘হ্যাঁগো, আমি তো তোমারই ব্যক্তিগত নায়িকা,
কেন তবে এত অভিনয় আমার প্রেমের নামে?’
কপট জ্যোতিষীর কালো হাতে লেখা জন্ম-পত্রিকা
যেন অশুভ ইঙ্গিত ছেড়ে হ্যাঁচকা টানে
নিয়ে গেল সব আনন্দ তোমার,
আমিই অসুখী হলেম আর তুমি অপ্রশান্ত।
আমার অতৃপ্তি নিয়ে ব্যথিত, তুমি কি সম্পূর্ণই অপূর্ণ?