ডুয়ানির আয়োজনে ঈদ পুনর্মিলনী ও ঢাবির শতবর্ষ উদ্‌যাপন

ঢাবির প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা
ছবি: সংগৃহীত

‘ডুয়ানি’ হচ্ছে ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন অব নিউ ইংল্যান্ড। এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন গ্র্যাজুয়েটদের সংগঠন। মূলত, আমেরিকার পূর্ব উপকূলের নিউ ইংল্যান্ডে অবস্থিত ছয়টি অঙ্গরাজ্যকে (ম্যাসাচুসেটস, কানেটিকাট, রোড আইল্যান্ড, নিউ হ্যাম্পশায়ার, মেইন ও ভারমন্ট) ঘিরেই এর পরিধি।

অলাভজনক, অরাজনৈতিক এবং সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র এ সংগঠনের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন গ্র্যাজুয়েটদের মধ্যে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ভাবের আদান-প্রদান ও সুসম্পর্ক স্থাপন।

সেই লক্ষ্যে গত শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ঈদ পুনর্মিলনী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়য়ের শতবর্ষ উদ্‌যাপন যুগপৎভাবে অনুষ্ঠিত হয়। ডুয়ানি আয়োজিত গ্রেটার বোস্টনের নর্থ রিডিংয়ের একটি ভবনে জাঁকজমকপূর্ণ এ অনুষ্ঠান পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে সূচনা করা হয়। তিলাওয়াত করেন ডুয়ানির সাবেক প্রেসিডেন্ট হাকিম। তার পরপরই সবাই দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ ও আমেরিকার জাতীয় সংগীত সমবেতভাবে পরিবেশন করেন ডুয়ানির কালচারাল সেক্রেটারি ফৌজিয়া খানম শিল্পীর তত্ত্বাবধানে।

উপস্থিত অতিথিদের একাংশ
ছবি: সংগৃহীত

এরপর মূল অনুষ্ঠানে ডুয়ানির বর্তমান প্রেসিডেন্ট টাফট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক শওকত আনোয়ার প্রথমেই এক এক করে পরিচয় করিয়ে দেন ডুয়ানির নতুন নির্বাহী সদস্যদের। নির্বাহী এ টিম যখন পরিচিতি নেয়, তখন উপস্থিত গ্র্যাজুয়েটস ও অতিথিদের মুহুর্মুহু করতালিতে অডিটোরিয়াম আনন্দে মুখরিত হয়ে ওঠে। এরপর শওকত আনোয়ার তাঁর সুন্দর ও পরিপাটি বক্তব্যে তুলে ধরেন ঢাবির সুদীর্ঘ ইতিহাস, ঢাবির ছাত্র-শিক্ষকদের অবদান ও ভূমিকা, বিশেষ করে ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধীনতাসংগ্রাম, যা নতুন প্রজন্মের কাছে শিক্ষণীয় বিষয়।

আলোচনা শেষে কামরুল হাসান ও ফরিদুর রহমান মিল্টনের উপস্থাপনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। তাতে অংশগ্রহণ করেন আমেরিকান বাংলাদেশি শিশু ও শিল্পীরা। তাঁরা হলেন মাহিবা (কবিতা), সেজা (কবিতা), সামি (পিয়ানো), মাশরুর (পিয়ানো), সমাদৃতা (নাচ), নওরিতা (নাচ), প্রিয়তা (গান), বর্ণিল (গিটার) এবং জুনকো (গান)। ‘আবার এল যে সন্ধ্যা শুধু দুজনে’—প্রিয়তা যখন গানটি গাইছিল, আমাদের মনও যেন তখন ফিরে যেতে চাইছিল প্রাণপ্রিয় সেই ঢাবি ক্যাম্পাসে। বোস্টনের পরিচিত মুখ ও গানের পাখি জুনকো ছিল অনুষ্ঠানের এক বিশেষ আকর্ষণ। সে ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটসের শিক্ষার্থী।

এ ছাড়া ডুয়ানির একাধিক ব্যক্তি এ অনুষ্ঠানে তাদের প্রতিভার ঝলক নানা পরিবেশনার মাধ্যমে তুলে ধরেন। আকরাম ভূঁইয়া (নিজের লেখা কবিতা), জহিরুল ইসলাম মুকুল (স্বরচিত কবিতা), কোভিড-১৯ টিকা আবিষ্কারক প্রতিষ্ঠান বায়ো-এনটেকের বিজ্ঞানী ও ডুয়ানির শিক্ষা সম্পাদক জাকারিয়া খন্দকার ও তাঁর ছেলে বর্ণিল মিলে পাঠ করেন বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের পুথি।

কালচারাল সেক্রেটারি ফৌজিয়া শিল্পীর সঙ্গে অনুষ্ঠানের উপস্থাপক ফরিদুর রহমান মিল্টন
ছবি: সংগৃহীত

এ ছাড়া সাংস্কৃতিক সম্পাদক শিল্পী কখনো এককভাবে আবার কখনো মিল্টনের সঙ্গে সংগীত পরিবেশন করে অনুষ্ঠানটিকে জমিয়ে তোলেন। অনুষ্ঠানের উপস্থাপক কামরুল হাসান এককভাবে ও অন্যদের সঙ্গে বাংলাদেশের চিরচেনা জনপ্রিয় গানগুলো গেয়ে শোনান, যা উপস্থিত সবাইকে আনন্দের খোরাক দেয়।

অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কের বাংলাদেশিদের মধ্য জনপ্রিয় রেস্তোরাঁ ‘সাগর’ থেকে আনা হরেক রকম খাবার পরিবেশন করা হয়।

বক্তব্য দিচ্ছেন প্রেসিডেন্ট শওকত আনোয়ার
ছবি: সংগৃহীত

ডুয়ানির বর্তমান নির্বাহী কমিটিতে আছেন শওকত আনোয়ার (প্রেসিডেন্ট), মো. নকীব উদ্দিন (ভাইস প্রেসিডেন্ট), আজাদ হোসেন (অ্যাসোসিয়েট ভাইস প্রেসিডেন্ট), মো. রওশন আলম (জেনারেল সেক্রেটারি), মোস্তফা জামাল আনোয়ার (অর্গানাইজিং সেক্রেটারি), নূর মোহাম্মাদ (ট্রেজারার এবং কম্পট্রোলার), জাকারিয়া খন্দকার (এডুকেশন সেক্রেটারি), ফৌজিয়া খানম শিল্পী (সোশ্যাল, কালচারাল এবং রিলিজিয়াস), মো. খাইরুল ইসলাম (অ্যালামনাই রিলেশন অ্যান্ড নেটওয়ার্কিং), মোস্তাফিজুর রহমান (পাবলিক কমিউনিটি অ্যান্ড এক্সটারনাল রিলেশন) এবং রাহিদুর রহমান (মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশনস)। বিজ্ঞপ্তি