টিকা নেওয়া যাত্রীদের জন্য হোম কোয়ারেন্টিনের ভাবনা অস্ট্রেলিয়ার
টিকা নেওয়া আন্তর্জাতিক যাত্রীদের হোম কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করার চিন্তা করছে অস্ট্রেলিয়া সরকার। আজ শুক্রবার সকালে অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে তাঁদের অন্য কিছুও ভাবতে হবে। টিকা দেওয়া হয়ে গেছে—এমন যাত্রীরা যখন অস্ট্রেলিয়ায় আসবেন, তাঁদের জন্য হোম কোয়ারেন্টিন বা বিকল্প ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
এ ছাড়া যদি টিকা দেওয়া থাকে, তাহলে কেবল সাত দিনের জন্য হোটেল কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করা যায় কি না, সেটাও ভাবছে অস্ট্রেলিয়া সরকার।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অধ্যাপক পল কেলি বলেছেন, ‘আপনি কোথা থেকে আসছেন, কতটুকু ঝুঁকি নিয়ে আসছেন বা টিকা নেওয়া হয়েছে কি না ইত্যাদি বিষয়ও বিকল্প কোয়ারেন্টিনের সময় চিন্তা করা হবে।’
বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় বিদেশ থেকে এলে টিকা নেওয়া বা না নেওয়া সবাইকে বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের হোটেল কোয়ারেন্টিন করতে হয়।
করোনার ডেলটা ধরন থেকে উদ্ভূত ঝুঁকির কারণে নতুন পরিকল্পনার আওতায় অস্ট্রেলিয়ায় আগত আন্তর্জাতিক যাত্রীর সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনার প্রস্তাব পাস হয়েছে জাতীয় মন্ত্রিসভায়। ফলে আগে যেখানে অস্ট্রেলিয়ায় প্রতি সপ্তাহে ৬ হাজার ৩৭০ জন আসতে পারতেন, এখন সেখানে ৩ হাজার ১৮৫ জন আসতে পারবেন।সিডনির নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী (প্রিমিয়ার) গ্ল্যাডিস বেরেজিক্লিয়ান আন্তর্জাতিক যাত্রীদের সংখ্যা হ্রাস করতে ‘নারাজি’ দিয়েছেন।
মহামারি শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় করোনায় ৩০ হাজার ৬৮৫ জন সংক্রমিত হয়েছে। তার মধ্যে ৯১০ জন মারা গেছেন। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় সংক্রমিত অবস্থায় আছেন ৩৩৯ জন। তাঁদের মধ্যে আইসিইউতে ভর্তি আছেন চারজন। অস্ট্রেলিয়ায় এখন পর্যন্ত ২ কোটি ১০ লাখের বেশি করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ায় করোনার ডেলটা ধরনের সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে কিছু জায়গা ছাড়া অস্ট্রেলিয়াজুড়ে লকডাউন চলছে। ৯ জুলাই পর্যন্ত এই লকডাউন চলবে।
অনেক দিন ধরে অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যে সংক্রমণের হার ছিল প্রায় শূন্যের ঘরে। কিন্তু গত মাসের মাঝামাঝি হঠাৎ করে বাড়তে থাকে সংক্রমণ। তারপরই লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। তবে সরকার এখন বলছে, লকডাউন হবে সবশেষ পদক্ষেপ।
অস্ট্রেলিয়ায় গতকাল পর্যন্ত ৭৯ লাখ ৭০ হাজার ১৫৩ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ৩০ শতাংশের বেশি টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছে। যার মধ্যে ৫০ শতাংশের বেশি ৫০ বছরের ও ৭০ শতাংশের বেশি ৭০ বছরের বেশি বয়সী মানুষ রয়েছেন।
নতুন করে কোনো অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী বাংলাদেশির করোনায় সংক্রমিত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।