জ্বালানি তেলসহ সবকিছুর দাম বেড়েছে কানাডায়
কানাডাতে সবকিছুর দাম এখন আকাশচুম্বী। তেলের দাম গত কয়েক মাসে বেড়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ। বিশেষ করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর মূল্যস্ফীতি চরম আকার ধারণ করেছে। গত এপ্রিলে কানাডার মূল্যস্ফীতি ছিল ৬.৭ শতাংশ, যা গত ৩১ বছরে সর্বোচ্চ। ১৯৯১ সালের জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতির হার ৬ দশমিক ৯ শতাংশে উঠেছিল। প্রতি মাসে এ মূল্যস্ফীতির পরিমাণ বাড়ছে। ফলে সাধারণ মানুষ তাদের সঞ্চিত অর্থ ভেঙে তাদের চাহিদা মোকাবিলা করছে বা ক্রেডিট কার্ডের ওপর আরও নির্ভরশীল হয়ে উঠছে।
প্রায় প্রতিদিন সকালে উঠে সাধারণ নাগরিকদের জ্বালানি তেল বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে। ৬ মে কানাডার ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি দাম দিয়ে জ্বালানি তেল কিনেছেন ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশের রাজধানী ভ্যাংকুভারের মানুষ। তাঁরা প্রতি লিটার জ্বালানি তেল কিনেছেন ২ ডলার ১৭ সেন্টস দিয়ে। কানাডায় বিভিন্ন প্রদেশে জ্বালানি তেলের দামের ভিন্নতা রয়েছে। সবচেয়ে জনবহুল শহর টরন্টোর মানুষ ওই দিন প্রতি লিটার তেল কিনেছেন ১ ডলার ৯৬ সেন্টস দিয়ে। গত বছর কানাডায় গড়ে জ্বালানি তেলের প্রতি লিটারের দাম ছিল ১ দলের ৩২ সেন্টস।
কানাডায় গ্রীষ্মকাল আসছে। প্রায় সাত মাস ঠাণ্ডার কারণে ঘরে থাকার পর কানাডার মানুষ এই গ্রীষ্মে ঘুরে বেড়ানোর পরিকল্পনা করছিল। তবে অতিরিক্ত জ্বালানি তেলের দামের কারণে অনেকেই তাঁদের ছুটিতে ঘোরার পরিকল্পনা বাদ দিয়েছেন।
তেলের মূল্যবৃদ্ধি ও পণ্য আমদানির খরচ কয়েক গুণ বেড়ে যাওয়ায় খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে। ভোজ্যতেল, চাল, পাস্তাসহ বিভিন্ন আমদানি করা পণ্য প্রায় দেড় গুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
কানাডায় অবস্থিত বাংলাদেশি মালিকানাধীন মুদিদোকানগুলোতেও বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা মাছ, পরোটা, শর্ষের তেল, মুড়ি, শুঁটকিসহ সবকিছুর দাম গত বছরের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা জানান, তাঁদের পণ্য আমদানির পরিবহন খরচ বেড়েছে। কোভিড মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পরিবহন খরচ বেড়েছে প্রায় তিন গুণ। এভাবে দাম বাড়তে থাকলে তাঁদের পক্ষে ব্যবসা চালানো কঠিন হয়ে যাবে বলেও জানান তাঁরা।
অনেকে ধারণা করছেন, সবকিছুর দাম সহজে কমছে না কানাডায়। এখানে প্রচুর পরিমাণে তেলে মজুত আছে খনিগুলোতে। তবে উত্তোলন অনেক ব্যয়সাপেক্ষ বলে খুব কম তেল উত্তোলন করছে কানাডা। অন্য দিকে রাশিয়ার ওপর তেল আমদানির নির্ভরশীলতা কমিয়ে কানাডা তেল কেনার জন্য অন্য দেশ খুঁজছে।