জেনেভায় বাংলা বর্ষবরণ ও উন্নয়ন মেলা
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় উৎসবমুখর ও আনন্দময় পরিবেশের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলা বর্ষবরণ ও উন্নয়ন মেলা। জেনেভার বাংলাদেশ দূতাবাস ও স্থায়ী মিশন এ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে। এ উপলক্ষে ১ জুলাই রোববার বর্ণিল সাজে সেজেছিল জেনেভার ওয়ার্কার্স ইউনিভার্সিটির (ইউওজি) গ্র্যান্ড হল।
ঐতিহ্যবাহী বাঙালি পোশাকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত বাংলাদেশি কূটনৈতিক, পেশাজীবী, তাদের পরিবারের সদস্য, জেনেভা তথা সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন শহরে বসবাসরত প্রবাসী ও বাংলাদেশ মিশনে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিবারের সদস্যরা। আবহমান বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান পার্বণ বাংলা বর্ষবরণে প্রবাসে বেড়ে ওঠা শিশু-কিশোরদের পদচারণায় মুখরিত হয় ইউওজি প্রাঙ্গণ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও জাতিসংঘের দপ্তরে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মো. শামীম আহসান। তিনি বলেন, এ উদ্যাপন সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্যের একটি প্রতীকী বহিঃপ্রকাশ। এটি মূলের সন্ধান ও শেকড়ে ফিরে যাওয়ার প্রশংসনীয় প্রয়াস। বৈশাখ আমাদের আপন ঐতিহ্য, স্বকীয় সংস্কৃতি ও গৌরবময় জাতিসত্তার পরিচয়ে আলোকিত হওয়ার পথ দেখায়। তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন, পৃথিবীর সর্বত্র বসবাসকারী বাঙালিরা ঐক্য ও সম্প্রীতির বন্ধনে পরস্পরকে আবদ্ধ করার মাধ্যমে আবহমানকাল ধরে চলে আসা এই আনন্দ আয়োজনকে সার্থক করে তুলবে। রাষ্ট্রদূত বাঙালিয়ানার মাহাত্ম্যকে হৃদয়ে ধারণ করে ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে দেশের কল্যাণে কাজ করার জন্য সবাইকে আরবান জানান।
বাংলা নববর্ষ উদ্যাপনের প্রারম্ভে বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণের আনুষ্ঠানিক যোগ্যতা অর্জনের প্রেক্ষাপটে এবারের বৈশাখ পায় এক নতুন মাত্রা। বাংলা বর্ষবরণ ও উন্নয়ন মেলার যুগপৎ আয়োজনের অংশ হিসেবে অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত আহসান বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার একটি চালচিত্র ভিডিও প্রজেকশনের মাধ্যমে উপস্থাপন করেন। এতে বঙ্গবন্ধুর ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, সুখী-সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে তাঁরই কন্যার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের পদক্ষেপ, উন্নত রাষ্ট্রচিন্তা, স্থিতিশীল অর্থনীতি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অনুপ্রাণিত বাংলাদেশের সার্বিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের অভিযাত্রা স্পষ্টভাবে প্রতিভাত হয়।
তিনি বলেন, আগামী ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে বাংলাদেশ সরকার বদ্ধপরিকর। সরকারের এই প্রত্যাশা পূরণের মাধ্যমেই দেশবাসী স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন করবে। একইভাবে, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের মর্যাদায় অভিষিক্ত হওয়ার লক্ষ্যে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। রূপকল্প ২০৪১-এর ভিত্তিতে একটি উন্নত, আধুনিক, সুশিক্ষিত ও বিজ্ঞানমনস্ক, দেশ গঠনের সোপান রচনায় সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূতের সহধর্মিণী মমতাজ আহসান তাঁর বক্তব্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও একটি সুখী ও সমৃদ্ধ নতুন বছরের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উপস্থিত অতিথিরা বাংলাদেশি জনপ্রিয় আবহ সংগীতের সঙ্গে অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। অনুষ্ঠান শেষে অভ্যাগতদের বাংলাদেশি ইলিশ ও মিষ্টান্নসহ নানাবিধ ঐতিহ্যবাহী খাবারের মাধ্যমে আপ্যায়ন করা হয়। বিজ্ঞপ্তি