জেনেভায় ঈদ পুনর্মিলনী

ছোট সোনামণিদের ঈদ পরিবেশনা
ছবি: মাহবুবর রহমান

করোনা ভয়াবহতার দীর্ঘ দুই বছর পর এবারের পবিত্র ঈদুল ফিতর উদ্‌যাপন পুরো মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য ছিল বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। এক মাস সিয়াম সাধনার পর ঈদুল ফিতর মুসলিম উম্মাহর মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতির মেলবন্ধন তৈরি করে। এবার ঈদ কাজের দিনে হওয়ায় প্রবাসীরা আনন্দ–উৎসব থেকে বঞ্চিত হন। কারণ, অনেককেই তাঁদের কর্মস্থলে যেতে হয়েছিল। ঈদের জামাত ছাড়া তাই কারও সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ হওয়ার উপায় ছিল না। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে তাই পুনর্মিলনীর মাধ্যমে ঈদ আনন্দ উদ্‌যাপিত হয় প্রবাসের মাটিতে। জেনেভা বাংলাদেশ ক্লাব বরাবরের মতো এবারও তাদের সুন্দর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বিদেশের মাটিতে।

প্রবাসী বাংলাদেশিরা
ছবি: মাহবুবর রহমান

সেন্টার সার্ভেতে বাংলাদেশ ক্লাব, জেনেভা ১৪ মে ঈদ পুনর্মিলনীর আয়োজন করে। বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাঙালি আন্তরিকভাবে এতে অংশগ্রহণ করেন। কোভিড–পরবর্তী এটাই ছিল প্রথম জেনেভা প্রবাসীদের মিলনমেলা। আনন্দ আর হাসিতে একজন অন্যজনকে জড়িয়ে ধরে কুশলাদি বিনিময়, ছোট সোনামণি এবং প্রবাসীদের যৌথ পরিবেশনায় মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, দেশীয় খাবার পরিবেশনা, সবশেষে নারী এবং শিশুদের মজার খেলা মার্বেল ও বিস্কুট দৌড় প্রতিযোগিতায় উত্তীর্ণদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ, রাফেল ড্র, সব মিলিয়ে চমৎকার এক আবহ তৈরি হয়েছিল। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন ক্লাবটির সভাপতি হারুনুর রশীদ এবং সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম জর্জ।

দর্শক সারিতে প্রবাসীরা
ছবি: মাহবুবর রহমান

পুরো অনুষ্ঠানের সঞ্চালকের দায়িত্বে ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবর রহমান। ওনারই নেতৃত্বে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের অমর সৃষ্টি ‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে, এলো খুশির ঈদ’ গানটি পরিবেশিত হয়। কফি হাউসের সেই আড্ডাটা অথবা নুরুলদিনের সারা জীবনের মতো কালজয়ী গান, কবিতা, ছোট সোনামণিদের পাহাড়ি নাচ, নজরুলের গানের সঙ্গে নাচ, আধুনিক গান, রবীন্দ্রসংগীত, ফ্যাশন শো প্রভৃতি পরিবেশিত হয়।

কার্যনির্বাহী কমিটি
ছবি: মাহবুবর রহমান

প্রবাসজীবনে কর্মব্যস্ততার মধ্যে ঈদ পুনর্মিলনী ঘিরে যে সুন্দর আমেজ তৈরি হয়, তা আসলে এই সংক্ষিপ্ত পরিসরে বোঝানো যাবে না। প্রবাসে অনাত্মীয়রাই আত্মীয়স্বজন, বন্ধু, পরিবার। এসব পরিচয় একই সুতায় গেঁথে পরম মমতায় আমরা হয়ে উঠি প্রবাসী বাঙালি কমিউনিটি পরিবার। জেনেভা বাংলাদেশ ক্লাব এমনই একটা সংগঠন, যেখানে দল–মত–ধর্মনির্বিশেষে সবাই মিলে কাজ করেন দেশের জন্য, প্রবাসীদের জন্য।

পুরো অনুষ্ঠানে প্রবাসীদের সঙ্গে অতিথি হিসেবে ছিলেন প্রথম সচিব (শ্রম) কামরুল ইসলাম, প্রশাসনিক কর্মকর্তা খায়রুল আমিনসহ অন্য কর্মকর্তারা। যাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রমে অনুষ্ঠানটি সার্বিকভাবে সাফল্যমণ্ডিত হয়েছে, তাঁরা হলেন ক্লাবটির সাবেক সভাপতি শ্যামল খান, মশিউর রহমান, মাসুম খান, সাদাত হোসেইন, জাভেদ চৌধুরী, কুদরত এলাহী, কাজী দেলোয়ার হোসেন, আনোয়ার হোসেন, বাদল মীর, শামীম, টিপু, আলম, রানাসহ কার্যনির্বাহী কমিটির সব সদস্য।
*লেখক: রাওদাতুল জান্নাত, জেনেভা, সুইজারল্যান্ড