জন্মশতবার্ষিকীতে নাইজেরিয়ায় বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ
মুক্তির মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস নানা অনুষ্ঠানে পালিত হয়েছে বাংলাদেশ হাইকমিশন, আবুজা, নাইজেরিয়ায়।
গত মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) সকাল ১০টায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে চ্যান্সারিতে হাইকমিশনার মো. শামীম আহসানের জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে উদ্যাপনের কর্মসূচি শুরু হয়।
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বাণী পাঠ করা হয়। বাণী পাঠ শেষে বঙ্গবন্ধু, তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্য এবং মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আবুজায় অবস্থিত সিটি অব রিফিউজ অরফানেজ বিকেলে পরিদর্শন করেন এবং এতিম শিশুদের সঙ্গে কিছু সময় অতিবাহিত করেন। তারপর তাঁরা কেন্দ্রের প্রশাসকের কাছে এতিম শিশুদের জন্য খাদ্যদ্রব্য ও উপহারসামগ্রী হস্তান্তর করেন, যা একটি আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি করে। এ সময় তাঁরা উপস্থিত সবার সামনে শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর অকৃত্রিম ভালোবাসার কথা তুলে ধরেন।
সন্ধ্যায় ৭টায় হাইকমিশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। হাইকমিশনার ও তাঁর সহধর্মিণী পেন্ডোরা চৌধুরী, মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এবং প্রবাসী বাংলাদেশিরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এ ছাড়া প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনী, জন্মদিনের কেক কাটা, বেলুন ওড়ানো, শিশুদের মধ্যে ‘মুজিব গ্রাফিক নভেল’ বই বিতরণ এবং বঙ্গবন্ধু কর্নার পরিদর্শন করা হয়।
আলোচনা পর্বে হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেন, বাংলাদেশ এবং বঙ্গবন্ধু এক ও অভিন্ন। জাতির পিতার আদর্শ বাঙালিদের নিরন্তর অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে সব সময় কাজ করবে। শৈশব থেকেই শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর দৃশ্যমান অকৃত্রিম ভালোবাসা পরিণত বয়সে তা মহান নেতার রাজনৈতিক দর্শন মানুষের প্রতি ভালোবাসার মধ্যে দিয়ে কীভাবে প্রতিফলিত হয় তা তুলে ধরেন হাইকমিশনার। শামীম আহসান এ প্রসঙ্গে শিশুদের কল্যাণে বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গৃহীত বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম সম্পর্কে শিশুদের শিক্ষাদানের প্রয়োজনীয়তার ওপরও আলোকপাত করেন। হাইকমিশনার বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে মিশন গৃহীত বছরব্যাপী কর্মসূচি তুলে ধরার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গঠনে উপস্থিত প্রবাসীদের একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
দূতালয়প্রধান মোহাম্মদ শাহ ইকরামুল হকের সঞ্চালনায় আলোচনা পর্বে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নুরুল আনোয়ার এবং মিশনের প্রথম সচিব বিদোষ চন্দ্র বর্মণও বক্তব্য দেন। প্রবাসী বাংলাদেশিরাও বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে বঙ্গবন্ধুর অসাধারণ ভূমিকার ওপর তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।
জাতির পিতার জন্মদিন উপলক্ষে অডিটরিয়ামটি উৎসবের সাজে সাজানো হয়। ব্যানার, বেলুন, রকমারি রঙিন পোস্টার, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি প্রভৃতি দিয়ে আকর্ষণীয়ভাবে সাজানো হলটি প্রবাসে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন পালনের একটি আনন্দঘন আবহ তৈরি করে। অতিথিরা সম্প্রতি চালু করা মিশনের ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’-এর প্রশংসা করেন। কর্নারটি ঐতিহাসিক অনেক দুর্লভ ছবি ও মূল্যবান প্রকাশনা দিয়ে সাজানো হয়েছে, যা জাতির পিতার দর্শন, আদর্শ, আত্মদান এবং সংগ্রাম সম্পর্কে জানতে দর্শনার্থী ও আগ্রহী পাঠকদের সাহায্য করবে।
অনুষ্ঠান শেষে অতিথিদের ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি খাবার পরিবেশন করা হয়। অনুষ্ঠানে মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাঁদের পরিবারসহ উপস্থিত ছিলেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি