চীনে বাজার খুঁজতে প্রবাসী ব্যবসায়ীদের মতবিনিময় সভা

চীনের বাজারে বাংলাদেশের সব সম্ভাবনাময় পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার আরও কাজে লাগানোর উপায় খুঁজতে ‘বাংলাদেশি পণ্যের জন্য ৯৭ শতাংশ শুল্কমুক্ত সুবিধা: চীনা বাজারে আরও বেশি সুযোগ কীভাবে অন্বেষণ করা যায়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা করেছেন দেশটিতে বসবাসরত প্রবাসী ব্যবসায়ীরা।

স্থানীয় সময় গত রোববার বিকেলে চীনে বসবাসরত বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে চীনা বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের প্রচার ও প্রসার বৃদ্ধির জন্য এ মতবিনিময় সভা অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয়। মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেইজিংয়ের বাংলাদেশ দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর মনসুর উদ্দিন।

ব্যবসায়ীরা চীন বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বাণিজ্যের অংশীদার উল্লেখ্য করে জানান, ১৪০ কোটি জনসংখ্যার একটি বিশাল সম্ভাবনাময় বাজার হচ্ছে চীন। অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে এ দেশের জনগণের ক্রয়ক্ষমতা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে বিদেশি পণ্যের প্রতি চীনা মানুষের কদর বাড়ছে। তারা চীনের সঙ্গে বাণিজ্যবৈষম্য কমিয়ে আনার লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রস্তাব ও পরামর্শ দেন।

পাশাপাশি রপ্তানির ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা নিরসনে দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও চীন সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।
বেইজিং, সাংহাই, গুয়াংজু, শেনঝেন, ছাংশা, ইইউসহ বিভিন্ন শহরে বসবাসরত বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন।

বেইজিংয়ের বাংলাদেশ দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর মনসুর উদ্দিন মতবিনিময় সভার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আমি আপনাদের প্রস্তাব, পরামর্শ ও মতামতগুলো মনোযোগসহকারে শুনেছি ও লিপিবদ্ধ করেছি। চীনে বসবাসরত বাংলাদেশি আমদানিকারকদের বাংলাদেশ থেকে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে দূতাবাসের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য কমার্শিয়াল কাউন্সিলর আপনাদের পাশে আছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘চীন গ্লোবাল সাপ্লাইয়ার হলেও বড় বাজার হওয়ায় বিভিন্ন দেশ থেকে প্রচুর বিদেশি পণ্য আমদানি করে।

চীনের বাজারে ৯৭ শতাংশ শুল্কমুক্ত পণ্য রপ্তানির এ সুযোগ ২০২৬ সালের পর আর থাকবে না। তাই এখনই আমাদের এ সুযোগ গ্রহণ করতে হবে। তৈরি পোশাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, ফিশারিজ, কৃষিপণ্য, হস্তশিল্প ইত্যাদি পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য আমাদের আমদানিকারক এন্টারপ্রাইজগুলো খুঁজে বের করতে হবে। চীনা আমদানিকারকদের বাংলাদেশি পণ্য সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দেওয়ার জন্য চীনে বসবাসরত বাংলাদেশ কমিউনিটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে পারে।’

২০২০ সালে চীন বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৯৭ শতাংশ বা ৮ হাজার ২৫৬টি পণ্য রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত বাণিজ্যসুবিধা দিয়েছে, যা ওই বছরের ১ জুলাই থেকে কার্যকর হয়। এ ছাড়া এ বছর চামড়া ও চামড়াপণ্যকে অন্তর্ভুক্ত করে বাংলাদেশের ৯৮ শতাংশ পণ্যকে শুল্কমুক্ত রপ্তানিসুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এশিয়ার বৃহৎ অর্থনীতির দেশ চীন। এতে এখন থেকে চীনের বাজারে বাংলাদেশের ৮ হাজার ৯৩০টি পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়া যাবে।