চবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন কানাডা ইনকের নতুন কমিটির শপথ গ্রহণ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন কানাডা ইনকের ২০২১-২০২৩ মেয়াদের নবগঠিত কার্যকরী পর্ষদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হয়ে গেল গত ৩০ মে। তিন পর্বের ভার্চ্যুয়াল শপথ গ্রহণ জুম সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি এম এম তোহা।
সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেনের সঞ্চালনায় প্রথম পর্বে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। অ্যালামনাইর ইতিহাসে এই প্রথম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিরিন আকতার। বিশেষ অতিথি ছিলেন অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সম্মানিত শিক্ষক অধ্যাপক মনির উদ্দিন, সাবেক প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি মোহাম্মদ আবদুল করিম, সাধারণ সম্পাদক, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মাহবুবুল আলম, যুগ্ম সম্পাদক কামরুল হাসান হারুন, অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন যুক্তরাষ্ট্রের সভাপতি রায়হানুল ইসলাম চৌধুরী।
শপথ গ্রহণ পর্বের শুরুতে সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন আমন্ত্রিত অতিথিদের পরিচিতি জ্ঞাপন সাপেক্ষে উপস্থিত সবাইকে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য দেন। বক্তব্যে তিনি সংক্ষিপ্ত আকারে ২০০৩ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন কানাডা ইনকের গঠন ও দীর্ঘ পথ পরিক্রমণের মধ্য দিয়ে কানাডায় সুসংগঠিত একটি সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ইতিহাস তুলে ধরেন।
সভাপতির আসন গ্রহণের পর বাংলাদেশ ও কানাডার জাতীয় সংগীত পরিবেশন শেষে মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ ও সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়াত শিক্ষকমণ্ডলী ও সংশ্লিষ্ট সবার স্মরণে দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করা হয়। সভাপতির বক্তব্যে এম এম তোহা অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের দীর্ঘ সময়ের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ও তৎপরতা তুলে ধরেন। বছরব্যাপী বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও জাতীয় দিবস পালনসহ ২০১৪ সালে প্রথম তথ্যসমৃদ্ধ সদস্য ডাইরেক্টরি ও সর্বশেষ ‘শাটল ট্রেন’ নামক প্রকাশনার বিষয়টি উল্লেখ করেন তিনি। করোনা মহামারির কঠিন সময়ে সংগঠনের সদস্য ও শুভানুধ্যায়ীদের বদান্যতায় এক সপ্তাহে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের উন্নয়নের জন্য ১০ লাখ টাকার অনুদান প্রদান, শীতবস্ত্র বিতরণ ও অসহায়দের মানবিক সাহায্যের বিষয়গুলো তুলে ধরেন। বিশ্ববিদ্যালয়সংশ্লিষ্ট কেউ কানাডায় যেতে চাইলে সে ব্যাপারে সহযোগিতার আশ্বাসও দেন তিনি।
সভাপতির বক্তব্যের পর শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন নির্বাচন কমিশনার মনিরুল ইসলাম ও ফরিদ উদ্দিন খান। সংক্ষিপ্ত আকারে নির্বাচন প্রক্রিয়া তুলে ধরে নবনির্বাচিত কমিটির সবাইকে নিয়ে শপথবাক্য পাঠ করে শোনান প্রধান নির্বাচন কমিশনার সমর পাল।
সাংস্কৃতিক সম্পাদক তানভী হকের সঞ্চালনায় দ্বিতীয় পর্বে আলোচনা সভার সূচনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর একটি ভিডিও ফুটেজ দেখানো হয়। ক্ষণিকের জন্য হলেও এই ফুটেজ যেন দীর্ঘদিনের ব্যবধানে বিস্মৃত-প্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসসহ বিভিন্ন স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলোতে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের।
আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া, আজীবন সদস্য মোহাম্মদ আমিন মিয়া, সদ্য বিদায়ী সভাপতি বাহাউদ্দিন আহমেদ বাহার, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আবদুল করিম, সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম, যুগ্ম সম্পাদক কামরুল হাসান হারুন, যুক্তরাষ্ট্রের সভাপতি রায়হানুল ইসলাম চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক মনির উদ্দিন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক কাজী সদরুল হক, অধ্যাপক শাহাদাত হোসাইন খান, অধ্যাপক ফাহিম কাদির, অধ্যাপক সাইফুল্লাহ চৌধুরী।
আলোচকদের আলোচনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয় এবং স্বদেশে ও প্রবাসে বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের কার্যক্রম ও প্রয়োজনীয়তাসহ গুরুত্ব ফুটে ওঠে। বিশেষ করে উপাচার্যের বক্তব্যে অ্যালামনাই কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের উন্নয়নে আর্থিক অনুদান প্রদানের প্রথম প্রস্তাব প্রদান ও অনুদানের অর্থ দ্রুত প্রেরণের বিষয়টি প্রশংসিত হয়। তিনি দেশে ও বিদেশে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সংগঠনগুলোকে আরও সংগঠিত হওয়ার পরামর্শ দেন। ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাঙ্কিং উন্নয়ন, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অবস্থিত ঝরনা থেকে ব্যবহার উপযোগী পানির উৎস সৃষ্টি ও আইটি পার্ক গড়ে তোলার প্রত্যয়ও তিনি ব্যক্ত করেন। অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম চট্টগ্রাম শহরে অ্যালামনাই সেন্টার করার জন্য একটি জায়গার ব্যবস্থা করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে অবহিত করেন।
তৃতীয় পর্বে সংস্কৃতিবিষয়ক যুগ্ম সম্পাদিকা কানিজ ফাতেমার সঞ্চালনায় সাংস্কৃতিক পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। সংগীত পরিবেশন করেন ভারতের কলকাতার বিশিষ্ট শিল্পী উজ্জ্বল ব্যানার্জি, টরন্টোর স্থানীয় শিল্পী মুক্তা পাল ও মেহজাবিন। করোনার নিরানন্দ পরিবেশের মাঝেও শিল্পীদের বিভিন্ন ধরনের সংগীত পরিবেশন সবাই আনন্দের সঙ্গে উপভোগ করেন। অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা শতকে সীমাবদ্ধ থাকায় অনেকেই অংশগ্রহণ করতে পারেননি। জুমে ভার্চ্যুয়াল সভা হওয়া সত্ত্বেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনে কানাডা ইনক বরাবরের মতো একটি সফল ও সার্থক অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেছে। পরিশেষে সভাপতি একটি সফল অনুষ্ঠান সম্পন্ন করার জন্য, কমিটির সদস্যদের সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে উপস্থিত সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
‘কানাডা ডে’ উপলক্ষে আগামী ১ জুলাই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার অগ্রিম আমন্ত্রণ থাকল সবার জন্য। বিজ্ঞপ্তি